শীতের রুক্ষতা কাটিয়ে উঠে ধরে রাখুন ত্বকের লাবণ্য। উইন্টার ফ্রেশ লুক বজায় রাখতে ব্যবহার করুন Face Mask। এই সময়ে বাতাসে আর্দ্রতার অভাবে পরিবেশ হয়ে ওঠে শুষ্ক যার সরাসরি প্রভাব পড়ে ত্বকের উপরে। সুতরাং শীতকালে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ধরে রাখতে দরকার, ত্বকের বিশেষ যত্ন নেওয়ার।

ত্বকের পরিচর্যায় ফেস মাস্ক-এর চাহিদা দিনে দিনে বাড়ছে। চর্মরোগবিশেষজ্ঞরা ফেস মাস্ক ব্যবহারের উপর জোর দিয়ে থাকেন কারণ এটি ত্বকের জন্য খুবই লাভদায়ক। ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করা থেকে আটকে থাকা রোমছিদ্র খুলতেও সাহায্য করে মাস্ক। বাজারে পাওয়া জনপ্রিয় কিছু মাস্কের মধ্যে রয়েছে জেল, শিট, ক্লে ও ক্রিম মাস্ক। এর মধ্যে এনজাইম, Anti-Oxidant ও অন্যান্য সক্রিয় উপাদান থাকে। স্কিন স্পেশালিস্ট-রা সপ্তাহে একদিন ফেস মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

ফেস মাস্ক ব্যবহার করেই ধরে রাখতে পারবেন ত্বকের গ্লো। আগে আপনাকে জানতে হবে এর মধ্যে কোন ফেস মাস্কটি আপনার জন্য প্রযোজ্য।

চারকোল মাস্ক

এখন ট্রেন্ড চলছে চারকোল Face Mask-এর। এটির বিশেষত্ব হল ত্বকের রোমছিদ্র পরিষ্কার করার সঙ্গে সঙ্গে এটি ব্ল্যাকহেড্স-এর সমস্যাও রোধ করতে সাহায্য করে। চারকোলে থাকা উপাদান ত্বকের উপর জমে থাকা ধুলোময়লা পরিষ্কার করে ত্বককে দূষণমুক্ত রাখার কাজ করে। অ্যাকনের সমস্যা রোধ করতেও চারকোল মাস্ক সাহায্য করে। ত্বকের মৃত কোশ তুলে ফেলে ত্বকের অতিরিক্ত অয়েল উৎপাদন রোধ করে মাস্কটি, ফলে ত্বকের স্বাভাবিক গ্লো ফিরে আসে। ত্বক লাগে পরিষ্কার এবং গ্লোয়িং।

ব্যবহারের নিয়ম: সবথেকে আগে ত্বক পরিষ্কার করে ভালো করে মুখে মাস্ক অ্যাপ্লাই করতে হবে। ১৫ মিনিট মাস্কটি মুখে লাগিয়ে অপেক্ষা করতে হবে এবং তারপর মুখ ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। হালকা হাতে মুখে মাসাজ করে মুখ পরিষ্কার করতে হবে এবং তারপর ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নেওয়াটা বাঞ্ছনীয়। সঙ্গে সঙ্গে আপনি নিজেই পার্থক্য বুঝতে পারবেন।

ওটমিল মাস্ক

ত্বক যদি অতিরিক্ত সংবদেনশীল হয় তাহলে ত্বকে যে-কোনও প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে অনেকবার ভাবতে হয়। এর কারণ সংবেদনশীল ত্বকে যে- কোনও প্রোডাক্ট লাগালে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে।

কিন্তু শীতের রুক্ষতা কাটিয়ে উঠে শুষ্ক ত্বকে চট্‌লদি গ্লো পেতে হলে ওটমিল মাস্ক খুবই কার্যকরী বিশেষ করে যাদের ত্বক সংবেদনশীল। এতে আছে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটারি এবং অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান। এগুলি ত্বককে ক্লিন এবং সফ্ট করে তুলতে সহায়তা করে। ত্বকের নিজেকে সারিয়ে তোলার ক্ষমতাকে বাড়াতেও সাহায্য করে এই মাস্কটি।

ব্যবহারের নিয়ম: ত্বক পরিষ্কার করে তবেই মাস্কটি ত্বকে লাগান। মুখে অন্ততপক্ষে ১৫ মিনিট লাগিয়ে অপেক্ষা করুন। এরপর পরিষ্কার জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এর ফলে মুখের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে এবং ত্বকের কোনওরকম ক্ষতি হওয়ারও সম্ভাবনা নেই। সর্বত্র পাওয়া যায় এই মাস্কটি।

পাম্পকিন হানি মাস্ক

চটজলদি গ্লো পেতে ব্যবহার করুন পাম্পকিন হানি মাস্ক। এটি তৎক্ষণাৎ ত্বককে দেয় রিফ্রেশ এবং গ্লোয়িং লুক। মধু, হেলদি সেল্সকে প্রমোট করে ত্বককে ইয়ং বানাবার কাজ করে। পাম্পকিন অয়েলে ভিটামিনস, মিনারেলস এবং ওমেগার উপস্থিতি ড্যামেজ ত্বককে সারিয়ে তুলতে সহায়তা করে এবং এজিং প্রসেস-কে স্লো করতেও সাহায্য করে।

এটি নিস্তেজ ত্বককে পুনরায় গ্লোয়িং বানাবার সঙ্গে সঙ্গে মসৃণ বানাবারও কাজ করে।

ব্যবহারের নিয়ম: এটি ব্যবহার করা খুবই সোজা। মুখে ভলো করে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট রেখে দিন। তারপর জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন।

খেয়াল রাখুন

যখনই নিজের জন্য ফেস মাস্ক কিনবেন তখনই নিজের ত্বকের সম্পর্কে ভালো করে জেনে যান। আলাদা আলাদা ত্বকের জন্য আলাদা আলাদা ফেস মাস্ক তৈরি করা হয়। নিজের ত্বকের ধরন জেনে যদি ফেস মাস্ক কেনেন তাহলে তার ফলাফল লাভদায়ক হবে এবং তাতে ত্বকেরও কোনও ক্ষতি হবে না। মাস্ক কেনার সময় সবসময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে মাস্ক-এ প্যারাবেনস, সুগন্ধি, অ্যালকোহল ডাই ইত্যাদির ব্যবহার না হয়ে থাকে। এগুলি ত্বকের অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। এটাও মনে রাখবেন দীর্ঘ সময় ধরে ত্বকে মাস্ক লাগিয়ে রেখে দেবেন না। এতে ত্বকের ক্ষতি হওয়ারই সম্ভাবনা বেশি। ১০-১৫ মিনিটের বেশি ত্বকে মাস্ক লাগিয়ে রাখা বাঞ্ছনীয় নয়।

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...