ছেলেবেলায় ভূগোলের বইতে পড়া উত্তর আমেরিকার পাঁচটি বিশাল জলাশয় — লেক সুপিরিয়র, মিশিগান, হুরণ, ইরি আর অন্টারিও বরাবর বিস্মিত করত। ছেলেবেলায় স্বপ্ন ছিল অন্তত একটি লেককে দেখার। তাই যখন দ্বিতীয় বৃহত্তম (জলের পরিমাণ অনুসারে) লেক মিশিগান-এর সামনে দাঁড়ালাম তখন আনন্দাশ্রুতে চোখ বন্ধ হয়ে গেল। যেন স্বপ্নে আমার সামনে দাঁড়িয়ে মিশিগান লেক। প্লেনে বসে ভ্রমণের বইতে পড়েছিলাম, লেকের আয়তন ৫৮ হাজার ৩০ বর্গ কিলোমিটার। আলাদা আলাদা নয়, একটি অন্যটির সঙ্গে কোথাও না কোথাও নদী বা অন্য জলাশয়ের ভিতর দিয়ে জুড়ে আছে পাঁচটি লেক— যেন পাঁচ যমজ ভাই-বোন।

ট্যাক্সি থেকে নেমে প্রায় দৌড়ে এসে পৌঁছেছিলাম মিশিগানের বাঁধানো পাড়ে। স্থানীয় নাম, ‘নেভি পিয়ার' (Navy Pier)। প্রথমে যখন দেখলাম তখন বিশ্বাসই হচ্ছিল না— একি লেক না সমুদ্র? সামনে একাধিক ছোটো বড়ো সাইজের ‘ক্রুজ' বোট আর অসংখ্য শৌখিন মোটর চালিত নৌকা দুলছিল হালকা ঢেউ-এর দোলায়। মাঝে মাঝে মাঝারি সাইজের ঢেউ এসে আমাদের পায়ের নীচে বাঁধানো ঘাটেও ধাক্কা দিচ্ছিল আর ঠিক সমুদ্র পাড়ের মেছো সোঁদা সোঁদা গন্ধ; অসংখ্য ধবধবে সাদা ‘সি গাল' আর অন্যসব জলের পাখি উড়ে উড়ে বা দোদুল্যমান বোটগুলোর ছাদে বসে খাবার খুঁজে বেড়াচ্ছে, তারা কলরবে মত্ত। ছোটো বড়ো ভাড়ার লঞ্চস্টিমার বা ‘ওয়াটার ট্যাক্সি' পর্যটকের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বা হুইসিল মারছে। ঠিক যেমনটি দেখা যায় সমুদ্রবন্দরে বা সমুদ্র পাড়ের শহরে।

লেকের পাড়ে এই নেভি পিয়ারে নানারকম পর্যটক বিনোদনের পুরোপুরি ব্যবস্থা রয়েছে। কোথাও লাউড-স্পিকার লাগিয়ে ব্যান্ড বাজছে আবার কোথায়ও রয়েছে বাচ্চাদের মনোরঞ্জনের জন্য ‘অ্যামিউজমেন্ট পার্ক”। বিশাল বিশাল ‘আকাশ-ঝুলা” ধীরে ধীরে ঘুরছে।

আমার ফ্লাইট সঠিক সময়েই ‘ও-হেরে’(O’Hare) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছেছিল, কিন্তু প্রত্যেক বারের মতো এবারেও রতন সরকারের ফ্লাইট আধ-ঘণ্টা দেরি করে শিকাগোর দ্বিতীয় এয়ারপোর্ট ‘মিড-ওয়ে' (Midway International Airport)-তে ল্যান্ড করল। ওখান থেকে ট্যাক্সি করে আসতে প্রায় ৫০ মিনিট লেগে যাবে। তাই আমি আগেই এসে লেকের ধারে একটা ফাঁকা বেঞ্চে বসে লেকের গায়ে গায়ে গড়ে ওঠা শিকাগো শহরের আকাশচুম্বী অট্টালিকা বেষ্টিত আকাশ-রেখা বা স্কাই-লাইনের আনন্দ নিচ্ছিলাম। এ যেন আমেরিকার বাণিজ্যিক রাজধানী নিউইয়র্কের আকাশ-রেখার সঙ্গে পাল্লা দিতে লেগে গেছে। সুউচ্চ অট্টালিকা শ্রেণির মাঝেও জিরাফের মতো দুটো লম্বা কান উঁচু করে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে ১৪৫১ ফুট উঁচু উইলিস টাওয়ার, যেন একান্তে লম্বা কান পেতে মহাকাশের স্তব্ধতার মাঝে স্বর্গীয় সংগীতের আস্বাদ নিচ্ছে।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...