বিয়ের পিঁড়িতে বসার আগে আজকাল বহু মেয়েই চান আগে কেরিয়ার তৈরি করতে, পায়ের জমিটাকে শক্ত করে নিতে। ফলে হায়ার স্টাডিজ বা চাকরি করা মেয়ের সংখ্যাই এখন বেশি। রোজ বেরোতে হয়, তাই ত্বকেও বাইরের পলিউশনের কুপ্রভাব পড়ে। বিয়ের দিন ঠিক হয়ে গেছে, এদিকে আয়নার দিকে তাকিয়ে আপনি শকড। কীভাবে চটজলদি মেরামত করবেন ক্ষতিগ্রস্ত ত্বক, তা ভেবে দিশাহারা। আমাদের সাজেশন স্পা, বডি পলিশিং এবং Facial একমাত্র আপনার সমস্যার সমাধান করতে পারে।
প্রতিদিন বাতাসে মিশে থাকা দূষণের শিকার আপনার ত্বক। ত্বকের গভীরে তা পৗঁছে গিয়ে বড়োসড়ো ক্ষতি হতে পারে। তাই সচেতন হোন আজই। ফেসিয়ালই সেই পন্থা, যা কিনা ত্বকের গভীরে গিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে। ত্বককে প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগায়। রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করে। Facial করার সময় ক্লিনজিং, টোনিং, স্ক্রাবিং, মাসাজ– এই চার ধরনের প্রক্রিয়ায়, ত্বক পরিষ্কার হয়ে যায়। অন্যদিকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ার ফলে, ত্বকে টানটান ভাব আসে।
ফেসিয়াল
ফেসিয়াল করার আগে শুধু কয়েকটি জিনিস মাথায় রাখুন
ক) ক্লিনজিং-এর পর ত্বকের সংবেদনশীল অংশ, যেমন চোখ ও ঠোঁটের আশপাশের অংশে তেল লাগাতে পারেন। এছাড়া গোলাপজলে ডোবানো তুলোর প্যাড বোজা চোখের উপরে রাখতে পারেন
খ) ফেসিয়ালের সময় মাসাজ আবশ্যিক
গ) মাসাজ করার আগে অল্প গরম জলে টাওয়াল ডুবিয়ে মুখটা একটু স্পঞ্জ করে নিতে পারেন। এতে মাসাজের সময় রক্ত সঞ্চালন আরও ভালো হবে
মিনারেল ফেসিয়াল
শুষ্ক ত্বকের জন্য এই ফেসিয়াল একেবারে অব্যর্থ। এর দ্বারা ত্বকের মিনারেল-এর ঘাটতি খানিকটা পূরণ করে দেওয়া হয়। ত্বক প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায়।
প্রথমে স্ক্রাবিং ও পরে ডিপ ক্লিনজিং করার পরে ত্বকে জেট মেশিন দ্বারা মিনারেল প্রবেশ করানো হয়। এই ফেসিয়ালে ত্বক ঝলমলে হয়ে ওঠে।
অ্যালোভেরা ফেসিয়াল
এটি শুষ্ক ত্বকের জন্য আরও একটি অপরিহার্য ফেসিয়াল। এই ফেসিয়ালের মাধ্যমে অ্যালোভেরা পাল্প ত্বকের উপর মাসাজ করা হয়। এটি ত্বকে পুষ্টি জোগানোর পাশাপাশি, ত্বকে আর্দ্রতাও ফিরিয়ে আনে।
ত্বকের নিষ্প্রাণ ভাব দূর করতে এই দুটি ফেসিয়ালের জবাব নেই। তাই ত্বকের পরিচর্যায় আজই যত্নবান হোন।
বডি পলিশিং
ক্ষতিগ্রস্ত ত্বককে পরিচর্যা করার জন্য বডি পলিশিং খুব কার্যকরী প্রক্রিয়া। এক্সফলিয়েশনের সাহায্যে স্কিন-এ ঔজ্জ্বল্য ফিরে আসে। স্যালনে গিয়ে যদি বডি পলিশিং করা সম্ভব না হয়, বাড়িতেই চিনি, নুন, ওট্স, মধু, অলিভ অয়েল দিয়ে স্ক্রাব তৈরি করে ব্যবহার করতে পরেন।
বডি পলিশিং-এর সুফল
ক) বডি পলিশিং মরা কোশ ঝরিয়ে ফেলতে সাহায্য করে। ফলে ত্বকের নীচের দিকের হেলদি কোশ উপরে এসে ত্বককে উজ্জ্বল করে
খ) বডি পলিশিং নতুন কোশ তৈরিতেও সাহায্য করে
গ) ত্বকের নরম ভাব ফিরে আসে
ঘ) ত্বকের শুষ্ক ভাব চলে যায়, ত্বক অনেক বেশি ময়েশ্চারাইজড ও হাইড্রেটেড লাগে।
চ ) বডি পলিশিং ক্লিনজার-এর কাজ করে। ফলে ত্বকের উপরিভাগে জমে থাকা তেল ও ময়লা বেরিয়ে যায়।
ছ) ফিজিক্যাল বেনিফিটের পাশাপাশি, বডি পলিশিং মেন্টাল থেরাপিতেও সাহায্য করে। অর্থাৎ বডি পলিশিং করানোর সময় আপনি কমপ্লিটলি রিল্যাক্সড্ থাকতে পারবেন
জ) বডি পলিশিং-এর সময় স্ক্রাব ব্যবহূত হয় যার ফলে ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, যা ত্বককে সজীবতা দেয়
ঝ ) বডি পলিশিং রোমছিদ্রগুলি খুলে দেয় ফলে ত্বক মাসাজের সময়, ব্যবহূত প্রাকৃতিক উপাদান থেকে পুষ্টি সংগ্রহ করতে পারে।
ফলের ফেসমাস্ক
শুষ্ক ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। পেঁপে, কলা, মধু, অ্যাভোক্যাডো ও দুধ দিয়ে তৈরি করতে পারেন এই ফেসমাস্ক। এর নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের শুষ্কভাব উধাও হবে।
ডিমের ফেসমাস্ক
১টা ডিমের কুসুমের সঙ্গে ১ চা-চামচ মধু মিশিয়ে, কয়েক ফোঁটা লেবুর রস ও গোলাপজল দিয়ে তৈরি করুন এই ফেসমাস্ক। এটি মুখে লাগিয়ে শুকনো হতে দিন। তারপর ঈষদুষ্ণ জলে ধুয়ে নিন।
চকোলেট ফেসপ্যাক
ত্বকের উপর গলানো চকোলেট লাগালে, ত্বক নরম, মোলায়েম ও গ্লোয়িং হয়ে ওঠে। ৫ টেবিল চামচ কোকো পাউডার, ২ টেবিল চামচ মধু, ভুট্টার গুঁড়ো ও ২ টেবিল চামচ চটকানো অ্যাভোক্যাডো দিয়ে তৈরি করুন এই মাস্ক। আধঘন্টা মুখে রেখে শুকিয়ে নিন। ঈষদুষ্ণ জলে ধুয়ে নিন।