হুমা কুরেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছেন ‘গ্যাংস অফ ওয়াসিপুর’ ছবিটি মুক্তির পর থেকে। চোখে পড়ার মতো অভিনয় করেছেন ডেড় ইশকিয়াঁ, ডি-ডে, র, এক থি ডায়ান প্রভৃতি ছবিতে। তাঁর অভিনয়ের অ্যালবামে রয়েছে তৃষ্ণা, লভ শুভ থে চিকেন খুরানা, শর্টস, বদলাপু্‌ হাইওয়ে, জলি এলএলবি টু, বেল বটম, ডাবল এক্স এল প্রভৃতি। আর এই হুমা যেমন স্বভাবে সোজাসাপটা, অভিনয়েও তেমনই সাবলীল। তাই তিনি খুব কম সময়ের মধ্যে পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে পেরেছেন বলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে।

ছোটোবেলা থেকেই অভিনয়ের ইচ্ছে ছিল হুমার, তাই তিনি বড়ো হয়ে যোগ দিয়েছিলেন দিল্লির এক থিয়েটার গ্রুপ-এ। আর এই থিয়েটার ব্যাকগ্রাউন্ড থাকার কারণে, খুব সহজেই তিনি কাজ পেয়ে যান বিজ্ঞাপন ছবিতে। ‘গ্যাংস অফ ওয়াসিপুর’ ছবিতেও এইভাবেই অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। সুন্দরী এবং প্রতিভাময়ী এই অভিনেত্রীর জন্ম দিল্লির এক মুসলিম পরিবারে। হুমার বাবা এক রেস্তোরাঁর মালিক। মা সাধারণ গৃহবধূ। অভিনয়ের জন্য হুমাকে ওর বাবা-মা দু’জনেই প্রেরণা জুগিয়েছেন। তবে দিল্লিতে নয়, এখন হুমা থাকেন মুম্বইয়ে তাঁর অভিনেতা ভাই সাকিবের সঙ্গে। অভিনয়ের জন্য ভীষণ ব্যস্ত এই অভিনেত্রীর সঙ্গে সম্প্রতি নানা বিষয় নিয়ে কথা হল কাজের ফাঁকে।

সাফল্য পাওয়ার জন্য কতটা লড়াই চালাতে হয়েছে আপনাকে?

লড়াই জারি আছে, থাকবেও। আর আমি মনে করি, লড়াই থেকে অনেককিছু শেখা যায়। তাই আমি এভাবেই সারাজীবন শিখতে চাই। কারণ, শিক্ষা থেমে গেলে বিকাশও থেমে যাবে এবং বিকাশ থেমে গেলে কেরিয়ার গড়ার উদ্দমও ব্যাহত হবে।

আপনার ভক্তদের জন্য নিজের সম্পর্কে কী ব্যাখ্যা দেবেন?

আমি খুব ইমোশনাল । তাই সবার ভালোবাসাই আমার কাছে সবচেয়ে বড়ো প্রেরণা। আর আমি বিভিন্নরকম চরিত্রে অভিনয় করতে পছন্দ করি। জলের মতো সময় এবং জীবনও বহমান। তাই সবসময় হাসি-আনন্দে কাটাতে চাই।

দিল্লি থেকে মুম্বই এসে গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডে টিকে থাকা কতটা মুশকিলের মনে হয়েছে?

প্রথম দিকে মুশকিল ছিল কিন্তু এখন নয়। আমি ভাইয়ের সঙ্গে থাকি, তাই ভাই আমাকে সব ব্যাপারে সাহায্য করে। তাছাড়া সমস্যা হলে আমি নিজেই তা কাটিয়ে ওঠার জন্য মানসিক শক্তি রাখি। বাধা কাটিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য মা-ও আমাকে সাহস জোগান।

কোনও অভিনেত্রীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা আছে আপনার?

কোনও অভিনেত্রী নয়, আমার প্রতিযোগী আমি নিজেই। প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে ভাবি, কী করে আরও ভালো কাজ করব। কারণ, ফিল্‌ম ইন্ডাস্ট্রিতে আমার কোনও গডফাদার নেই।

কোনও সিনিয়র অভিনেতা-অভিনেত্রীর সঙ্গে কাজ করতে ভয় লাগে আপনার?

প্রথমদিকে খুব ভয় হতো। কোনও ভুল হলে বকুনি খাব এমন ভয় হতো কিন্তু তা হয়নি কখনও । হয়তো আমি নিষ্ঠার সঙ্গে কাজটা করি বলেই সবাই আমাকে আন্তরিক ভাবে সাহায্য করেন। তবে, বড়োদের কাছ থেকে আমি অনেককিছু শিখেছি এবং আরও শিখতে চাই।

কোনও অন্তরঙ্গ দৃশ্যে অভিনয়ের সময় আপনি কতটা কমফর্ট ফিল করেন?

চিত্রনাট্যে অন্তরঙ্গ হওয়ার সাবলীল চাহিদা থাকলে, একজন অভিনেত্রী হিসাবে আমি তা করতে বাধ্য। কিন্তু অকারণে বোল্ড সিন চাইলে আমি নিশ্চয়ই তা মানব না। তবে প্রয়োজন থাকলে আমি সানন্দে তা আন্তরিক ভাবেই প্রেজেন্ট করার চেষ্টা করি।

মহিলাদের জন্য শিক্ষা কতটা জরুরি বলে আপনি মনে করেন?

নারী-পুরুষ সবারই শিক্ষার সমান অধিকার রয়েছে। তাছাড়া, শিক্ষা মানুষকে আলোকিত করে, পথ দেখায়। তাই জীবনে সাফল্যলাভের জন্য এবং নিজের অধিকার বুঝে নেওয়ার জন্য, মহিলাদেরও উচ্চশিক্ষা অর্জন করা জরুরি। অতএব, মা-বাবার উচিত, নিজের কন্যাসন্তানকে উচ্চশিক্ষালাভের সুযোগ করে দেওয়া।

জীবনে কখনও অবসাদে ভুগেছেন?

আমি অবসাদে আক্রান্ত হই না। পরিশ্রম এবং নিষ্ঠা সহকারে কাজ করি, অসফল হলে ভবিষ্যতে আরও ভালো কাজ করার সংকল্প করি। করোনা অতিমারীর সময়ও অবসাদকে কাছাকাছি আস তে দিইনি।

আপনি কতটা ফ্যাশনেবল?

আমি ভীষণ ফ্যাশনেবল। পরিবেশ, পরিস্থিতি বুঝে সাজগোজ করি। কারণ, আমি জানি, ফ্যাশন ব্যক্তিত্বকে প্রভাবিত করে।

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...