শিক্ষক যেমন শিক্ষার্থীর শুভাকাঙ্ক্ষী, তেমনি শিক্ষক প্রত্যাশা করেন তাঁর ছাত্ররাও তাঁকে ভালোবাসবে এবং তাঁর প্রতি অনুগত থাকবে। একজন আদর্শ শিক্ষক হবেন ছাত্রদের পথপ্রদর্শক। Teacher শিক্ষার্থীর বন্ধু হবেন ঠিকই কিন্তু শিক্ষার্থীরা যা খুশি তা করবে সেটা কোনও শিক্ষকই মেনে নেবেন না। ছাত্ররা তাদের মনের কথা খুলে বলতে পারবে এবং শিক্ষক তা শুনে বন্ধুর মতো সুপরামর্শ দেবেন। শিক্ষককে, ছাত্র সম্মান না করলে প্রকৃত জ্ঞান লাভ করতে পারবে না।
শিক্ষককে সবসময় শিক্ষার্থীদের ক্লাসের বাইরে কথা বলার সময় দিতে হবে। বর্তমানে প্রতিটি পরিবারেই কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাব, মোবাইল ফোন অপরিহার্য উপকরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এসব প্রযুক্তি ব্যবহারে শিক্ষক ও অভিভাবকদের নিয়ন্ত্রণ থাকা আবশ্যক। খেয়াল রাখতে হবে, এগুলোর প্রতি যেন শিক্ষার্থীদের আসক্তি তৈরি না হয়। জন্মের পর একটি শিশুর শিক্ষা গ্রহণের প্রথম পাঠ শুরু হয় তার পরিবারে। অতঃপর তার শিক্ষাদানের মহান দায়িত্ব অর্পিত হয় শিক্ষকের ওপর। এই শিক্ষাদান ও গ্রহণের মধ্য দিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে গড়ে ওঠে সম্পর্কের এক অটুট বন্ধন। শিশুদের সঙ্গে শিক্ষকের সম্পর্ক অত্যন্ত, সম্মানজনক, বন্ধুত্বপূর্ণ ও আনন্দদায়ক হওয়া আবশ্যক।
বর্তমান সময়ে শিক্ষকদের মর্যাদার জায়গাটা আগের তুলনায় অনেকটাই হারিয়ে গেছে তার অন্যতম প্রধান কারণ হল— মানুষের সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়। Teacher এবং ছাত্রের মধ্যে নীতি-নৈতিকতা ও মূল্যবোধের চর্চা কমে গেছে। শিক্ষা এখন আর জ্ঞান আহরণের বিষয় নেই। শিক্ষা হয়ে গেছে ভালো চাকরি পাওয়ার সিঁড়ি। শিক্ষা নিয়েও হচ্ছে বাণিজ্যিকীকরণ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় শিক্ষা বিতরণ না করে শিক্ষকরা প্রাইভেটে কোচিং ক্লাস নিতে অনেক বেশি আগ্রহী এর কারণ দ্বিগুন অর্থলোভ।
আগের ছাত্র-Teacher সম্পর্ক আর বর্তমান সময়ের ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের মধ্যে ব্যবধান অনেক। শিক্ষকতা শুধু একটি পেশা নয়, ব্রতও বটে। উপদেশদাতা যদি নিজেই বিশ্বস্ততার মধ্যে না থাকেন অর্থাৎ শিক্ষক যা উপদেশ দেন তা যদি তিনি নিজেই পালন না করেন বা নির্ভুল না পড়ান তাহলে তাঁর শিক্ষাদান কার্যকর হয় না। শিক্ষকরাই পারেন বিশ্বমানের অর্জিত শিক্ষা, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা দিয়ে শিক্ষার্থীকে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে। তাই ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক হওয়া উচিত অভিভাবকতুল্য ও বন্ধুসুলভ। শিক্ষক হবেন ছাত্রের গর্ব আর ছাত্র হবে শিক্ষকের অহংকার।
শিক্ষকতা পেশা সামাজিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার দাবি রাখলেও অবহেলা, অযত্ন ও অবজ্ঞার ফলে এই পেশা ক্রমেই মেধাবীদের আকর্ষণ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। একজন ভালো শিক্ষক, একজন ছাত্র ও তার অভিভাবকই পারে সামাজিক জীবনে আমূল পরিবর্তন আনতে। তাই ছাত্র-Teacher সম্পর্কের ভিত্তি মজবুত ও দৃঢ় হওয়া আবশ্যক। স্নেহ ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা-সম্মানে যে-সম্পর্ক তৈরি হয় সেই সম্পর্ক যেন সবসময় অটুট থাকে। ছাত্র-শিক্ষক ও অভিভাবকের পবিত্র সম্পর্ক অটুট রাখা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একান্তই মঙ্গলজনক।