আমি ২৫ বছর বয়সি কর্মরতা। শুনেছি এই সময় চোখের সংক্রমণ হওয়ার বিপদ অনেক বেড়ে যায়। এটা কি ঠিক? তাহলে সংক্রমণ থেকে বাঁচতে কী করা আবশ্যক?
এই সময় সত্যিই চোখে সংক্রমণ হওয়ার ভয় বেশি থাকে। কারণ, এই সময় নানারকম ব্যাক্টেরিয়া জন্ম নেয় এবং পোকামাকড়ের সমস্যাও বাড়ে। বাতাসে অতিরিক্ত আর্দ্রতা এবং ব্যাক্টেরিয়ার কারণে সংক্রমণ হওয়ার ভয় সবসময় থাকে। এর জন্য ব্যক্তিগত ভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা খুব প্রয়োজন। চোখে হাত দেবেন না, চোখ রগড়াবেন না। সারা দিনে তিন থেকে চারবার চোখে পরিষ্কার ঠান্ডা জল দিয়ে ঝাপটা মারুন। এতে সংক্রমণ হওয়ার ভয় অনেক কম হবে। যেখানে জল জমে রয়েছে সেই সব জায়গা এড়িয়ে চলুন। বর্ষার জল চোখের ভিতর যাতে না ঢোকে খেয়াল রাখবেন।
আমার বয়স ২১। এই সময় কতরকম চোখের অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে? এগুলি রোধ করার কোনও উপায় আছে কি?
এই সময় চোখের সংক্রমণ খুবই সাংঘাতিক আকার ধারণ করতে পারে। এর মধ্যে সবথেকে কমন হল কনজাংটিভাইটিস, আই ফ্লু, আঞ্জনি এবং কর্নিয়াল আলসার। এগুলো রোধ করার উপায় হল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। ঠান্ডা জল দিয়ে তিন চারবার চোখ ভালো করে ধুতে হবে। ঘুম থেকে উঠে, কনট্যাক্ট লেন্স খোলার পর চোখ একেবারেই রগড়াবেন না। এই অভ্যাস কর্নিয়ার স্থায়ী ক্ষতি করতে পারে। পুষ্টিকর খাবার খান, পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন। নিজস্ব জিনিস যেমন তোয়ালে, চশমা, কনট্যাক্ট লেন্স অপরকে ব্যবহার করতে দেবেন না। বাড়ি থেকে বাইরে বেরোলে রোদ চশমা ব্যবহার করতে যেন ভুল না হয় ।
মাঝেমধ্যে আমার চোখ ভীষণ জ্বালা করে। এর থেকে মুক্তির উপায় কি?
সাধারণত গরমকালে চোখ জ্বালা করার সমস্যা হয়ে থাকে। তবে এই সময়ও এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে। চোখ জ্বালা দূর করতে শসার টুকরো কেটে চোখের উপর রাখুন। শসা চোখ ঠান্ডা রাখে। অনেক সময় ময়েশ্চারাইজার থেকেও চোখ জ্বালা করে। আপনি অন্য কোম্পানির ময়েশ্চরাইজার ট্রাই করে দেখতে পারেন। এছাড়াও সারাদিনে দুবার চোখে ড্রপ দিন। চোখের জন্য গোলাপজলও খুব ভালো বিকল্প। সকালে মুখ পরিষ্কার করার পর কাঁচা দুধে তুলো ভিজিয়ে চোখের উপর খানিক্ষণ রেখে দিন। দুধে চোখে সংক্রমণ দূর হয়। এতেও সমস্যা না মিটলে অবশ্যই ডাক্তার দেখান।
আমার স্বামী আর সন্তানকে সারাদিন ল্যাপটপের সামনে বসে কাজ করতে হয়। আমার ভয় হচ্ছে, এতে ওদের চোখে প্রেশার পড়ছে। ফলে চোখ দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। এটা সত্যিই কতটা ক্ষতিকারক এবং এই সমস্যার সমাধান আদৌ কি করা সম্ভব?
কাজের জন্য তো বটেই, বহুলোক এমনিতেও সারাদিন মোবাইল বা ল্যাপটপে কিছু না কিছু দেখতেই থাকে। খুব মনোযোগ সহকারে স্ক্রিনের লেখাগুলো পড়তে হয় ফলে চোখে খুবই প্রেশার পড়ে। দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকে। ড্রাই আই, চোখ থেকে জলপড়া, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, দূরের জিনিস দেখার সমস্যা, চোখের সামনে ধোঁয়াশা, চোখে ব্যথা, জ্বালা করা ইত্যাদি নানা চোখের সমস্যা ধীরে ধীরে দেখা দিতে পারে। আপনার স্বামী এবং সন্তানের যাতে এই সমস্যাগুলো না হয়, তার জন্য ওদের বলবেন কাজ এবং পড়াশোনা শেষ করে সকলের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটাতে। এতে মোবাইল আর ল্যাপটপের ব্যবহার কিছুটা হলেও কমবে। ল্যাপটপে কাজ করার সময় অ্যান্টিগ্লেয়ার চশমা ব্যবহার করলে ভালো হয়।