বাড়ির বারান্দায় বসে সুস্বাদু খাবার খেতে-খেতে বৃষ্টি উপভোগ করতে হয়তো অনেকেরই ভালো লাগে। কিন্তু, রোম্যান্টিক মনের মানুষের কাছে বর্ষা ঋতু উপভোগ্য হলেও,বাস্তবে বর্ষাকাল মানেই নানারকম সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় প্রায় সবাইকে।
বর্ষাকালে জলীয় আবহাওয়ার কারণে স্যাঁতস্যাঁতে ভাব এবং ভ্যাপসা গরমে যেমন অস্বস্তি অনুভূত হয়, ঠিক তেমন-ই আরও অনেক সমস্যা তৈরি হয়। সর্দি, কাশি, ত্বকের সমস্যা, পেট খারাপ প্রভৃতি শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি, অনেক মূল্যবান জিনিসপত্রের ক্ষয়-ক্ষতিও হতে পারে। এরমধ্যে সবচেয়ে ভাবিয়ে তোলে মূল্যবান রত্নালংকারের রক্ষণাবেক্ষণ-এর বিষয়টি। কারণ, সঠিক ভাবে যত্ন না নিলে, রত্নালংকারের আসল রং ও উজ্জ্বলতা হারাতে পারে এবং ক্ষতিগ্রস্তও হতে পারে মূল্যবান জিনিসটি। কিন্তু দামী জিনিসের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়া মোটেই কাম্য নয়। কেননা, কষ্টার্জিত অর্থে কেনা জিনিস নষ্ট হলে, আর্থিক এবং মানসিক দু’রকম ক্ষতি-ই হবে। তাই, আপনার ভালোলাগা বা ভালোবাসার মূল্যবান জিনিসটির যত্ন কীভাবে নেবেন বর্ষাকালে, সেই বিষয়টি জেনে নেওয়া জরুরি। বিশেষকরে, হিরের মতো দামি জিনিসের যত্ন আপনাকে নিতেই হবে। আর ঠিক এই কারণে, বর্ষাকালে কীভাবে হিরের যত্ন নেবেন, সেই বিষয়ে ‘ডি বিয়ার্স ফরএভারমার্ক’ পাঁচটি সহজ উপায় শেয়ার করেছে সম্প্রতি।
১) জলীয় আবহাওয়া থেকে বাঁচানঃ আগষ্ট এবং সেপ্টেম্বর মাসে অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়, তাই এই মাসগুলিতে সর্বত্র একটা স্যাঁতস্যাঁতে জলীয় ভাব তৈরি হয়। এই আদ্রতা যদি কোনওভাবে আপনার মূল্যবান হিরের গায়ে লাগে, তাহলেই বিপদ। কারণ, আদ্রতা যদি হিরেকে গ্রাস করে, তাহলে হিরের উপর এক পাতলা আস্তরণ পড়ে যায় এবং হিরে তার স্বাভাবিক সৌন্দর্য হারায়। তাই, বর্ষাকালে আদ্রতা থেকে বাঁচাতে হবে হিরেকে। একটি সাধারণ সেলভেট কাপড় দিয়ে হিরের গয়নাকে আলতো করে পরিষ্কার করে কিংবা সাবান ও জল দিয়ে ধুয়ে এবং শুকিয়ে আদ্রতা থেকে বাঁচাতে হবে। এক্ষেত্রে মনে রাখবেন, ধুয়ে শুকানোর জন্য ব্যবহার করবেন একটি নরম তোয়ালে।
২) বর্ষাকালে হিরের গয়না পরার নিরাপদ সময়ঃ বর্ষাকালে বৃষ্টির সঙ্গে যখন ঝোড়ো হাওয়া থাকবে, তখন হিরের গয়না না পরা-ই ভালো। কারণ, জলচ্ছ্বাসে দীর্ঘ সময় হিরের উপর হালকা জল জমে থেকে হিরের রং এবং উজ্জ্বলতা নষ্ট করতে পারে। আর এই প্রসঙ্গে মনে রাখতে হবে, শুধু বর্ষাকালেই নয়,সবসময় মেক-আপ এবং সুগন্ধী ব্যবহার করার পর হিরের গয়না পরুন। কারণ, হিরের গয়না আগে পরে নিয়ে মেক-আপ কিংবা বডি-স্প্রে ব্যবহার করলে, তা হিরের উপর লেগে ক্ষতি করতে পারে এই মূল্যবান রত্নটির। এ প্রসঙ্গে জেনে রাখুন, মেক-আপ দ্রব্য কিংবা বডি স্প্রে-তে এমন কিছু রাসায়নিক থাকতে পারে, যা হিরের গায়ে লাগলে ক্ষতি করতে পারে।
৩) হিরে সংরক্ষণ করুন সঠিকভাবেঃ আপনার হিরের উপর যাতে আঁচড় না লাগে কিংবা পলিস নষ্ট না হয়, তারজন্য সমস্ত গয়না একসঙ্গে রাখবেন না, প্রত্যেকটি গয়না আলাদা আলাদা বক্স-এ রাখুন। এরফলে ঘর্ষনজনিত ক্ষয় এড়ানো যাবে। আর ভাঙন কিংবা স্ক্র্যাচ এড়াতে, নরম আস্তরণের একটি হার্ড-কেস বক্স ব্যবহার করুন। আরও ভালো হবে যদি এগুলিকে আলাদা জিপ-পাউচে কিংবা নরম মসলিন কাপড়ে পৃথকভাবে মুড়ে রাখতে পারেন।
৪) আপনার হিরেকে ঝলমলে রাখুনঃ প্রতিটি হিরে-ই মূল্যবান, তাই এর সঠিক ভাবে এবং নিয়মিত যত্ন নেওয়া দরকার। সপ্তাহে একবার, আপনার হিরের গয়নায় কয়েক ফোঁটা হালকা লিকুইড সাবান দিয়ে, কয়েক মিনিটের জন্য জলে ভিজিয়ে রাখুন। নীচের দিকে এবং খাঁজে থাকা কোনও ময়লা পরিষ্কার করতে একটি টুথব্রাশ বা অন্য কোনও ছোটো নরম কোনও ব্রাশ ব্যবহার করুন। এরপর ধোয়া হয়ে গেলে অবশ্যই নরম কোনও কাপড় দিয়ে মুছে এবং ভালোভাবে শুকিয়ে নিয়ে বক্সে তুলে রাখুন। এরফলে আপনার মূল্যবান হিরের গয়না ঝকঝকে থাকবে।
৫) হিরের গয়নার প্রপার হ্যান্ডলিংঃ হিরের মতো বিরল ও মূল্যবান রত্নকে সর্বদা যত্ন সহকারে সংরক্ষণ করতে হবে। হিরের উপর বারবার আঙুল দেবেন না। কারণ, আপনার হাতের আঙুলে থাকা নানারকম ধুলোময়লা কিংবা ক্ষতিকারক পদার্থ হিরের গায়ে লাগলে, হিরের স্বাভাবিক সৌন্দর্য নষ্ট হতে পারে। আর আপনি যখন আপনার হিরের আংটিটি খুলে ফেলবেন, তখন একটা নরম কাপড় দিয়ে হালকা ভাবে মুছে নিয়ে এবং নরম কাপড়ে মুড়িয়ে একটা বক্সে পৃথক ভাবে রাখুন।