সুমনা বিকল্প ভাবল। সে নিজে কিছু করবে না কিন্তু অন্য কেউ যদি করে তাহলে সুমনার সংসারে শ্যাম এবং রায় দু'জনেরই মান রক্ষা হয়। চিমনি এখনও ওয়ারেন্টি পিরিয়ডের মধ্যে আছে। সুমনা চিমনি কোম্পানির টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করল। আশা ছিল ওরা এসে তাড়িয়ে দিলে সুমনার ভাগে দোষ পড়বে না। কিন্তু ওদের কথায় মন ভরল না। চিমনি কেনার সময় যত কিছু টার্মস এবং কন্ডিশন থাকে তার মধ্যে কোথাও উল্লেখ নেই যে, পাখি বাসা বাঁধলে কোম্পানির লোক এসে তাড়িয়ে দিয়ে যাবে। বাড়িটিও নিজের। ভাড়া বাড়ি হলে হয়তো বাড়ির মালিককে কাজে লাগানো যেত। সে আশাও নেই। সুমনা অনেক ভেবে নিরাশ হল। কিন্তু হাল ছাড়ল না। কেবল ভাবনা আর ভাবনা। সমস্ত ভাবনাই পাখিটিকে নিয়ে। ওর মাতৃত্ব নিয়ে। ভাবতে ভাবতে একসময় ওর নিজের অজান্তেই উৎখাতের বদলে কখন যেন পাখির মায়ায় পড়ে গেল।

চারদিন হতে চলল রান্না বন্ধ। সকালের চা থেকে শুরু করে জলখাবার, দুপুর রাতের খাবার পর্যন্ত একটি হোম ডেলিভারি সংস্থাকে অর্ডার করা হয়েছে। রান্না ঘরের মেঝেতে চুপচাপ ঝাড় দিচ্ছে কাজের মেয়ে সন্ধ্যা। প্রয়োজনীয় বাসন কোসন এত সাবধানে নিতে হচ্ছে যেন টু শব্দটি না হয়। সন্দীপনের মতো বিরক্ত হলেও প্রকাশ করতে পারছে না সন্ধ্যাও। সুমনার কড়া নির্দেশ। যতদিন পর্যন্ত না ডিম ফুটে ঠিকঠাক বাচ্চা বের হচ্ছে ততদিন পাখিটিকে কোনওমতেই বুঝতে দেওয়া চলবে না বাড়িটি আমাদের। এমন সন্তর্পণে চলাফেরা, কথাবার্তা বলতে হবে যেন পাখিটির কানে না যায়। এ সময়টা মানুষ-পাখি দু'জন ভাবি মায়েরই খুব টেনশনের সময়। টেনশনের উপর আর টেনশন দেওয়া যাবে না।

বেড়েছে সুমনার ব্যস্ততাও। এই কয়েকটি দিনেই সে যেন পালটে গেছে। দাপুটে স্বভাবটাতে এক অদেখা কোমলতার ছাপ পড়েছে। যেমন স্যাঁকা ব্রেডের উপর মাখন। ছোটোখাটো ভুলত্রুটি চোখে পড়লে কিছু বলছে না। না দেখার ভান করে চোখ সরিয়ে নিচ্ছে। রান্না-বান্নার পাট নেই। সে ব্যস্ত। যথেষ্ট ব্যস্ত। বার বার পা টিপে টিপে যাচ্ছে চিমনির কাছে। পাখিটিকে দেখছে। প্রথম প্রথম সুমনাকে দেখলে পাখিটি ডানা মেলে মিথ্যে ওড়ার ভান করে ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ শব্দ করত। এখন করছে না। চিনে গেছে নিশ্চিত। পশুপাখিরা উপকারীদের খুব সহজে চেনে। সুমনাও বাজার ঘুরে ঘুরে সন্ধ্যাকে দিয়ে কিনে এনেছে পাকা পেঁপে, পাকা ডুমুর, লাল টকটকে স্বাস্থ্যবান লংকা। চিমনির উপর থেকে সাবধানে বাসার ভেতরে দিয়েছে। পাখি পেঁপে, ডুমুর খেয়েছে। কিন্তু লংকা খায়নি। লাল লংকা কেন খেল না পাখি! ও কি তবে টিয়া পাখি নয়? সবুজ রঙের পাখি টিয়া পাখি ছাড়া আর কী পাখি হতে পারে? সমস্যায় পড়ল সুমনা। গুগল সার্চ করলেই সমস্যার সমাধান হবে। অনেক সমস্যার সমাধান হয়েছেও। সুমনা গুগল সার্চ করতে শুরু করল। পাখির নাম খুঁজে পাবার আগেই পেল সঠিক পদ্ধতিতে পাখি তাড়াবার বইয়ের নাম। আশার আলো পুনরায় যেন ফুটল। বেশকিছু বইয়ের মধ্যে একটি বই বেছে নিল। প্রাপ্তিস্থানটাও কাছাকাছি। আগে বই পড়ার অভ্যেস ছিল সুমনার। বহুদিন পর পুরোনো অভ্যেস ফিরে আসবে জীবনে। বই-ই তো শ্রেষ্ঠ বন্ধু। এক কাজে দুটো কাজ হবে। সুমনা ছুটল বইয়ের দোকানে।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...