আমাদের মধ্যে অনেকেই খুব সহজে সর্দি-কাশি বা জ্বরে আক্রান্ত হই। এর কারণ হল শরীরের ইমিউন সিস্টেম অর্থাৎ শরীরের প্রতিরক্ষা প্রণালীর ক্ষমতা কম থাকা। সেই কারণেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা দরকার। আর এই কাজে অত্যন্ত কার্জকর হতে পারে কয়েকটি খাবার। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, জবাব নেই এই ৭-টি ইমিউনিটি ফুড-এর। কী খেলে করোনার এই দুঃসময়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে, জেনে নিন বিশদে।
কোন খাবারের কী খাদ্যগুণ ?
বাদাম : রোজ সকালে ৮-১০টি ভেজানো কাঁচা বাদাম খেলে, শুধু যে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে তা-ই নয়, বাদাম মগজের অতিরিক্ত চাপ সামলানোর কাজেও সাহায্য করে। এতে মজুত ভিটামিন ই, শরীরে থাকা ন্যাচারাল কিলার সেলস বৃদ্ধি করতে সাহা্য্য করে। ক্যানসার সেল বিনষ্ট করতেও এগুলি সহায়ক। এই ভিটামিন ই আবার বলিরেখা রোধ করতেও সক্ষম। সেই সঙ্গে হৃদয় ও শরীরের মাংসপেশি সংক্রান্ত রোগ থেকেও সুরক্ষা দেয়।
রসুন : এটা শরীরে বিপুল পরিমাণে অ্যান্টিবডি তৈরি করে এবং আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে নানা অসুখের সঙ্গে যুঝবার শক্তি দেয়। এর মধ্যে রয়েছে এমনই এক তত্ব, যা শরীরকে সংক্রমণ ও ব্যাক্টিরিয়ার সঙ্গে লড়ার ক্ষমতা দেয়। রোজ সকালে ২ কোয়া রসুন খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত হয় এবং দীর্ঘ সময়কাল ধরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মজবুত থাকে।
টক ফল : কমলালেবু, পাতিলেবু, মুসম্বি, আনারস প্রভতি টক ফলে পর্যাপ্ত মাত্রায় ভিটামিন সি থাকে যা, যে-কোনও ধরনের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়। এই ফল খাওয়ার দরুণ যে-অ্যান্টিবডি শরীরে তৈরি হয়, তা শরীরে ভাইরাস প্রবেশ করতে দেয় না। ভিটামিন সি শরীরে এলডিএল অর্থাৎ গুড কোলেস্টেরল তৈরি করে যা, কার্ডিযো ভাস্কুলার ডিজিজ-এর শিকার হওয়ার থেকে সুরক্ষা দেয়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই রোজ একটা করে টক ফল অবশ্যই খান।
পালংশাক : এই শাককে সুপার ফুড বললেও কম বলা হয়। খাদ্যগুণে ঠাসা এক অতি দরকারি উপকরণ হল পালং। এতে এমনই তত্ব আছে যা শরীরের কোশ তৈরিতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে কোশে মজুত ডিএনএ মেরামত করতেও সাহা্যয্য করে। পালংশাকে পাওয়া যায় আয়রন, অ্যান্টি অক্সিড্যান্টস, ফাইবার ও ভিটামিন সি, যা শরীরকে ভিতর থেকে মজবুত করে। সেদ্ধ করা পালংশাক খেলে পাচনতন্ত্র সুচারুরূপে সক্রিয় থাকে।
মাশরুম : এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের শ্বেতকণিকাগুলি সক্রিয় করতেও সহায়ক। মাশরুমে থাকে খনিজ পদার্থ, অ্যান্টি অক্সিড্যান্টস, নাইসিন ও ভিটামিন বি যা, অ্যান্টি ভাইরাল, অ্যান্টি ব্যাক্টিরিয়াল ও অ্যান্টি টিউমার তত্বে সমৃদ্ধ। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খাদ্যতালিকায় অবশ্যই রাখুন মাশরুম।
ব্রোকোলি : এই সবজিটির মধ্যে থাকে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি আর গ্লুটাথিয়ান নামক অ্যান্টি অক্সিড্যান্টস, যা আপনার ইমিউন সিস্টেমকে বাড়িয়ে তোলে। তাই আপনার খাদ্যতালিকায় এটিকে অবশ্যই শামিল করুন। পনিরের সঙ্গে ব্রোকোলি মিশিয়ে তৈরি হতে পারে সুস্বাদু এক স্যালাড যা, শরীরকে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন জোগান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, ক্যালসিয়ামও সরবরাহ করে।
লাল ক্যাপসিকাম : এই সবজিটি খাবারের স্বাদ যেমন দ্বিগুন করে, তেমনই আবার খাদ্যগুণে ঠাসাও। এতে রয়েছে ভিটামিন সি এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিড্যান্টস যা, শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে বুস্ট করে। ফলে শরীরে চট করে রোগ বাসা বাঁধতে পারে না। ভিটামিন বি ৬-এরও এটি একটি ভালো সোর্স। স্যালাডে এই লাল ক্যাপসিকামকে অবশ্যই শামিল করুন।