চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য অনেক সময় আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রচার চালাতে হয় আমাদের দেশে। অথচ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মানুষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে অনেক বেশি সচেতন। আর আমাদের দেশে শুধু পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষ স্বাভাবিক ভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখেন তাদের চারপাশ। কিন্তু এই সচেতনতা কিংবা স্বভাব দেশের আপামর জনগণের মধ্যে নেই। বরং দেখা যায়, রাজনৈতিক পোস্টারে নোংরা হয়ে আছে গ্রাম এবং শহরের অনেক দেয়াল। অবশ্য শুধু রাজনৈতিক পোস্টার-ই নয়, যত্রতত্র ময়লা ফেলার প্রবৃত্তি আছে অনেক মানুষেরই। রাজধানী দিল্লিতেও এই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি এক সময় খুব জোরদার ছিল কিন্তু এখন শুধু সচেতনতার পোস্টারই চোখে পড়ে।

আসলে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা কিংবা রাখার বিষয়টি আজও অনেকের মন-মস্তিষ্কে বাসা বাঁধেনি ঠিক ভাবে। তাই, আজও যত্রতত্র নোংরা ফেলা হয় নির্দ্বিধায়। শুধু তাই নয়, ময়লা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা করে দিলেও, অনেকে সময়-সুযোগ বুঝে এখানে-ওখানে ময়লা ছুঁড়ে দেন নিঃসংকোচে।

অবশ্য শুধু সাধারণ মানুষকেই দোষ দিলে চলবে না, কিছু জায়গায় ময়লা ফেলার সঠিক ব্যবস্থাও থাকে না কিংবা বলা যায় পরিকল্পনার অভাবে বৈজ্ঞানিক উপায়ে সর্বত্র পরিষ্কার রাখা হয় না। অনেক জায়গায় দেখা যায় ভ্যাটে এত ময়লা জমে যায় যে, তা রাস্তার অর্ধেক অংশ গ্রাস করে নেয় এবং দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে। তাই, শুধু কিছু সংখ্যক মানুষ চারপাশ পরিষ্কার রাখতে চাইলে কখনও সর্বত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব নয়। কারণ, যাদের মস্তিষ্কে পরিষ্কার রাখার বিষয়টাই নেই, তারা তো পরিষ্কার জায়গাটাকেও ময়লা করে তুলবে স্বভাবতই।

মনে রাখতে হবে, স্বচ্ছ ভারত গড়ার স্বপ্ন তখনই সঠিক ভাবে পূরণ হবে, যখন প্রত্যেক ভারতবাসীর মন-মস্তিষ্কে চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ইচ্ছে জাগবে। দুঃখের বিষয় হল এই যে, এখনও অনেকে মনে করেন, ঝাড়ু হাতে নিলে কিংবা ময়লা সরালে তার আভিজাত্য কমে যাবে। কিন্তু ভেবে দেখুন, সমস্ত ফার্স্ট ওয়ার্ল্ড কান্ট্রি-তে কোনও কাজকে ছোটো মনে করেন না কেউ।

যদি সপ্তাহে অন্তত একদিন ঝাড়ু হাতে নিতে হয়, তাহলে তাতে লজ্জার পরিবর্তে গর্ব অনুভব করা উচিত। আর সবচেয়ে ভালো হয় যদি ছুটির দিন সমবেত ভাবে নিজেদের অঞ্চল পরিষ্কার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কারণ, এই উদ্যোগ সবাই নিলে, কেউ আর যত্রতত্র নোংরা ফেলার সাহস পাবে না কিংবা নোংরা করার মানসিকতার পরিবর্তন হবেই।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...