চল ফুলি, তোর নামে ব্যাংক-এ একটা অ্যাকাউন্ট খুলে দিই। তোর ভালো নামটা কীরে?

মেয়েটা লজ্জা লজ্জা মুখ করে বলেছিল ফুলেশ্বরী।

– ফুলেশ্বরী? কী সুন্দর নামটা রে তোর। তোকে নিয়েই তাহলে সিনেমাটা হয়েছিল। সন্ধ্যা রায় ছিল না? স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলেন রজতকান্তি।

রজতকান্তির স্ত্রীর নাম চন্দ্রিমা। সায় দিলেন।

রজতকান্তি বললেন– মেয়েটা এতদিন আছে, ভালো নামটাই জানি না। ফুলি নামে ডাকি।

ফুলি বলে, না, আমার নামে ব্যাংক-এ বই খুলতে হবে না। আপনার কাছে টাকা আছে, ওটাই ঠিক আছে।

রজতকান্তি বলে, মোটেই ঠিক নেই। আমি মরে গেলে?

ধুর, খালি বাজে কথা।

মানুষ চিরকাল বাঁচে নাকি? একবার তো হার্ট অ্যাটাক হয়েই গেল। তোর সব টাকা তোর অ্যাকাউন্ট-এ রেখে দেব।

কিন্তু অ্যাড্রেস প্রুফ? আইডেনটিটি প্রুফ? ওর তো ভোটার কার্ডই নেই। গত ভোটের আগে একবার ভোটার কার্ড করার চেষ্টা করেছিলেন রজতকান্তি, হয়নি। ওরা চেয়েছিল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, পাসপোর্ট, প্যান কার্ড এসব কত কিছু।

তোর রেশন কার্ড আছে না একটা?

জানি না।

জানি না মানে? ছিল তো নিশ্চয়ই।

ঠোঁট উলটে ফুলি মাথা নাড়ায়। মানে জানে না।

তার মানে ফুলির ভারতের নাগরিকত্বের কোনও প্রমাণ নেই।

ফুলি কবে থেকে এখানে? মামণি যখন মাধ্যমিক দিল। ফুলির মা বলেছিল, মেয়েটাকে আপনারা রাখুন। বারো বছর বয়স হ’ল ওর। ওর উপর কুনজর পড়েছে। সকালে চলে আসি, ঘরে একা থাকে মেয়ে। ওকে খাওয়া পরায় রেখে দিন। তার মানে বারো বছর হয়ে গেল এ বাড়িতে।

আগেকার সময় হলে চেষ্টা চরিত্র করে একটা রেশন কার্ড করে নেওয়া যেত। এখন শহুরে মধ্যবিত্তরা রেশন-এর চাল খায় না। রেশন দোকান থেকে গম নিয়ে চাকিতে দিয়ে আটা ভাঙানোর দিনও আর নেই। এখন সবাই আটাই কেনে। রেশন-এর দোকানে আজকাল মুদি দোকানের মতোই মশলা, সাবান, এমনকি প্রসাধন সামগ্রীও বিক্রি হয়। রজতদেরও রেশন কার্ড আছে। মাসে একবার গিয়ে যা হোক কিছু নিয়ে আসা হয়। রেশন কার্ড করাতে গেলে বলবে আগের কার্ডখানা নিয়ে আসুন, যদি বলা হয় আগে কার্ড ছিল না– তখন বলবে এত বছর বয়সেও কার্ড নেই? ঠিকানার প্রমাণ, বয়সের প্রমাণ, ভোটার কার্ড...। ফুলির তো কিচ্ছু নেই। এই যে চব্বিশটা বছর ধরে পৃথিবীতে রয়েছে, তার কোনও প্রমাণ নেই। ফুলিকে কেউ চিঠিও দেয় না।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...