হাওড়া স্টেশন থেকে রাত্রি ৮.১০ নাগাদ ছাড়া পোরবন্দর এক্সপ্রেসে-এ চেপে আমরা গুজরাত ভ্রমণ শুরু করলাম। ট্রেনে কাটল দু’রাত্রি একদিন। পরের দিন একঘণ্টা লেটে বেশ ভোরে সুরাট স্টেশনে নামা হল। তারপর কাছেই দোকান থেকে ব্রেকফাস্ট সেরে একটা স্টেশন ওয়াগন ভাড়া করে আমাদের ষোলোজনের দল রওনা দিলাম দমন অভিমুখে।

সুরাট খুবই বড়ো শহর। প্রচুর হাইরাইজ, তার মধ্যেও একটি দুটি পুরোনো দিনের গুর্জর স্থাপত্য-ভাস্কর্যের গৃহ আমার দৃষ্টি টানল। শহর ছাড়াতেই পথের দুধারে ঝাউ আর সোনাঝুরি গাছের গার্ড অফ অনার আর আখের খেত, গ্রাম, গঞ্জ। তবে সবই দূরে দূরে, কারণ প্রায় সারাপথই ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে চলা। পথে ছ’টি নদী পেরোলাম– অম্বিকা, গণদেবী, ধলধরা, কাবেরী, খারেরা, আওরাঙা। ক্রমে ১৪৯ কিমি. পথ পেরিয়ে পাতালিয়া চেকপোস্ট, ননীদমনের শুরু।

সমুদ্রের ধার ঘেঁষা গুজরাতের প্রাকৃতিক নিসর্গ অবর্ণনীয়। প্রায় সাড়ে চারশো বছর ধরে পর্তুগিজরা এই স্থানে রাজত্ব করেন ফলে কেন্দ্রশাসিত এই অঞ্চলে পর্তুগিজ সংস্কৃতির ছাপ স্পষ্ট। সঙ্গে রয়েছে গুজরাতি এবং মারাঠি সংস্কৃতির মিশ্রণও।

পথের দু’ধারে একতলা বাংলোবাড়ি বাগানে ঘেরা, দোতলা বাড়ি খুব কম। নারকোলবীথি। ১০.৪৫ মি. নাগাদ দেবকা সাগরবেলার কিনারায় একটি হোটেলে পৌঁছোলাম। হোটেলটি ভালো। স্নান ও লাঞ্চ সেরে আমরা সমুদ্রের ধারে গিয়ে ঝিনুক, শাঁখ কুড়োতে লাগলাম, খুব মজা লাগছিল। প্রথমে সমুদ্রের জল দূরে ছিল তারপর জোয়ার এল, জল চলে এল একেবারে হোটেলের কিনারায়। হোটেলের বাগানে উঠে এলাম, দোলনা ছিল, দোলনায় দুলতে দুলতে ঢেউয়ের ওঠা পড়া দেখতে লাগলাম।

বিকেল নাগাদ গাড়িতে ননীদমনের দ্রষ্টব্য দেখতে বার হলাম। প্রথমে যাওয়া হল দমন গঙ্গা ও সমুদ্রের সঙ্গমের কাছে পর্তুগিজদের কেল্লা দেখতে। দমন গঙ্গায় প্রচুর নৌকো বাঁধা রয়েছে। ওপারে সঙ্গম স্থানে লাইটহাউস রয়েছে। ১৬১৪-১৬২৭ খৃষ্টাব্দে তৈরি কেল্লার বিশাল গেট। গেটের মাথায় সেন্ট জর্জের মূর্তি, দু’পাশে মানুষের বিশাল ফিগার। কেল্লা অবশ্য ধবংসপ্রাপ্ত। আমরা সিঁড়ি বেয়ে কেল্লার উপরে উঠলাম। কেল্লার পিছনেও একটি গেট আছে। কেল্লার মধ্যে একটি সুন্দর গির্জা, নাম ‘আওয়ার লেডি অব দি সি’। তৈরি ১৯০১ সালে। ভিতরে সুন্দর সাজানো। এবার যাওয়া হল দেবকা সি বিচে সূর্যাস্ত দেখতে। সেই চিরপুরাতন কিন্তু চিরনূতন মহাজাগতিক হিরণ্ময় দৃশ্য। পশ্চিমাকাশে দোল ফাগুনের রং ছড়িয়ে ধীরে ধীরে সূর্যদেব ডুব দিলেন সাগরজলে। তারপর একটা দোকানে চা ও আলুর বড়া খেয়ে বিশ্বকর্মাজির মন্দির। প্রাচীন মন্দির, অপরূপ মূর্তি, পঞ্চমস্তক, দেবী না দেবতা ঠিক বোঝা গেল না। নীচে পাঁচটি মূর্তি, কুলুঙ্গিতে বিঠলজির মূর্তি। এরপর ডালা বাবার মন্দির দর্শন করে হোটেলে ফেরা।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...