মিত্রা বাড়ি ফিরে নিজের বেডরুমের দৃশ্য দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান। সারা ড্রেসিং টেবিলে প্রসাধনী সামগ্রী ছড়িয়ে ছিটিয়ে এবং তাঁর ১৩ বছর বয়সি মেয়ে আলিয়া আয়নায় নিজের দিকে তাকিয়ে বসে আছে। রেগে গিয়ে তিনি আলিয়াকে গালে চড় মেরে বলেছিলেন যে, এগুলি বাচ্চাদের জন্য নয়। Makeup বাচ্চাদের ব্যবহার করার জিনিস নয়।
কিন্তু আজকের মায়েরা সেরকম নন। তারা নিজেদের সঙ্গে সঙ্গে তাদের মেয়েকেও প্রসাধনী ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখেন না, বিশেষ করে মেয়েরা যখন কৈশোরে পদার্পণ করে। বাড়ন্ত বয়সের মেয়েরা তাদের মায়েদের সাজসজ্জা করতে দেখে তাদের মনেও সেই জিনিসগুলি ব্যবহার করার ইচ্ছে প্রবল হয়।
কসমেটোলজিস্ট এবং মাইন্ড থেরাপিস্ট আভলিন খোকার বলেন, ‘আজকাল স্কুলে প্রচুর অ্যাকটিভিটি করানো হয় এবং মেক-আপও ব্যবহার করা হয় বাচ্চাদের সাজানোর জন্য এবং তাদের উপস্থাপনযোগ্য করে তুলতে। এ ছাড়া আজকাল তরুণ অভিনেত্রী ও মডেলদেরও টিভি সিরিয়ালে ও চলচ্চিত্রে দেখা যায়। ১৩ থেকে ১৬ বছর বয়সটাই এমন যে মেয়েরা তাদের চেহারার দিকে একটু বেশি মনোযোগ দেয়। এই বয়সের চলচ্চিত্র অভিনেত্রী এবং মডেলদের, সাজগোজ কিছুটা বেশি প্রভাবিত করে।
সিনেমা, সিরিয়ালের অভিনেত্রীদের সাজসজ্জা নকল করতে এই যুগের মেয়েরা সবসময় আগ্রহী থাকে। এমনকি মায়েরাও নতুন নতুন মেক-আপ দেখে সেটা নিয়ে নিজের উপরেও এক্সপেরিমেন্ট করে থাকেন।
এমন পরিস্থিতিতে মেয়েরও মনে হয়, মা যখন এটা করছেন, আমিও তা করতে পারি। মায়েদের উচিত মেয়ের কাছে পুরো জিনিসটি ব্যাখ্যা করা। মেয়েকে বোঝানো উচিত, মা যে পণ্যগুলি ব্যবহার করছেন তা তার মেয়ে ব্যবহার করতে পারে না, কারণ পণ্যগুলিতে যে ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়ে থাকে সেটা কোমল ত্বকের পক্ষে ক্ষতিকারক। কিশোরী কন্যার ত্বক এখনও রাসায়নিকের কঠোরতা সহ্য করতে সক্ষম নয়।
মায়েদেরও জানা উচিত তাদের মেয়ের ত্বকে কী কী পণ্য ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে শিশুর ত্বকে কোনও পণ্য ব্যবহার করার আগে, তার উপরে লেখা উপাদানগুলি বিবেচনা করা উচিত। যদি পণ্যটি চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ দ্বারা অনুমোদিত হয়, এতে সালফেটিক অ্যাসিড এবং পুদিনা এজেন্ট থাকে তবে আপনার মেয়ের ত্বকে সেই পণ্যটি ব্যবহার করুন। আপনার সন্তানকে কখনওই প্যারাবেন, প্যাথোলেটস ট্রাইক্লোসান, পারকোলেটের মতো উপাদানযুক্ত পণ্য ব্যবহার করতে দেবেন না, কারণ এগুলো ত্বককে শুষ্ক করে তোলে এবং ব্রণের সমস্যা বাড়ায়।