ভারতীয় খাওয়া-দাওয়ার একটি অঙ্গ হল আচার। আম, লেবু, লংকা, রসুন ছাড়াও নানা সবজি যেমন গাজর, বেগুন, বাঁধাকপি, ফুলকপি, এমন নানা উপকরণ দিয়ে তৈরি হয় জিভে জল আনা আচার। নুন, সরষের তেল ও ভিনিগার আচারে এই তিনটি উপাদান থাকবেই। ঘরে তৈরি হোক কিংবা দোকানে, আচার স্বাদে অতুলনীয় হওয়ার জন্য, মুখ বদলাতে সহায়তা করে। আচারের সুন্দর গন্ধ ও স্বাদ দীর্ঘ সময় ধরে জিভে লেগে থাকে।
আচার খাওয়ার সময় খেয়াল রাখুন সেটা যেন পরিমিত হয়। অধিক পরিমাণে বা রোজ রোজ আচার খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। কিন্তু আমরা রসনার তৃপ্তির জন্য এই অভ্যাস সহজে ছাড়তেও পারি না।
আচার হজমের সহায়ক কিন্তু সেটা তখনই সম্ভব, যদি তা বাড়িতে বানানো হয়।আসুন জেনে নেওয়া যাক আচারের নানা ভালো দিকগুলি।
- আচারে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ থাকে। সেই কারণেই আচার কৌটোয় ভরে রোদে রেখে দেওয়া হয়
- আচারে ব্যবহার করা ভিনিগারে প্রচুর পরিমাণে অ্যাসেটিক অ্যাসিড থাকে, যা হিমোগ্লোবিন বাড়াতে ও মধুমেহ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হয়। ডায়াবেটিস রোগীদের সপ্তাহে একবার আমলকীর আচার খাওয়া বিশেষ উপকারী
- প্রেগন্যান্সির সময় লেবু বা আমের আচার খেলে মর্নিং সিকনেস-এর সমস্যা মিটে যাবে, এটা মা-ঠাকুমাদের টোটকা
- আচার খেলে ওজন কমে। এর কারণ এতে ক্যালোরি অত্যন্ত কম। এছাড়া আচারের উপকরণে থাকে শরীরের ফ্যাট ভেঙে দেওয়ার গুণাগুণ
- আচারে থাকে প্রচুর আ্যন্টি অক্সিড্যান্টস্, যা আমাদের শরীরের ফ্রি রাডিক্যালস থেকে সুরক্ষিত রাখে
- দৈনিক আচার খেলে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে
- আচারে ভিটামিন কে-ও থাকে। যা রক্ততঞ্চনে সাহায্য করে। কোথাও কেটে গেলে রক্ত জমাট বাঁধতে এটি সাহায্য করে
- আচার পেট পরিষ্কার করতে সক্ষম। কারণ এতে ব্যবহৃত সবজিতে থাকে ফাইবার, যা কনস্টিপেশন-এর সমস্যা থেকে পরিত্রাণ দেয়।
এবার আসি ক্ষতির বিষয়টিতে। একটি সমীক্ষায় সম্প্রতি জানতে পারা গিয়েছে যে, বেশি সবজি দিয়ে তৈরি আচার খাওয়ার কারণে গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের সম্ভাবনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই মূল খাবারের স্বাদ বাড়াতে আচার খাওয়ার সময় রসনায় রাশ টানাও দরকার।
আচারে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম থাকে যা হাইপার টেনশন ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের পক্ষে ক্ষতিকারক। দোকানে যে-সব আচার পাওয়া যায়, তাতে তেল অত্যধিক পরিমাণে থাকে। এতে ব্যবহৃত তেল ও মশলাগুলি অনেকটাই কাঁচা অবস্থায় থাকে। এর ফলে কোলস্টেরল বৃদ্ধির সম্ভাবনা বাড়ে। আচার তাজা রাখার জন্য যে-প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করা হয়, সেগুলিও শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। এটি অ্যাসিডিটি ও শরীরের স্ফীতির জন্যও দায়ী।