করোনার অতি-সংক্রমণের কারণে, আমরা উৎসব অনুষ্ঠানের আনন্দ থেকে অনেকটাই বঞ্চিত হয়েছি। যদি সত্যিই সেভাবে কোথাও গিয়ে মানে বিয়ে, পার্টি, অন্নপ্রাশন, পৈতে ইত্যাদিতে যোগদান করে আনন্দ উপভোগের সুযোগ আসে, তাহলে সেজেগুজে সবার সামনে নিজেকে মেলে ধরার ইচ্ছে হবেই। কিন্তু কীভাবে এবং কতটা কী Makeup নিলে আপনি সবার নজর কাড়তে পারবেন, সেই বিষয়ে জ্ঞান থাকা আবশ্যক। এই লেখায় রইল কিছু স্পেশাল মেক-আপ টিপস।
ফাউন্ডেশন : ত্বকের সঙ্গে মানানসই ফাউন্ডেশন ব্যবহার করুন। মনে রাখবেন মেক-আপ-এর বেস ঠিক থাকলে অর্ধেক সাফল্য পেয়ে গেলেন। মেক-আপ যত ন্যাচারাল দেখাবে, ততই পারফেক্ট লাগবে আপনাকেও। কেক, লিকুইড আর পাউডার, তিন রকমের ফাউন্ডেশন বাজারে মেলে। অনুষ্ঠানে বা উৎসবে অংশ নেওয়ার আগে, ব্যবহার করুন হাইড্রেটিং বা স্টেন ফিনিশ লিকুইড ফাউন্ডেশন।
পাউডার টাচ : ক্রিম আইশ্যাডো আর ক্রিম ব্লাশ অন লাগানোর ফলে কিছুক্ষণ পর থেকেই আপনার স্কিন টোন প্যাচি লাগতে পারে। মুখে বলিরেখা থাকলে সেটাও প্রকট হবে। তাই চটজলদি মেক-আপ করতে হলে লাইট পাউডার আইশ্যাডো আর পাউডার ব্লাশ অন ব্যবহার করুন।
আই পেনসিল : কম বয়সি মহিলারা লাইনার লাগাতে চান না। তাই এর ভালো বিকল্প হতে পারে কালারফুল পেনসিল। ব্লু ও গ্রিন এই দুটো বেসিক কালারের সঙ্গে ব্রাউন পেনসিলও কিনে রাখুন।
লিপ কালার : ঠোঁটে ইনস্ট্যান্ট গ্লো আনতে ন্যাচারাল ক্রেয়নের বদলে ভাইব্র্যান্ট রেড বা চেরি কালার লিপস্টিক লাগান। ফেসটিভ লুক-এ রেড খুব হট লাগে।
পিওর ব্রাউন শেডস : আপনি ব্রাউনের ভক্ত হলেও, প্লিজ অনুষ্ঠানের জন্য ম্যাটি ব্রাউন আইশ্যাডো বাছবেন না। এই রঙে হলদে ও লালের কিছু পরিমাণ থাকে, যা ব্রাউন আইশ্যাডো লাগানোর পরে আপনার চোখের ক্লান্ত ভাব প্রকট করে। এর বদলে পিওর ব্রাউন লাগান বা খয়েরি। এতে ন্যাচারাল লাগবে।
ব্রাইট লুক : চোখ যদি আকারে ছোটো হয়, তাহলে পেনসিল হোয়াইট আইলাইনার দিয়ে মেক-আপ শুরু করা উচিত। চোখের নীচের আইলিড-এ হোয়াইট আইলাইনারের সিংগল কোট লাগান। এরপর (এর উপর নয়, এর ঠিক পরে) কাজল, ব্ল্যাক বা অন্য রঙের আইলাইনার লাগান। এর ফলে ছোটো চোখ হলেও দেখতে অনেক বড়ো লাগবে।
ভিনটেজ লুক : যদি নিজের আই মেক-আপ কে ভিনটেজ লুক দিতে হয়, তাহলে লিকুইড হোয়াইট আইলাইনারকে প্রায়োরিটি দেওয়াটা যুক্তিসঙ্গত হবে। চোখের পাতায় প্রথমে ব্ল্যাক আইলাইনারের ডবল কোট লাগান। শুকিয়ে গেলে ব্ল্যাক আইলাইনারের গা-ঘেঁষে হোয়াইট আইলাইনারের ডবল কোট লাগান। ব্ল্যাক এবং হোয়াইট আইলাইনারের কম্বিনেশন আপনাকে ভিনটেজ লুক দেবে ।
ক্যাট লুক : ক্যাট আই লুক-এর জন্য চোখের উপর লিকুইড ব্ল্যাক আইলাইনারের ডবল কোট লাগান। আইলাইনার চোখের শেষের দিকে এনে রেখার শেষের অংশটা একটা তেরছা করে উপর দিকে টেনে দিন। এবার নীচের আইলিডের শুধু কর্নারে লিকুইড হোয়াইট আইলাইনার লাগিয়ে দিন।
ভি-লুক : ভি-লুকের জন্য চোখের কোণে পেনসিল হোয়াইট আইলাইনার দিয়ে ভি-শেপ আঁকুন। তারপর ব্ল্যাক, ব্রাউন যে-রং চান সেই রঙের আইলাইনার লাগান। চোখের কোণায় হোয়াইট আইলাইনার যতটা সম্ভব পযে্নটেড করুন।এতে চোখ আরও বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।
কুল লুক : কুল লুক যদি পেতে চান তাহলে প্রথমে চোখের উপর পাতায় ব্ল্যাক কালারের লিকুইড আইলাইনার লাগান। এরপর পেনসিল শিমারি হোয়াইট আইলাইনার লাগিয়ে হালকা স্মাজ করুন। এতে মেক-আপে একটা আইসি (বরফের মতো) এফেক্ট আসবে এবং কুল লুক আনতে সফল হবেন।
ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট লুক : যদি পোশাক হয় ব্ল্যাক ও হোয়াইটের কম্বিনেশন, তাহলে একই রঙের অ্যাক্সেসরিজ-এর সঙ্গে সঙ্গে মেক-আপকেও দিন ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট লুক। এর জন্য চোখের উপর ব্ল্যাক লিকুইড আইলাইনার ও নীচের পাতায় হোয়াইট আইলাইনার লাগান। আবার উলটো-টাও করতে পারেন। উপরে সাদা রেখে নীচে ব্ল্যাক-ও ব্যবহার করতে পারেন।
ড্রামাটিক লুক : রাতের অনুষ্ঠানে গ্ল্যামারাস লুক পেতে হলে চোখের পাতায় ব্ল্যাক বা ব্রাউন কালারের সিংগল কোট আইলাইনার লাগান। এর উপর হোয়াইট আইলাইনার লাগান। এর গা ঘেঁষে ব্লু, গ্রিন বা পার্পল শেডের আইলাইনার লাগিয়ে গ্লিটার আইলাইনার দিয়ে ফিনিশ করুন। সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে আপনি সফল হবেন-ই।
হোয়াইট আইলাইনার যেমন ডিফারেন্ট আই লুক দিতে সক্ষম, তেমনি ফেসিয়াল খামতিগুলোও পূরণ করতে পারে অনায়াসে। সুতরাং সৌন্দর্য বিকশিত করতে কীভাবে সাহায্য করতে পারে হোয়াইট আইলাইনার আসুন জানি
আইশ্যাডোরও কাজ করবে আইলাইনার : পেনসিল হোয়াইট আইলাইনার আপনি আইশ্যাডোর বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন। যদি হোয়াইট আইলাইনার, অ্যাইশ্যাডোর মতো লাগিয়ে তার উপর যে-কোনও রঙের আইশ্যাডো লাগান তাহলে ওই রঙের শেড-টি আরও ডার্ক মনে হবে এবং দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আইশ্যাডো টিকে থাকবে।
পিওর শেড : যখনই ব্লু, গ্রিন, পার্পল-এর মতো কালারফুল শেড লাগাবার ইচ্ছে হবে, তার আগে লিকুইড হোয়াইট আইলাইনার লাগিয়ে নেবেন। তার উপর ইচ্ছেমতন রং অ্যাপ্লাই করলে, হোয়াইট বেস থাকার ফলে আপনার কালার্ড আইলাইনারের পিওর শেড-টা সকলে বুঝতে পারবে।
হাইড ডার্ক সার্কলস : যদি আপনার চোখের নীচে ডার্ক সার্কলস থাকে এবং সেটা যাতে সকলের দৃষ্টিগোচর না হয় তার জন্য, হোয়াইট পেনসিল আইলাইনার লাগিয়ে সেটা হালকা স্মাজ করে আশেপাশে ছড়িয়ে দিন। আইলাইনার দিয়ে যখন ডার্ক সার্কলস পুরোপুরি ঢেকে যাবে এবং সেট হয়ে যাবে তারপর মেক-আপ করা শুরু করুন।
হাইলাইট আইব্রোজ : আইব্রোজ-কে হাইলাইট করতে হলে, আইব্রো বোন-এর উপর পেনসিল হোয়াইট আইলাইনার লাগান এবং ভালো করে সেটি স্মাজ করুন। এর ফলে চোখ এবং আইব্রোজ-এর মধ্যেকার গ্যাপ বাড়বে এবং আইব্রোজ আরও স্পষ্ট এবং আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।
কারেক্ট আইব্রোজ : আইব্রোজ যদি খুব পাতলা হয় অথবা যদি ভ্রূর কোনও শেপ না থাকে, তাহলে পেনসিল হোয়াইট আইলাইনার ব্যবহার করে ভ্রূকে সঠিক শেপ দিন। ভ্রূর ভিতরে ব্ল্যাক বা ব্রাউন শেডের আইশ্যাডো লাগিয়ে আইব্রোজকে পারফেক্ট শেপ ও লুক দিন।
ফুলার লিপস : ঠোঁট যদি খুব পাতলা হয় তাহলে পেনসিল হোয়াইট আইলাইনারের ব্যবহার লিপলাইনার হিসেবেও করতে পারেন। হোয়াইট আইলাইনার দিয়ে প্রথমে ঠোঁটকে পারফেক্ট শেপ দিন। এর পর ভিতরের অংশে লিপস্টিক দিয়ে রং ভরে নিন। এতে ফুলার লিপস এফেক্ট পাবেন।
রেগুলার হেয়ারস্টাইল থেকে বেরিয়ে নতুন কিছু ট্রাই করুন। সিঁথি বদলে কোনও স্টাইল করুন বা খোলা চুলে লাগান স্টাইলিশ অ্যাক্সেসরি।