কিছু কিছু নারী ঈশ্বরদত্ত সৌন্দর্যের কারণে দীর্ঘদিন যৌবনকে অটুট রাখতে সক্ষম হন। তাঁদের ত্বকের কোমলতা, হাড়ের গঠন প্রাকৃতিকভাবে পারফেক্ট। এছাড়াও দৈনন্দিনের জীবনশৈলী, ব্যক্তিগত ডিসিপ্লিন সৌন্দর্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।
হালফিল ব্যস্ততাময় জীবনে সময় নেই মা-ঠাকুমার পদ্ধতিতে রূপচর্চা করার। এখন ইন্সট্যান্ট মেক-আপ-এর যুগ।Tricks of festive make-up হল, চটজলদি মেক-আপে চটকদার সুন্দরী হয়ে ওঠা৷এটাই এই সময়ের ইষ্টমন্ত্র। চটজলদি মেক-আপে খুঁত ঢেকে ফেলার কৌশল।সামনেই পুজো৷ ধৈর্য ধরে কয়েকটি বেসিক স্টেপ্স ফলো করলে, সুফল পাবেন নিশ্চিত। জেনে নিন কয়েকটি Instant make-up tricks যা চটপট খুঁত ঢেকে আপনাকে লাবণ্যময়ী করে তুলবে।
চিকন ত্বক
ছবি আঁকার আগে যেমন প্রাইমারের পরত চড়িয়ে, ক্যানভাসটিকে তুলি বোলানোর যোগ্য করে তোলা হয়— সেই একই পদ্ধতি অবলম্বন করুন আপনার ত্বকের বেলাতেও। অর্থাৎ মেক-আপের আগে ত্বক-কে প্রস্তুত করে নেওয়া দরকার। তাই শুরুতেই কেয়ার নেওয়া উচিত যাতে মুখের ত্বকের মৃত কোশ ঝরিয়ে ফেলা যায়। এর ফলে মুখের রঙে একটা সামঞ্জস্য এসে যাবে। বাড়িতেই একটা ওটমিলের স্ক্রাব তৈরি করে নিন। একদিন অন্তর স্ক্রাব করুন। মুখের ত্বকে সমানভাবে ওটমিল পেস্ট লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে হাত দিয়ে ঘষে তুলে নিন, মুখের ত্বক লাবণ্যে তরতাজা হয়ে উঠবে।
হরিণ চোখ
চোখ শুধু মনের জানলাই নয়, তা সৌন্দর্যের দেউড়িও বটে। তাই আপনার সৌন্দর্যকে যদি অপরের দৃষ্টিগোচর করতে হয় তাহলে সবচেয়ে আগে সুন্দর করে তুলুন নিজের দুটি চোখ। চোখ ফোলা অবস্থায় আই মেক-আপ করবেন না, তাতে আরও বিসদৃশ লাগবে। এক্ষেত্রে শুধু হালকা কাজলের রেখা টানুন। কিন্তু যদি চোখ মেক-আপের অনুকূল পরিস্থিতিতে থাকে, তাহলে মেক-আপ শুরুর আগে একটি তুলোর প্যাড শশার রসে ভিজিয়ে, বোজা চোখের উপর রেখে রিল্যাক্স করুন। ঠান্ডা চায়ের লিকারে তুলো ডুবিয়েও চোখের উপর রাখতে পারেন।
এবার আপনার চোখের উপযোগী মেক-আপ বাছার পালা। আইশ্যাডোর নির্বাচন করার সময় এমন শেড-ই বেছে নিন যা আপনার চোখের ভিতরের সাদা-কে আরও উজ্জ্বল করে। একই সঙ্গে খেয়াল রাখুন আইশ্যাডো যেন আপনার পোশাকটিকে কমপ্লিমেন্ট করে। চোখের মেক-আপ যেন ওভার ডু করবেন না। তাহলে গোটা সাজটাই মাটি।
মোহিনী আঁখিপল্লব
চোখের আকর্ষণ অনেক গুন বেড়ে যায় যদি আঁখিপল্লব হয় ঘন এবং দীর্ঘ। অবশ্য এ যুগে এমন মোহিনী আঁখিপল্লব যে-কেউই পেতে পারেন অল্প আয়াসেই। বাজারে পাওয়া যায় কৃত্রিম আইল্যাশ যা চোখের উপর লাগিয়ে নিলেই চোখের ভোল যাবে পালটে। তবে খেয়াল রাখবেন এটি যেন অত্যন্ত ভালো গুণমানের হয়, কারণ আইল্যাশ-এ লাগানো গ্লু-টি চোখের ত্বকের উপর সরাসরি আটকে থাকে। র্যাশ বা ইনফেকশন এড়াতে তাই কোনও ভালো কোম্পানির আইল্যাশ-ই ব্যবহার করুন। আইল্যাশ লাগিয়ে কার্লারের সাহায্যে তা বেন্ড করে নিন। তারপর ডার্ক ব্লু লাইনার আর মাসকারা ব্যবহার করে চোখ দুটি সাজিয়ে তুলুন।
লেবু–কোয়া ঠোঁট
অ্যাঞ্জেলিনা জোলি প্রমাণ করেছেন আন্তর্জাতিক স্তরে। ঐশ্বর্য রাই বচ্চন প্রমাণ করেছেন ভারতে। এবার আপনার পালা। এই দুই সুন্দরীর মতো লেবু কোয়ার মতো ঠোঁট যে আপনার সৌন্দর্যেরও কতটা প্লাস পয়েন্ট, তা নিজেই পরখ করে নিন। ঐশ্বর্যের ঈষৎ ফোলা ঠোঁটের সেক্স অ্যাপিল মারাত্মক। বাস্তবে আপনার ঠোঁট যদি তেমন আকারের না-ও হয়, তবু তাকে লিপস্টিকের সাহায্যে ওই ধরনের আকার দেওয়া সম্ভব। একটু মোটা করে লিপ লাইন করে, তুলনামূলক হালকা শেড-এ ঠোঁট ভরে নিন, ব্যস আপনি নিমেষে আকর্ষণীয়া হয়ে উঠবেন।
গাল–গুলাবি
স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ফরসা লাবণ্যময় ত্বক যাদের প্লাস পয়েন্ট, তাদের গালে ন্যাচারাল পিংক টোন থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা বলছি তাদের কথা, রূপসী হয়ে জন্মানো যাদের ভাগ্যে ঘটেনি। তাদের জন্য রয়েছে ব্লাশার। ক্রিম ব্লাশারই হোক বা পাউডার ব্লাশার, গাল-দুটি আভা-যুক্ত করতে সঠিক পরিমাণের ব্লাশার, সঠিক জায়গায় ব্যবহার করাটা অত্যন্ত প্রয়োজন।
ব্লাশার লাগানোর সময় চওড়া করে হাসুন যাতে আপনার গালের ফোলা অংশটি স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করতে পারেন। ব্রাশটা হেয়ারলাইন অবধি টেনে ব্লাশারের পরত বোলান। সবশেষে একটু শিমার লাগিয়ে নিন, যাতে আপনার ত্বকের লাবণ্য ঠিকরে বেরোয়।
ফাইনাল টাচ আপ
মেক-আপ যতটা ন্যাচারাল হয়, ততই ভালো দেখাবে। মেক-আপের মূল উদ্দেশ্যটাই হল ‘ন্যুড লুক’। অর্থাৎ মেক-আপের পর ত্বক দেখে মনে হবে ওটাই ত্বকের স্বাভাবিক গ্লো। এটা আপনি যত সফলভাবে করবেন, সুন্দরী হিসাবে এবং নিখুঁত মেক-আপ শিল্পী হিসাবে ততটাই আপনার সুখ্যাতি বাড়বে।
তবে এব্যাপারেও একটা ছোট্ট কৌশল করতে পারেন। সেটা হল মেক-আপ শেষ হয়ে যাওয়ার পর ফেস-মিস্ট লাগিয়ে নেওয়া। এটা আপনার মেক-আপকে একটা স্নিগ্ধ ও ন্যাচরাল ফিনিশ দেবে, এবং মেক-আপ দীর্ঘক্ষণ তরতাজা থাকবে।