শিউলি ফুলের গন্ধ নিয়ে শুরু হল আবেগ-উচ্ছ্বাসের শারদোৎসব। নতুন জামা-প্যান্ট, শাড়ি-সালোয়ার আর প্রসাধনে সাজ-পোশাক সম্পূর্ণ করে সবাই মেতে উঠতে শুরু করেছেন এই উৎসবে। মহা-মিলনের এই উৎসবে মণ্ডপ পরিক্রমা ছাড়াও জমবে আড্ডা আর খাওয়া।
এমন অনেকে আছেন, যারা উৎসবের কয়েকদিন বাড়িতে রান্না-র ঝামেলা নিতে চান না। পরিবর্তে, আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী খাওয়ার জন্য বেছে নেন পছন্দের রেস্তোরাঁ। অনেকে আবার সারা বছর একটু-একটু করে টাকা জমিয়ে রাখেন বড়ো রেস্তোরাঁয় খাওয়ার ইচ্ছেপূরণের কথা মাথায় রেখে।
ভুরিভোজের জন্য যথেষ্ট খোঁজখবরও রাখেন অনেকে। কোথায় নতুন কী পদ পাওয়া যাবে, তার আগাম খবর সংগ্রহ করে তবেই সিদ্ধান্ত নেন তারা।
কেউ খেতে চান ইন্ডিয়ান, কেউ চাইনিজ, আবার কেউ চান মোঘলাই খাবার খেতে। লাইভ কাউন্টার থেকে গরম খাবার খেতেও ভালোবাসেন অনেকে। কলকাতা-র ‘দ্য ললিত গ্রেট ইস্টার্ন’ হোটেলের এক্সিকিউটিভ শেফ সুনয়ন প্রামাণিক প্রসঙ্গত জানালেন, ‘শারদোৎসবে বেশিরভাগই খেতে আসেন দলবেঁধে। কিন্তু সবার পছন্দের খাবার এক হয় না। তাই সবার মন জয় করার জন্য উৎসবের ক’টা দিন সবরকম খাবারের আয়োজন করতে হয়। বাংলার গ্রামাঞ্চলের সুস্বাদু নস্টালজিক খাবারের সঙ্গে রাখতে হয় রান্নার লাইভ কাউন্টারও। বেগুনের ভর্তা স্যালাড, ঝিঙে চিংড়ি’র মনোহোরা, চিতল মাছের মুইঠা, কচু লোতির চচ্চড়ি, ছানার মালাই কারি থেকে গাঁঠি কচু এবং কড়াইশুটির ভুনা পর্যন্ত, সমস্ত খাবারগুলি ঐতিহ্যগত ঘটি শৈলীতে নিখুঁতভাবে তৈরি করতে হয়। আবার মেনুতে পূর্ববাংলা স্পেশাল মাছের চোখা, গন্ধরাজ লেবু দিয়ে মাছের পিঠে, মোরগ রোস্ট স্যালাড এবং আরও অনেককিছুর আয়োজন করতে হয় এই সময়। শুধু তাই নয়, নিউমার্কেটের স্পেশাল চাট, পাও ভাজি কিংবা পানি পুরি-র কাউন্টারও রাখতে হয় সবাইকে খুশি করার জন্য।’
শুধু কি তাই? শেষ পাতে মালাই চমচম, মালাই টোস্ট, ছানার দুধপুলি কিংবা উত্তর বাংলার স্পেশাল খিরের এবং গুড়ের খাজাও পাবেন অনেক রেস্তোরাঁয়। মোটকথা, স্বাদে-আহ্লাদে জমিয়ে তোলা চাই শারদোৎসব। অবশ্য শুধু ভালো কিছু খাওয়ার কথা ভাবলে চলবে না, পকেটে গচ্ছিত রাখতে হবে ভালো পরিমাণ টাকাও। যেমন টাকা খরচ করতে পারবেন, সেই অনুযায়ী রসনা-তৃপ্ত করতে পারবেন। তবে মোটামুটি দেড় থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ করতে পারলে তবেই নামীদামী হোটেলের অভিজাত রেস্তোরাঁয় খাওয়ার সাধ মেটাতে পারবেন। তাহলে আর দেরি না করে, উৎসবের শুরুতেই কিছু টাকা সরিয়ে রাখুন সুস্বাদু খাবারের স্বাদ গ্রহনের জন্য।