অন্ধ্রপ্রদেশের উত্তরাংশে খাম্মাম জেলা। এই জেলার উত্তরে ছত্তিশগড় রাজ্য, পশ্চিমে ওয়ারাঙ্গল জেলা, দক্ষিণে নালগোন্দা, কৃষ্ণা জেলা আর পূর্বে পশ্চিম ও পূর্ব গোদাবরী জেলাদ্বয়। তবে খাম্মাম জেলা বর্তমানে আর অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত নয়। বর্তমানে এটি তেলেঙ্গানা রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত। পর্যটন মানচিত্রে খাম্মাম স্থান না পেলেও এই জেলার প্রাকৃতিক আকর্ষণে, অনন্য মন্দির স্থাপত্যের উৎকর্ষে বা প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক সমারোহে অথবা ঐতিহাসিক দুর্গ প্রাকার দর্শনে স্থানটি অতুলনীয়। একজন উৎসুক পর্যটক যে যে আকর্ষণে দেশ ভ্রমণ করেন, তার প্রায় সবটাই মজুদ রয়েছে এই জেলার কোনে কোনে। অন্ধ্রপ্রদেশ পর্যটন দফতর একটা ভালো কাজ করেছে তা হল, জেলাভিত্তিক প্রচার পুস্তিকার মাধ্যমে রাজ্যের পর্যটন আকর্ষণের বিবরণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। প্রচার পুস্তিকার অর্থমূল্য নেই আর বিলিব্যবস্থায় নেই কোনও কার্পণ্য। ফলে সাধারণ মানুষের হাতেও চলে যাচ্ছে পর্যটন আকর্ষণের কেন্দ্রগুলির বিবরণ। এভাবেই আমার হাতে একদিন এল খাম্মাম জেলার এক প্রচারপুস্তিকা। মনে হল ভালোই হল, সময় সুযোগ পেলে ঘুরে নেওয়া যাবে জায়গাগুলি।
বেশ বড়ো জেলা খাম্মাম। সাধারণ পর্যটকের কাছে এক-দুদিনে সব জায়গা দেখা সম্ভব নয়। আর দ্রষ্টব্য রয়েছে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। শুরু করা যাক খাম্মাম শহর দিয়েই। জেলা শহর খাম্মাম। রাস্তাঘাট বেশ ভালোই। সারা শহর জুড়ে নানা নির্মাণকার্য চলছে। ব্যক্তিগত বাড়িঘর ছাড়াও এখানে অনেকগুলি পাবলিক স্কুলকলেজ গড়ে উঠছে। যদিও অধিকাংশই শহরের উপকণ্ঠে। দোকান বাজার শহর জুড়ে, চালু স্কুলকলেজও রয়েছে বেশ কয়েকটি। শহরের মধ্যে রয়েছে দুটি প্রধান দ্রষ্টব্য। প্রথমটি হল স্তম্ভদ্রী লক্ষ্মীনরসিংহ স্বামী দেবস্থানম্। একটি টিলার মাথায় লক্ষ্মী-নরসিংহ দেবের মন্দির। এই মন্দিরের গায়েই মন্দিরের জন্মকাহিনি বর্ণনা করা রয়েছে। সেই কাহিনি বলে এই পাহাড়ের মাথায় মৌদগৌল্য মহামুনি তপস্যা করছিলেন, তাঁর সঙ্গে ছিল তাঁর অনুগামী ভক্তের দল। তখনই আবির্ভূত হন নরসিংহ দেবতা সঙ্গে লক্ষ্মী দেবী। যেহেতু দেবতা স্তম্ভ ভেদ করে আবির্ভূত হয়েছিলেন তাই এই স্থানের নাম স্তম্ভদ্রী। পরবর্তী সময়ে তা পরিবর্তিত হয়ে হল খাম্মাম মেট্রু যা কালক্রমে হল খাম্মাম।