আপনার ঘর আপনার যেমন মনের প্রতিফলন আবার উলটোটাই সমান ভাবে সত্যি। অর্থাৎ ইন্টিরিয়র আপনার মনকে নিমেষে উৎফুল্ল করে তুলতে পারে। তাই থাকতে থাকতে ঘরের দৃশ্যপট যখন একঘেয়ে লাগে, সেই মনোটনি কাটাতে কিছু পরিবর্তন আনুন। দেখবেন নিজের বাসস্থানটিকে আরও বেশি ভালোবাসতে ইচ্ছে করবে। নতুন রূপে সহজে সাজাবার কিছু পরামর্শ দেওয়া হল এখানে, আপনাকে সাহায্য করতে।

পর্দায় বাড়ান আকর্ষণ

ঘরের পর্দা আমরা চট করে বদলাই না। টাঙানো থাকতে থাকতে পর্দায় একটা ম্যাড়মেড়ে ভাব চলে আসে, যা ভীষণ ভাবে ঘরের মেজাজে একটা প্রভাব ফেলে। তাই পরদা মাঝে মাঝেই বদলান। বসন্ত আসছে। তাই ঘরের ইন্টিরিয়ারে কিছু রং এনে ফেলুন। পর্দায় উজ্জ্বল ফ্লাওয়ার প্রিন্ট বা একরঙা উজ্জ্বল কোনও রং-ই এই ঋতুর পক্ষে আদর্শ সাজ। আপনার ঘরের দেয়ালে যদি ডিজাইন পেইন্ট করা থাকে, চেষ্টা করুন পর্দার ক্ষেত্রে একই ধরনের ডিজাইন প্যাটার্ন ফলো করতে। ফ্লোরাল প্রিন্ট পছন্দ না হলে মডার্ন কার্টন ডিজাইনগুলি দেখুন। মার্কেটে বোল্ডপ্যাটার্ন-এর প্রচুর পর্দা পাবেন। কিন্তু যেটাই ব্যবহার করুন, সেটার যেন ঘরের রঙের সঙ্গে সামঞ্জস্য থাকে।

পেন্টিং দেয়ালের রূপ খোলে

আপনি যদি ক্রিয়েটিভ হন, নিজের সৃষ্টি করা কোনও পেইন্টিং সুন্দর করে বাঁধিয়ে দেয়ালে ঝোলাতে পারেন। চাইলে অ্যামব্রোস পেইন্টিং কিনে নিতে পারেন থ্রিডি এফেক্ট-এর জন্য। এছাড়া নিজেও এমবস করে বানাতে পারেন। এমবস করার জন্য রং ও ছাপ কিনতে পাওয়া যায়। যদি ফোটোগ্রাফির শখ থাকে, তাহলে ছবি তুলে ওয়াশ করে বাঁধিয়ে নিতে পারেন। দেয়ালের রূপ নিমেষে খুলে যাবে।

কুশন কভারে পরিবর্তন

আপনার কুশন কভারগুলো কি বহু ব্যবহারে মলিন হয়ে গেছে? তাহলে এখনই ওগুলো বদলাবার সময় এসেছে। আপনি পুরোনো কভারগুলির উপর ব্লক প্রিন্ট বা অ্যাপ্লিক করে অন্য লুক নিয়ে আসতে পারেন। পুরোনো সিল্কের শাড়ি থেকে নিজেই প্যাচওয়ার্ক করে কুশন বানাতে পারেন। প্লেন একরঙা কুশন হলে এতে ফেব্রিক পেইন্ট করতে পারেন। সব মিলিয়ে আপনার চিরচেনা ঘরটা নতুনত্বের ছোঁয়া পাবে।

ইন্ডোর প্ল্যান্টস-এর সবুজ সংসার

গাছপালা শুধু বাড়ির বাইরেটাকেই নয়, অন্দরমহলকেও নিমেষে সতেজ সুন্দর করে তুলতে পারে। তাই ঘরটাকে শ্যামলিমায় ভরে দিতে ইন্ডোর প্ল্যান্টস লাগান। মানি প্ল্যান্ট, এয়ার পিউরিফায়ার, অ্যালোভেরা, ব্যাম্বু প্রভৃতি ঘরের সৗন্দর্য বাড়ায়। গাছ থাকার ফলে আপনার ঘরের পরিবেশটাও বিশুদ্ধ হাওয়ায় ভরে উঠবে। যে-কোনও অতিথি আপনার রুচির প্রশংসা করবেন।

ওয়ালপেপার-রূপ বদল

আজকাল নানারকম ওয়ালপেপার পাওয়া যায় মার্কেটে। পেইন্ট করা ব্যয়সাপেক্ষ, সেই সঙ্গে একটু ঝামেলাও। তারই সুবিধাজনক বিকল্প ওয়ালপেপার আটকানো। এটুকু বদল করলেই আপনার চেনা ঘরটা একেবারে ঝকমকে নতুন হয়ে উঠবে। তাই স্টিকার বা ওয়ালপেপার এখন বিপুল ভাবে জনপ্রিয়।

ফার্নিচার সেটিং

আপনি হয়তো ঘরের যাবতীয় আসবাব বহুদিন ধরে একই পজিশনে দেখছেন। সেটাও একঘেয়েমির একটা কারণ হতে পারে। একটু জায়গা অদলবদল করে দেখুন, চেনা ঘরটাই নতুন লাগবে। আলমারি, খাট, চেয়ার সবই একটু স্থান পরিবর্তন করলে ঘরের ধুলোও ঝাড়া হবে, আর আলো হাওয়াতেও পরিবর্তন হবে।

লাইটিং আনে উজ্জ্বলতা

দীর্ঘদিন একই ধরনের লাইট সেটিং ঘরটাকে ম্লান করে তোলে। পুরোনো টিউব বদলে এলইডি নিয়ে আসুন। ঘরের আলো উজ্জ্বল করলে ঘরটা দেখতেও ভালো লাগবে। সুন্দর ল্যাম্পশেড, দেয়ালে লাগানোর ল্যাম্প শেড সবই সৗন্দর্যে আলাদা মাত্রা আনে। ঘর এবং বারান্দা– দুই-ই সুন্দর আলো দিয়ে সাজাতে পারেন।

ঘর সাজাতে ফুলের ব্যবহার

আজকাল বহু রকমের আর্টিফিশিয়াল ফ্লাওয়ার কিনতে পাওয়া যায়। ঘরের কোণায় বড়ো ভাস-এ সাজান বা টেবিলের উপর, ফুল কিন্তু ঘরের সৗন্দর্যে দারুণ পরিবর্তন আনতে পারে। যদি ফ্রেশ ফ্লাওয়ার পছন্দ হয় আপনার, তাহলে জারবেরা বা ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, গোলাপ এসব তো আছেই। সেন্টেড, ফ্লোটিং ক্যান্ডলস্ আর ফুল, নিমেষে একটা সুন্দর পরিবেশ তৈরি করবে আপনার ঘরে।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...