কলকাতা ও দেশের আরও কয়েকটি রাজ্যে ডেঙ্গু জ্বর ব্যাপক ভাবে বাড়ছে। নতুন নতুন স্ট্রেন প্রভাব ফেলছে। ডেঙ্গু জ্বরের বৃদ্ধি অত্যন্ত উদ্বেগজনক, কারণ রোগীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অসুস্থতা এবং মৃত্যু হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে ছোটোদের উপর এবং তরুণ-তরুণীদের উপর। ডেঙ্গুর সময় পেটের সমস্যা খুবই সাধারণ। প্রায়ই পেটে ব্যথা, বমি এবং যকৃতের সমস্যা দেখা দেয়। এএমআরআই হাসপাতালের কনসালটেন্ট জিআই সার্জন, ল্যাপারোস্কোপি এবং অনকো-সার্জন ডা. সঞ্জয় মন্ডল এই বিষয়ে জানিয়েছেন বিস্তারিত।

ডেঙ্গু জ্বরের সময় লিভারের কার্যকারিতা বিঘ্নিত হতে পারে। অনেক লোক লিভারের কার্যকারিতার এই বিপর্যয়কে হেপাটাইটিস বলে মনে করেন, তবে এটি অবশ্যই উল্লেখ করা উচিত যে, মশার কামড়ে ডেঙ্গু হয়, অন্য কারণে নয়।

ডেঙ্গু থেকে মুক্তি পাওয়ার পর চুল পড়া, হজমের সমস্যা ছাড়াও,  ডিসপেপসিয়া, ফোলা ইত্যাদি অনেক সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও খিদে কমে যাওয়া এবং এরফলে শেষ পর্যন্ত ওজন হ্রাসের সমস্যা তৈরি হয়।

চুল পড়ার সমস্যা ১-২ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। একইভাবে হজমের সমস্যাও একই রকম বা তার বেশি সময় ধরে চলতে পারে।

Dengue and doctor's advice
Dr. Sanjoy Mandal

 

তাই, ডেঙ্গু পরবর্তী সময়ে অন্তত তিন মাস তৈলাক্ত এবং মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন এবং সেইসঙ্গে স্বাস্থ্যকর খাবারে খান। কারণ এই সময় খাদ্য-ভারসাম্য প্রয়োজন। আর এই খাদ্য-ভারসাম্য হল– সঠিক সময়ে খাওয়া এবং অল্প পরিমাণে খাওয়া। ফল, শাকসবজি এবং স্যালাড পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত। ডিম, মাংস, মাছ, সয়াবিন ও ডালের মতো প্রোটিনও পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে, তবে তেল ছাড়া। প্রাতঃরাশ সবচেয়ে ভারী হওয়া উচিত। তারপর দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবার সবচেয়ে হালকা হওয়া উচিত।

তৈলাক্ত ও মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। ভাজাভুজি খাবার এবং ঠাণ্ডা পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে। উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার স্বল্প মেয়াদে কিছুটা গ্রহণযোগ্য হলেও, দীর্ঘমেয়াদে এড়িয়ে যাওয়া উচিত। যে খাবারগুলি এড়ানো উচিত তা হল—ঠাণ্ডা পানীয়, চকোলেট, ডেজার্ট, পেস্ট্রি, মিষ্টি, পোড়া তেলে ভাজা খাবার, চাউমিন, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, আইসক্রিম ইত্যাদি। আপনি যদি স্যালাড খান, তাহলে সস এবং মশলা যোগ করা এড়িয়ে চলুন।

সুস্থ হওয়ার পরপরই ভারী ব্যায়াম এবং হার্ড-ওয়ার্ক এড়িয়ে চলুন।

প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন (প্রতিদিন অন্তত ৩ থেকে ৪ লিটার)।  অ্যালকোহল এবং ধূমপান এড়িয়ে চলুন। স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন এবং রাতে ঘুমোন অন্তত আট ঘন্টা।

আর ডেঙ্গু থেকে সেরে ওঠার পর সঙ্গে সঙ্গে কাজে যোগ দেবেন না, কিছুটা সময় ছুটি নিয়ে বিশ্রাম নিন।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...