রাজাভাতখাওয়া

ডুয়ার্স-এর সবুজের মায়াময় আকর্ষণ আপনাকে ছুটিয়ে নিয়ে যাবে এই ডেস্টিনেশন রাজভাতখাওয়ায়। ভুটানের রাজা ও কোচবিহারের রাজার মধ্যে একসময় সামরিক চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছিল। তারপর এই স্থানে দুই রাজাই বসে ভাত খেয়েছিলেন। তারই প্রেক্ষিতে জায়গার নামকরণ। বস্তুত বক্সা অভয়ারণ্যের গেটওয়ে এই জায়গাটি।

অতীতে রাজভাতখাওয়া ও জয়ন্তীর রমরমা ছিল ডলোমাইট ব্যাবসার জন্য। সে সব অবশ্য ইতিহাস। এখন ডুয়ার্স পর্যটনের মানচিত্রে একটি উজ্জ্বল জায়গা হয়ে উঠেছে রাজভাতখাওয়া ও বক্সা। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে রেলপথ। পাশে ছোট্ট জনপদ। প্রকৃতির কোলে যেন এক শান্তির ঠাঁই।

বক্সা জঙ্গলের বন্যপ্রাণ-কে জানতে ও চিনতে গড়ে তোলা হয়েছে প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। রয়েছে অর্কিডের সংগ্রহশালা। আর জঙ্গলের নিবিড়ে রয়েছে একটি ওয়াচটাওয়ার। জঙ্গল যারা ভালোবাসেন, তারা অনায়াসেই প্রকৃতির সঙ্গে একটা উইকএন্ড ডেট করতে পারেন এই বক্সায়।

কীভাবে যাবেন : কলকাতা থেকে ট্রেনে আলিপুরদুয়ার। এখানে নেমে রাজভাতখাওয়া গাড়িতে বা বাসে ১৮ কিলোমিটার দূরত্বে।

কোথায় থাকবেন : বন দফতরের জঙ্গল লজ রয়েছে রাজাভাতখাওয়ায়। বুকিং করতে হবে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার-এ ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের অফিসে এসে।

travel Rasik Bill

রসিক বিল

 চারপাশে গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর জন্য যখন হইচই, তখন একটুকরো নির্জন সবুজ গেরস্থালি নিয়ে পর্যটকের অপেক্ষায় এই অপূর্ব জায়গাটি। নাম রসিক বিল। সিনচুলা পাহাড়ের পাদদেশে ১৭৫ হেক্টর জায়গা নিয়ে এখানে পাখিদের ঘরসংসার। যে-সব পরিযাযী পাখিরা হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে উড়ে আসত একসময়ে গ্লোবাল ওয়ার্মিং বদলে দিয়েছে তাদের উড়ালপথ। তবু কিছু পাখি এখনও আসে রকিক বিলে। বার্ড ওয়াচাররা তাই শীতকালে মিস করেন না এই নিরালা সফর।

অতীতে কোচ রাজাদের মৃগয়াভূমি ছিল এই বিস্তৃত জলা।এখানে নৌকায় চেপে বার্ড ওয়াচিংয়ের মজাই আলাদা। পিনপতন নৈশব্দ, বুক ভরা অক্সিজেন আপনার মন ও শরীরকে নিমেষে রিজুভিনেট করে দেবে।

শীতের আমেজ পুরোপুরি চলে যাওয়ার আগে,ঘুরে যান এই বনস্থলি থেকে৷ সঙ্গে আনবেন বাইনোকুলার৷ আর সেলিম আলির পাখি বিষয়ক বইটি থাকলে তো কথাই নেই। এক এক করে ক্যামেরায় ধরা দেবে নানা চেনা-অচেনা পাখি। নীলডোবা, বোচামারি, রায়চাঙ্গমারি, শাঁখাডাঙা হয়ে রসিক বিলে পেঁছে যাবেন। ভাসতে ভাসতেই চোখে পড়বে খুন্তি বক, বেলে হাঁস, সঙ্গে পরিযাযী পাখিদের ঝাঁক।

পাখি দেখার ফাঁকে, বোচামারির বিলে, প্রকৃতিবীক্ষণকেন্দ্রটিও দেখে নেবেন। এছাড়া ছোটোদের জন্য পার্ক আর অ্যাকোরিয়ামও আছে। পাখি দেখা যায় সকাল ৮-টা থেকে বিকেল ৫-টা অবধি।

কীভাবে যাবেন : শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে নামুন আলিপুরদুয়ার। বাসে বা গাড়িতে ২৪ কিলোমিটার পথ পেরোলেই রসিকবিল।

কোথায় থাকবেন : রসিকবিলে থাকার জন্য বন দফতরের কটেজ আছে। বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করুন ৬-এ, সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার-এ। ফোন : ২২৩৭-০০৬০।

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...