আপনি কি নিয়মিত Morning walk করেন? নাকি প্রাতর্ভ্রমণের কথা উঠলেই কোনও না কোনও অজুহাতে তা খারিজ করে দেন? আসলে মহিলাদের স্বাভাবিক প্রবণতা হল মর্নিং ওয়াক এড়িয়ে যাওয়া। অথচ বহু মহিলাই জানেন না যে, এর মধ্যেই কিন্তু লুকিয়ে আছে সৌন্দর্য্য ও সুস্বাস্থ্য বহাল রাখার টোটকা।
আসলে মর্নিং ওয়াক করব এই প্রতিজ্ঞা না করলে আপনি কিছুতেই এর শুরুটা করতে পারবেন না। অথচ ” চলাই জীবন, থেমে যাওয়াই মরণ” — এই গানের কলির সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। তাই হাঁটতেই হবে। আপনার পা দু’টির বিশ্রামও যেমন প্রযোজন, তেমন হাঁটাও একান্ত জরুরি।
আজকের এই স্ট্রেস-যুক্ত জীবনশৈলীতে আমরা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি ডেকে আনি। আমরা নিজেদের হাত পায়ের পরিবর্তে, বেশি নির্ভর করি যন্ত্রের উপর। এই যন্ত্র নির্ভর জীবনে আমরা নিজেদের শরীরের কলকবজাগুলিকে পরিশ্রম না করিয়ে সেগুলিকে দুর্বল করে ফেলছি। ফলত পড়ে থাকা মেশিনের যেমন পার্টস খারাপ হয়ে যায়, আমাদের শরীরেরও তাই।
অবশ্যই যা করণীয়
মনে রাখবেন আপনার সৌন্দর্য্যের অনেকটাই কিন্তু নির্ভর করে আপনার শারীরিক Fitness-এর উপর। আজকাল ৪০ পার হলেই শরীরে কোনও না কোনও রোগ বাসা বাঁধে। হাইপারটেনশন, হার্টের সমস্যা এমন নানা রোগে মানুষ জর্জরিত। পুরুষ-নারী নির্বিশেষে এইসব রোগের শিকার। একটু নিজের ব্যাপারে অসতর্ক হলে আর অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করলেই আপনি এইসব রোগের কবলে পড়বেন।
ডায়াবেটিজ, ব্লাডপ্রেশার, থাইরয়েড, হাইপার টেনশন প্রভৃতি রোগ ধরা পড়লেই, সব চিকিৎসকই হাঁটার পরামর্শ দেন রোগীকে। আসলে এটাই সবচেয়ে সুলভ ও সহজ উপায় নিজেকে সুস্থ রাখার। কথায় বলে প্রাতর্ভ্রমণের মাধ্যমেই আমরা সারাদিন পরিশ্রম করার এনার্জি সংগ্রহ করে ফেলতে পারি। তবে যদি একান্তই আপনার পক্ষে মর্নিং ওয়াক-এ বেরোনো অসম্ভব হয়, তাহলে বিকেলটাকেই বেছে নিন হাঁটার জন্য। শুধু এটুকু খেয়াল রাখবেন যে, দ্বিপ্রাহরিক খাওয়া আর হাঁটতে বেরোনোর সময়ের মধ্যে যেন ৩-৪ ঘন্টার ব্যবধান অবশ্যই থাকে।
হাঁটার সময় কী করবেন?
- হাঁটতে বেরোনোর সময়টা একই রাখুন প্রতিদিন। একটা রুটিন মেনটেইন করলে তা স্বাস্থ্যের জন্যও যেমন ভালো, তেমন নিত্যসঙ্গীও পেয়ে যাবেন
- হাঁটার সময় আরামদায়ক জুতো অবশ্যই পরুন
- গায়ে পরার পোশাকটিও যেন যথাসম্ভব আরামদায়ক হয়
- হাঁটার জন্য কোনও সবুজ গাছগাছালি ভরা জায়গারই নির্বাচন করুন। সবুজে ঢাকা পার্ক আপনাকে হাঁটার স্ফূর্তি জোগাবে
- হাঁটার সময় গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নিন
- যদি অনেকটা পথ হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, তবে সঙ্গে অবশ্যই জলের বোতল রাখুন
- হাঁটার সময় পেট খালি রাখাই ভালো
- শীতের সময় অবশ্যই গরম কাপড় গায়ে দিয়ে হাঁটুন
- সমস্ত কাজ সেরে নিশ্চিন্তে হাঁটুন, মাথায় অসম্পূর্ণ কাজের চিন্তা নিয়ে হাঁটবেন না
বিশেষ সতর্কতা
- প্রথম দিনেই অনেকটা পথ হাঁটতে যাবেন না, এতে পরদিন উৎসাহ হ্রাস পাবে
- হাঁটতে না যাওয়ার অজুহাত খুঁজবেন না
- হাঁটার সময় গল্প করবেন না
- হাঁটার পোশাক অতিরিক্ত ঢিলে, কিংবা অতিরিক্ত টাইট না হওয়াই ভালো
- হাঁটার জন্য এমন জায়গা বাছবেন না যেখানে বারবার বাঁক আছে বা মোড় ক্রস করতে হয়। জায়গাটা সমতল এবং টানা অনেকটা রাস্তা হওয়াই ভালো
- হাঁটার সময় মুখ দিয়ে নিশ্বাস নেবেন না
- ইয়ারফোনের ব্যবহার করতে পারেন কিন্তু আওয়াজ কম রাখুন
- শারীরিক চোট আঘাত থাকা অবস্থায় হাঁটতে বেরোবেন না।