আমাদের দেশ তথা পৃথিবী এখন অতিমারির গ্রাসে বিপর্যস্ত। এখনও আমরা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া থেকে রেহাই পাচ্ছি না। তাই স্বাভাবিক জীবনযাপনে এখনও আমরা ফিরতে পারিনি। কমেছে বাইরে বেরোনো কিংবা হইহুল্লোড়। তাই এখনও আমরা ঘামঝরানো পরিশ্রম করতে পারছি না। এক কথায় বলতে গেলে, অনেকটাই বদলে গেছে আমাদের জীবনশৈলী।
সকাল ১০টা থেকে ১১টায় হয়তো আমরা ব্রেকফাস্ট করছি, লাঞ্চ করছি ৩-টে বা ৪-টের সময়, ডিনার করছি হয়তো রাত ১২টায়। শুধু তাই নয়, পরিশ্রম কমে যাওয়ার জন্য রাতে কম সময় ঘুমোচ্ছি কিংবা হয়তো ঘুম গভীর হচ্ছে না। সেইসঙ্গে, বাড়িতে থাকার কারণে, তেলঝাল-যুক্ত মুখরোচক খাবার হয়তো বেশি খেয়ে নিচ্ছি। ফলে, অনেক সময় প্রকট হচ্ছে বদহজমের সমস্যা। এরই পাশাপাশি, বেশি খাওয়া এবং তুলনায় কম পরিশ্রম, বাড়ছে দেহের ওজনও। আর, এই ওজন বৃদ্ধি এবং বদহমজ মানেই হার্ট এবং লিভারের উপর চাপ পড়া।
এর ফলে, যে-কোনও সময় হার্ট অ্যাটাক কিংবা লিভারের বড়ো অসুখে পড়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। আর এইসব শারীরিক সমস্যার সঙ্গে যদি কেউ করোনায় আক্রান্ত হন, তাহলে বিপদের ঝুঁকি বেড়ে যাবে অনেকটাই। অতএব, সতর্কতা এবং সমস্যার সমাধান করা জরুরি।
সুস্থ থাকার উপায়
প্রথমে নিজেকে সুস্থ রাখার মানসিক প্রস্তুতি নিন। আগের মতো নিয়ম-নিষ্ঠার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার চেষ্টা করুন। ভোরবেলা বিছানা ছাড়ুন, যোগাসন করুন অথবা হাঁটুন অন্তত তিরিশ মিনিট। এর ফলে শরীর সুস্থ থাকবে এবং মানসিক চাপ কমবে। এরপর হালকা গরম জলে এক চা-চামচ পাতিলেবুর রস মিশিয়ে পান করুন। এতে শরীরে ভিটামিন সি যুক্ত হয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং পেট পরিষ্কার থাকবে।
দিনের এবং রাতের খাবার খেতে হবে নির্দিষ্ট সময়ে এবং খাবারের পরিমাণও থাকবে অল্প। বেশি তেলঝাল-যুক্ত খাবার বর্জন করতে হবে। পরিবর্তে শাকসবজি, স্যালাড এবং ফলমূল রাখতে হবে খাদ্য তালিকায়। ডিম, মাছ এবং মাংস, অর্থাৎ প্রোটিন-যুক্ত খাবার খেতে হবে খুব অল্প পরিমাণে।
এ প্রসঙ্গে মনে রাখবেন, আগের স্বাভাবিক জীবনে (অতিমারির আগে) যে-পরিমাণ খাবার খেতেন, তার থেকে অন্তত ৩০ শতাংশ খাবার কম খাবেন এখন কিন্তু প্রোটিন এবং ভিটামিন-এ ব্যালান্স রাখতে হবে। কমাতে হবে কার্বোহাইড্রেট-যুক্ত খাবার। হাই-ক্যালোরিযুক্ত খাবার এবং পানীয়, যেমন চকোলেট, আইসক্রিম, পেস্ট্রি, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, ননভেজ চাউমিন, ঠান্ডা পানীয় প্রভৃতি খাওয়া বন্ধ করতে হবে। সেইসঙ্গে, বন্ধ করতে হবে ধূমপান এবং মদ্যপানের কু-অভ্যাস।
আর ফেসবুক-এর আসক্তি কমিয়ে যতটা সম্ভব কোয়ালিটি টাইম পাস করুন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। কারণ, হাসি মজা আর হুল্লোড়ে কিছুটা সময় কাটাতে পারলে, মন ভালো থাকবে। অনুলিখনঃসুরঞ্জন দে