গ্যাসে গরম দুধ ফুটছে আর দুলাল অল্প অল্প করে ছানা কাটা পাউডার মিশিয়ে যাচ্ছে। ছানা কাটাও যে এত শক্ত কাজ কে জানত! কাল পাউডার বেশি পড়ে গেছিল, কী তেতো, কী তেতো! মুখেই তোলা গেল না। জানলায় একটা কাক এসে বসে রোজ সকালে, তার পেটেই গেল সব।

আজ তাই দুলাল খুব সাবধানে পাউডার মেশাচ্ছে। ছোট্ট সুন্দর প্লাস্টিকের কৌটোয় এই এতটুকু একটা বেগুনি চামচ, তাতে করেই তুলছে একটু একটু করে। দুধটা দানা পাকাতে শুরু করেছে। দুলাল পাউডার মেশানো বন্ধ করে। চামচটা কৌটোয় রেখে দেখে, যেটুকু পাউডার আছে তাতে এ মাসটা হেসেখেলে চলে যাবে। রান্নাঘরের লাগোয়া ছোট্ট স্টোররুম। এই জায়গাটা দুলাল রেখেছিল লিফটের জন্য। পাঁচতলা অ্যাপার্টমেন্ট। যারা চার বা পাঁচতলায় থাকবে তাদের কথা ভেবেই লিফট করতে চেয়েছিল। সবারই তো বয়স হচ্ছে। কিন্তু বউগুলো মহা বেয়াড়া। কাঁইমাঁই কাঁইমাঁই করে বলল, ‘লিফট চাই না, আমাদের কিচেনের সঙ্গে অ্যাটাচড স্টোররুম চাই।’ ব্যস্, লিফট বন্ধ। দুদিন পরেই টের পাবে মজা। মেয়েদের হাঁটু সবার আগে খারাপ হয়। এদিকে ফেসিয়াল করাবে, ওদিকে হাঁটু পালটাতে হবে। নকল হাঁটু নিয়ে সিঁড়ি ভাঙার কষ্ট বুঝবে হাড়ে হাড়ে!

সেই স্টোররুমে গিয়ে থরে থরে সাজানো ছোটো-বড়ো কৌটোর মধ্যে দুলাল চিত্রার্পিতের মতো দাঁড়িয়ে রইল। চাল, ডাল, আটা, ময়দা, তেল, মশলা যা আছে আরও দু’মাস চলে যাবে। বাথরুমের বক্স মিররের মধ্যেও শ্যাম্পু, সাবান, বডি অয়েল। কমোডের পেছনের তাকে বাথরুম ঘষার অ্যাসিড, ব্রাশ। তাকে এখনও সংসারের একটা ছোট্ট জিনিসও একটা স্কচ-ব্রাইট কি টুথপেস্ট - কিছু কিনতে হয়নি।

শংকরী সব সাজিয়ে রেখে গেছে। যেমন বাড়িঘর, তেমনি নিজের শরীরটাও ঘষেমেজে রাখতে পছন্দ করত। পার্লারে যাবার সময় পেত না বলে একটা মেয়ে নিয়মিত বাড়িতে এসে ফেসিয়াল, হেনা, বডি মাসাজ করে দিয়ে যেত। দুলালের পছন্দ ছিল না এসব, বিশেষ করে আদুড় গায়ে বাইরের লোককে দিয়ে বডি মাসাজ, যতই মেয়েমানুষ হোক না। শংকরী মুখ টিপে হেসে বলত, ‘যে মন্দিরে নিত্য ঘন্টা বাজিয়ে পুজো করতে যাও, সেটা ঘষেমেজে না রাখলে হবে?’ মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত ঝকঝকে রাখা যার রোজকার সাধনা ছিল, সে টের পেল না তার দেহমন্দিরে কালসাপ বাসা বেঁধেছে?

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...