অম্বিকাপুর থেকে ৪৫ কিমি দূরে অবস্থিত মেনপট। স্বপ্নময় শৈলশহর।ছত্তিশগড়ের সরগুজা জেলার এই অপূর্ব স্পটটি লোকচক্ষুর আড়ালে রয়েছে বলেই, এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এতটুকু খর্ব হয়নি। গত পাঁচ দশক ধরে তিব্বতিরা বসত গড়েছেন এই মেনপট-এ। কার্পেট বোনা, ম্যাট তৈরি করাই এঁদের মূল আয়ের আধার। এছাড়া যারা এখানকার আদিবাসী, সকলেই নাকি মহাভারতের যুগ থেকে বসবাস করছেন এখানে। প্রচুর পরিমাণে বক্সাইট মেলে এ অঞ্চলে। আর প্রকৃতি ঢেলে সাজিয়েছে চিত্রপট।
থাকার জায়গা পেয়েছি শৈল টুরিস্ট রিসর্ট-এ। ২২ টি কটেজ-যুক্ত এই রিসর্ট আমাদের অবসরযাপনের জন্য আদর্শ। অপূর্ব নৈসর্গিক শোভা, পাখির ডাক, মনোরম বনস্থলি– সব মিলে জবাব নেই মেনপট-এর। ভোর বেলায় কুয়াশামাখা পথ ধরে হেঁটে গেলাম ছোট্ট একটা গ্রামে। গ্রামীণ জীবনের স্বাদ নিয়ে ফিরে এলাম একটা মনভালো করা ব্রেকফাস্টের টানে। বিকেলে ঘুরে নিলাম আকরিক জলের হ্রদ তপ্তপানি। অপূর্ব নিসর্গে মনের রিজুভিনেশন হয়ে যায় অচিরেই।
মেনপট-এ কয়েকটি সুন্দর সাইট সিয়িং রয়েছে। পরের দিনটা বরাদ্দ ছিল সেই জন্যই। একটা গাড়ি ভাড়া করে ঘুরে নিলাম জায়গাগুলো। প্রথমেই মছলি পয়েন্ট। এটা একটা ঝরনা, উচ্চতা প্রায় ৪৮ মিটার। মছলি নদীতে গিয়ে মিশেছে এই ঝরনা। জায়গাটার দৃশ্যপট অনবদ্য। জঙ্গলের পথ ধরে ছোট্ট ট্রেক করে পৌঁছোনো যায় এখানে। ঝরনায় স্নান করতে করতে প্রচুর মাছ দেখতে পাবেন পাথরের খাঁজের মধ্যে।
গভীর জঙ্গল পেরিয়ে গাড়ি পৌঁছোল আরও একটি অপূর্ব দ্রষ্টব্য, টাইগার পয়েন্ট-এ। এটাও একটি ঝরনা, যার দ্বারা তৈরি হয়েছে মহাদেব মুড়া নদী। বর্ষার জল পেয়ে নদীটি বেশ স্ফীত। কাছেই ‘ফায়ার ওয়াচ টাওয়ার’। উপর থেকে চারপাশের জঙ্গল ও উপত্যকার অপূর্ব রূপ মন কেড়ে নেয়।
মেহতা পয়েন্ট আমাদের পরের গন্তব্য। চারপাশের পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এ জায়গাটার তুলনা নেই। যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। পর্যটকদের জন্য কয়েকটি শেড তৈরি করে দেওয়া হয়েছে, যেখানে বসে অনেকটা সময় কাটিয়ে দেওয়া যায় প্রকৃতির কোলে।