ছোটোবেলায় ভূগোলের ছাত্রী হিসেবে কতই না গল্প শুনেছি পঞ্চহ্রদের দেশ কানাডার। তখন থেকেই মনের কোণায় একটা ইচ্ছে তৈরি হয়েছিল, ‘হয়তো কোনও দিন....'। আর সেই কোনও দিনটাই হঠাৎ করে চলে এল। কর্মব্যস্ত জীবনের একঘেয়েমি থেকে মুক্তির লোভে তিন সপ্তাহের ছুটি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম আমেরিকা আর কানাডার পথে। ঠিক করলাম এ যাত্রায় দুটো দেশেই দুটো করে শহর ঘুরে দেখব। অনেক চিন্তা ভাবনার পর ঠিক হল একদিকে টরোন্টো, ভ্যানকুভার আর অন্যদিকে নিউ ইয়র্ক এবং ওয়াশিংটন ডিসি। আজ সুন্দরী টরোন্টোর কথা লিখব।
ওন্টারিওর রাজধানী টরোন্টো কানাডার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত। এটাই কানাডার সব থেকে জনবহুল শহর। প্রায় তিন মিলিয়ন লোকের বাস এই শহরে। বহুসংস্কৃতি এবং বহুজাতির মিলনক্ষেত্র বলতে যে-সব শহরের নাম আমাদের মনে আসে, টরোন্টো হল তারই একটি। পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় টরোন্টোতে ১৭০ রকমের ভাষাভাষির লোক বাস করে। তাই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি টরোন্টোর সংস্কৃতিও মনোমুগ্ধকর।
টরোন্টো দিয়ে যাত্রা শুরু করার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু সিডনি থেকে টরোন্টোতে কোনও সরাসরি বিমান পরিষেবা না থাকায় স্টপ ওভার করে গেলে প্রায় ২৫ ঘণ্টা লেগে যায়। অনেক চিন্তা ভাবনার পর নিউ ইয়র্ক থেকেই যাত্রা শুরুর পরিকল্পনা হল। দিন দশেক আমেরিকায় কাটিয়ে রওনা দিলাম টরোন্টোর পথে। ওয়াশিংটন ডিসি থেকে প্লেনে মাত্র দেড় ঘণ্টা লাগল। সকাল এগারোটা নাগাদ টরোন্টো পৌছে গেলাম। আগেই অনলাইনে গাড়ি বুক করা ছিল। এয়ারপোর্ট থেকে গাড়ি নিয়ে সোজা হোটেলে চলে এলাম।
হোটেলে জিনিসপত্র রেখে আর সময় নষ্ট না করে বেরিয়ে পড়লাম লাঞ্চ-এর ব্যবস্থা করতে। পাশেই ইটন সেন্টার। টরোন্টোর সব থেকে বড়ো শপিং মল। তবে ইটন সেন্টার শুধু একটা শপিং মল নয়, এটা আন্তর্জাতিক পর্যটকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়। সপ্তাহে প্রায় এক মিলিয়নের উপর লোকের পদধূলি পড়ে এখানে। পৃথিবী বিখ্যাত ২৩০টি রিটেল শপ ছাড়াও এই ইটন সেন্টার নজরকাড়া স্থাপত্য শিল্পের জন্যও বিখ্যাত। এখানের ফুড কোর্টে অনেকরকম পছন্দের খাবার পাওয়া যায়। সবার পছন্দের খাবার পেতে বিশেষ বেগ পেতে হল না।