সারাদিনের কাজের ফাঁকে এই বিকেলটুকুই, নন্দিতার মিনিট কুড়ির নিজস্ব সময়। এই সময় সে দক্ষিণের বারান্দায় দাঁড়িয়ে চুলের জট ছাড়িয়ে চুল বাঁধে। কোমর অবধি লম্বা চুল। এই সামান্য পরিচর্যাটুকু তার অনেক দিনের অভ্যাস। বিয়ে হয়েছে মাস দুয়েক। কলকাতা ছেড়ে ধানবাদ চলে আসতে প্রথমে মন চায়নি। কিন্তু সত্যি বলতে কী, তাকে অন্য কোনও বিকল্পও দেওয়া হয়নি।

বাবাকে হারিয়েছে নন্দিতা, মাত্র দশ বছর বয়সে। তার থেকে আট বছরের বড়ো দাদা আর মা-ই তার পৃথিবী ছিল। বাবার পেনশনের টাকায় মা সংসার চালিয়েছে, দাদা যতদিন না নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে। দাদা স্বাবলম্বী হওয়ার অনেকদিন পরে বিয়ে করেছে। একটু লেট ম্যারেজ-ই বলা যায়। বউদির সঙ্গে নন্দিতার খুব বেশি বয়সের তফাত নয়। তার বিয়ে, কাগজে বিজ্ঞাপন দেখেই দাদা আর মা মিলে দিয়েছে। সত্যি বলতে কি, বেশি বাছাবাছির অবকাশ ছিল না। সাধারণ পরিবারের মেয়েকে পার করতে বেশি বাছাবাছির বিলাসিতা করা চলে না।

চুলে বিনুনি বাঁধতে বাঁধতে নন্দিতার আজ বড্ড বাপের বাড়ির জন্য মনকেমন করতে লাগল। কেমন আছে তার গল্পের বইগুলো, তার ছাদের পায়রাগুলো, আর বারান্দায় গা ঘেঁষে ওঠা কনকচাঁপা গাছটা! ওই গাছ আর ফুলের গন্ধ খুব মিস করে নন্দিতা। ওই ফুলগুলো সে নিজের হাতে কুড়িয়ে এনে তার পড়ার টেবিলে জড়ো করে রাখত। সারা ঘরে ছড়িয়ে পড়ত ফুলের গন্ধটা। অভ্যেসেই যেন একবার জোরে নাক টেনে বাতাসে সেই গন্ধটাই খোঁজার চেষ্টা করল নন্দিতা। নাহ্ এই ধুলোধুসরিত কোলিযারি শহরে, ফুলের মতো নরম সব অনুভতিগুলোই মরে গেছে তার গত দুমাসে।

খুব অভিমান হল তার মায়ের উপর, দাদার উপর। কেন তারা এরকম একটা সম্বন্ধ দেখে বিয়ে দিয়ে দিল তার। কেন সুখী হতে পারছে না নন্দিতা? সে আর যাই হোক তার নিজের বাড়িতে অসম্ভব আদরের ছিল। যে-দাদার চোখের মণি ছিল নন্দিতা, বিয়ের পর সেই দাদাও যেন বেশি ঝুঁকে পড়ল তার বউয়ের দিকে। নন্দিতার ভালোমন্দ নিয়ে কি সেই জন্যই তেমন বিচলিত হল না দাদা?

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...