যে-কোনও ঘর-গেরস্থালির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল রান্নাঘর, যেখানে সারাদিনের বেশ কিছুটা সময় রোজই কাটাতে হয়। সুতরাং সময়ের দৌড়ে কমফর্ট-এর সঙ্গে সঙ্গে কিচেনের কাজ চটজলদি সেরে ফেলাটাও খুবই জরুরি হয়ে উঠেছে। তাই কিছুটা রদবদল করে নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী সাজিয়ে তুলুন রান্নাঘর।
রান্নাঘরের অন্দরসজ্জা
রং – রান্নাঘরের জন্য উপযুক্ত রং নির্বাচন করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ রান্নার জায়গার সম্পূর্ণ ছবিটা ওটার উপরেই নির্ভর করে। বেগুনি, সবুজ ইত্যাদি গাঢ় রং ব্যবহার না করাই ভালো। বরং চোখের আরামের জন্য হলুদ, কমলা অথবা মাটির রং বেছে নিতে পারেন।
টাইল্স- ডিজাইনার টাইল্স কিচেনের দেয়ালে লাগালে দাগছোপের হাত থেকে নিষ্কৃতি পাবেন এবং ঘরও বড়ো দেখাবে। মার্কেটে গিয়ে নিজে দেখে টাইল্স বেছে আনতে পারেন তবে সময়ের অভাব থাকলে অনলাইনেও অর্ডার করতে পারেন। পছন্দের ভ্যারাইটি হল মোজেক, সিরামিক, প্রিন্টেড সিরামিক, রাস্টিক, ম্যাট ওয়াল টাইল্স, গ্লাস সিরিজ ডিজিটাল ওয়াল টাইল্স ইত্যাদি। এছাড়াও বিভিন্ন ফল বা ভোজনসামগ্রীর ছবি প্রিন্ট করা টাইল্স-ও পছন্দমতো বেছে নিতে পারেন।
জানলাঃ রান্নাঘরে জানলা থাকা খুবই প্রয়োজন। তাই রান্নাঘরে জানলার জন্য একটু বেশি অর্থ খরচ করে উত্তম কোয়ালিটিরই জিনিস কিনুন। জানলার মাধ্যমে রান্নাঘরে সূর্যের আলো প্রবেশ করে। আজকাল ঘষা কাচের জানলা ফ্যাশনে ইন। রান্নাঘরকে আকর্ষণীয় করে তুলতে ইন্টিরিয়র ডিজাইনাররা জানলায় এই ধরনের কাচ বেশি ব্যবহার করছেন।
চিমনিঃ প্রতি বছরই কিচেন চিমনিতে নানারকম পরিবর্তন আসছে এবং দিন দিন এর চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। মডিউলার কিচেনের অপরিহার্য অঙ্গ হল কিচেন চিমনি। তিন ধরনের ফিলটার যুক্ত চিমনি সাধারণত পাওয়া যায়– ক্যাসেট ফিলটার, কার্বন ফিলটার ও ব্যাফেল ফিলটার। ভারতীয় কিচেনের জন্য ব্যাফেল ফিলটার সবচেয়ে বেশি কার্যকরী।
কিচেন কাউন্টার টপঃ উপযুক্ত কিচেন টপ বাছলে যেমন কাজের সুবিধা হয় তেমনি কাজও তাড়াতাড়ি করা যায়। এছাড়া দেখতেও আকর্ষণীয় লাগে। সাধারণত গ্রানাইট কিচেন টপ বা টেবিল বেশি জনপ্রিয়। কিন্তু সাদা বা কালো মার্বল টপ বা চিনেমাটির তৈরি টপ-ও এখন অনেকেই পছন্দ করছেন। কিচেন কাউন্টার টপ-এ কম্প্যাক
কোয়ার্টজ-এর খুব রমরমা এখন এবং নিউ জেনারেশন এই স্টাইলটির খুব ভক্ত।
আলোর ব্যবহারঃ রান্নাঘরে আলোর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা খুবই দরকার। রান্নাঘরের সম্পূর্ণ সৗন্দর্যায়ন-এর জন্য ভালো কোয়ালিটির ল্যাম্প, বাল্ব ইত্যাদি লাগানো জরুরি। এলইডি এবং হ্যালোজেন কিচেন লাইটস এখন অনেকেরই পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে।
কিচেন ক্যাবিনেটঃ স্টোরেজের জন্য কিচেন ক্যাবিনেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রি-ল্যামিনেটেড পার্টিকল বোর্ডস, হার্ডউড, মেরিন প্লাই, হাইব্রিড উড প্লাস্টিক কম্পোজিট ইত্যাদি কিচেন ক্যাবিনেটস-এর চল সবথেকে বেশি।
রান্নাঘর সাজাবার জন্য এগুলি ছাড়াও কিচেন ক্যারোসেল ব্যবহার করা যায় জায়গা বাঁচিয়ে কিচেনে কাজ করার জন্য অ্যাডজাস্ট করা যায়, এমন টেবিলও কিনে নিতে পারেন।
রান্নাঘরের জিনিসপত্র
আধুনিক সময়ের প্রয়োজনীয়তা এবং সময়ের অপচয় কমতে, রান্নাঘরে কাজের সুবিধার্থে রাখা যেতে পারে বেশ কিছু প্রোডাক্ট, যেগুলি আপনার রান্নাঘরকেও করে তুলবে যথেষ্ট আকর্ষণীয়।
এয়ার ফ্রায়ারঃ তেলে ফ্রাই করা খাবারের থেকে ৮০ শতাংশ কম তেলে এটিতে ফ্রাই করা ছাড়াও খাবারও বানানো যায়। এতে খাবারের স্বাদেও কোনও ঘাটতি হয় না। এয়ার ফ্রায়ারের সাহায্যে শুধুমাত্র তেল ব্রাশ করে পোটাটো চিপ্স, চিকেন, ফিশ ইত্যাদি ফ্রাই করা যেতে পারে।
জুসারঃ ফলের বা সবজির টাটকা জুস, প্যাকেটের জুস-এর থেকে অনেক বেশি পুষ্টিকর। জুসারের সাহায্যে বাড়িতেই জুস বানিয়ে নিজেকে সারাদিন এনার্জি-তে ভরপুর রাখতে পারেন।
স্মার্ট কুকি আভেনঃ ১০ মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে ফ্রেশ বেক করতে স্মার্ট কুকি আভেন-এর জুড়ি মেলা ভার।
সোয়ার্মা গ্রিলারঃ সোয়ার্মা গ্রিলারের সাহায্যে বাড়িতে বসেই বানিয়ে ফেলতে পারেন শাওয়ারমা। এটি যেমন পুষ্টিকর, তেমনই সুস্বাদু একটি পদ। ভালো ভাবে তৈরি সোয়ার্মা প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট-এ ভরপুর হয়। এর মধ্যে থাকে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী ফ্যাট সুতরাং এটি শরীরের কোনও ক্ষতি করে না।