সন্তানের হাসিখুশি, প্রাণচঞ্চল চেহারা দেখতে সব বাবা-মা-ই চায়। ওদের ভালো থাকার জন্যই তো বাবা-মা-দের হাড়ভাঙা খাটুনি, এত আয়োজন, মনের মতো করে সাজিয়ে তোলা ওদের ঘর। বাথরুমই বা বাদ যায় কেন? কীভাবে সাজাবেন ওদের স্নানের জায়গা, কেমন হবে দেয়ালের রং? সুরক্ষা আর সৌন্দর্যের মিশেলে আপনার বাচ্চার বাথরুমে দারুণ লুক এনে দিতে, জেনে নিন কয়েকটা টিপ্স।
ওয়াশরুম সাজান ওদের মনের মতো করে
যখন আপনার সন্তানের বয়স খুব কম, তখন স্বাভাবিক ভাবেই আপনার প্রচেষ্টা হবে ওর জীবনকে স্বচ্ছন্দ করে তোলার। এমন একটা জীবন, যাতে ওর কোনও কিছুতেই অসুবিধা না হয়। তাই ওদের টয়লেট সাজিয়ে দিন ওদের কমফর্ট অনুযায়ী। ছোটো গিজার, হাতের নাগালে থাকা সিংক, ছোটো এবং কমপ্যাক্ট কমোড– এই সবই টয়লেটে দেবে শিশুসুলভ সারল্য আর সৌন্দর্যের ছোঁয়া। যদিও এটা মনে রাখা খুবই জরুরি যে, আপনার বাচ্চারা কিন্তু খুব দ্রুত বেড়ে উঠছে। ফলে নতুন করে বাথরুম সাজানোর প্রয়োজন পড়তে পারে খুব শিগগিরি।
আপনার কাছে আর একটি অপশন হল, বাথরুম বা ওয়াশরুম সাজাতে ওদের পছন্দকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া। ডেকরেশনে ব্যবহার করুন বিভিন্ন উজ্জ্বল রং, কার্টুন ক্যারেকটারের ছবি বা শো-পিস। অদ্ভুত ডিজাইন, দেয়ালের এখানে ডট বা ওখানে ছিটিয়ে দেওয়া রঙের বাহার ফাটাফাটি লুক এনে দেবে। আপনার বাচ্চাও থাকবে খুশি।
রং বাছার সময়ে
বাচ্চার বাথরুম সাজিয়ে দিতে সবথেকে তাড়াতাড়ি আপনি যে- উপায়টা অবলম্বন করতে পারেন তা হল, দেয়ালের রং পরিবর্তন। বাচ্চাদের পছন্দ কিন্তু অনেক সময়েই বেশ অন্যরকম হয়। সবসময় যে ওর সাদা বা বিভিন্ন হালকা শেড পছন্দ হবে, এমনটা নয়। বালিগঞ্জের রুমিতার চার বছরের ছোটো ছেলের বাথরুমের জন্য পছন্দের রং হল বাবলগাম পিংক। যদি পেন্টশপ-এ ওর ঠিক পছন্দের রং না পান, তবে পরিবর্তে ওর যে- রং পছন্দ, সেই রং-ই নিন।
কিন্তু একটা কথা খেয়াল রাখবেন যে, ওদের পছন্দ কিন্তু খুব দ্রুত পরিবর্তিত হয়। ফলে রং-এর পেছনে বেশি অর্থ ব্যয় করবেন না। হয়তো দেখলেন, প্রতিবছরেই বাথরুমের দেয়ালের রং পরিবর্তন করতে হচ্ছে। অবশ্য নন-টক্সিক রং কিনবেন যা বাচ্চার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হবে না।
বাথরুম অ্যাক্সেসরিজ
স্নান করার তোয়ালে, টুথব্রাশ, টুথব্রাশ হোল্ডার, সাবান রাখার ডিসপেনসার, বাকেট, মাগ ইত্যাদি বাচ্চারা নিজেরা পছন্দ করে কিনতে ভালোবাসে। ওদের শপিং করতে সঙ্গে নিয়ে যান, আপনার বাজেটের কথাও ওদের বলুন। ওরা মনের আনন্দে যা কিনতে চাইবে, তাই কিনতে দিন।
দেয়ালে নতুনত্ব
সন্তানের বাথরুমের দেয়ালে নতুনত্ব আনতে বিভিন্ন ধরনের স্টিকার লাগানো যেতেই পারে। বাজারে রকমারি স্টিকারের সম্ভার রয়েছে। বাঘ, সিংহ, বাঁদর, জিরাফের কার্টুন-স্টিকার অথবা রং-বেরঙের ফ্লোরাল ডিজাইন দেয়ালে নিমেষে নতুনত্বের ছোঁয়া এনে দেবে।
দেয়াল সাজাতে আপনি নির্দিষ্ট কোনও থিম-ও বেছে নিতে পারেন। সেই থিম অনুযায়ী সাজিয়ে তুলতে পারেন আপনার বাচ্চার বাথরুম-এর দেয়াল। খেয়াল রাখবেন স্টিকারগুলি যাতে এমন হয় যে, দেয়ালে উজ্জ্বলতা আসে। বিক্রেতাদের মধ্যে করা একটি সমীক্ষা থেকে জানা গেছে যে, মেয়েরা সাধারণত ডিজনি প্রিন্সেস, গোলাপি বা ল্যাভেন্ডার রঙের জিনিস, ফুলের মোটিফ পছন্দ করে। বাচ্চা ছেলেরা খেলনা গাড়ি, কার্টুন চরিত্র, পশু-পাখির ছবি ইত্যাদি বেশি পছন্দ করে। যদি আপনার শিশুদের মধ্যে একজন ছেলে এবং অপরজন মেয়ে হয়, তাহলে কিছু কমন থিম বেছে নিতে পারেন। যেমন, জঙ্গল, চিড়িয়াখানা, রাতের আকাশ ইত্যাদি।
সুরক্ষায় নজর দিন
ওয়াশরুম-এর দেয়াল যত সুন্দর করেই সাজান না কেন, সুরক্ষার সঙ্গে কিন্তু কখনও কমপ্রোমাইজ করবেন না। লক্ষ্য রাখুন, বাথরুম-এর মেঝে যেন পিছল না হয়। ইলেকট্রিক ওয়্যারিং, শকপ্রুফ হওয়া বাঞ্ছনীয়। দরজার লক যেন কখনও জ্যাম না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখুন। এমন সব আসবাবপত্রই ওয়াশরুম-এর ভিতরে রাখুন, যাদের কোণ খুব ধারালো বা শার্প না হয়।