জন্মাবার পর প্রথম ছয় মাস শিশুটিকে কেবল মায়ের দুধ খাওয়ানো উচিত। এই সময় পুষ্টির জন্য শিশুটি মায়ের উপর নির্ভর করে। তাই, মা যখন তাঁর সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াবেন, সেই সময় পুষ্টিকর খাবার খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তিনি যা খাবেন তা তাঁর স্তনের দুধের শক্তি, প্রোটিন, পুষ্টি এবং ভিটামিন সামগ্রী নির্ধারণ করবে। মনে রাখবেন, এই সময় পুষ্টির চাহিদা বেশি থাকে এবং তা পূরণ না করা হলে মা এবং তাঁর শিশু উভয়েই নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
ডা. অসীমা ভৌমিক-এর মতে, শিশু এবং মা উভয়ের জন্যই বুকের দুধ খাওয়ানো ভালো। বুকের দুধই বেশিরভাগ শিশুর পুষ্টির সেরা উৎস। একটি শিশু বড়ো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মায়ের দুধের পরিবর্তে অন্যান্য খাদ্যের মাধ্যমে তার পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারে। কিন্তু তার আগে, বুকের দুধ শিশু এবং মা-কে নির্দিষ্ট কিছু অসুস্থতা ও রোগ থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে।
স্তন্যদানকারী মায়েরা তাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে, স্তনের দুধের গুণমান ও পরিমাণ বজায় রাখতে এবং বুকের দুধ উৎপাদন করার জন্য শক্তি সরবরাহ করতে পর্যাপ্ত পুষ্টির প্রয়োজন। স্তন্যদানের সময় খাবার গ্রহণের পরিমাণ এবং ফ্রিকোয়েন্সি অবশ্যই বাড়াতে হবে। প্রথম মাসে অতিরিক্ত ৫৫০ কিলোক্যালোরি শক্তির প্রয়োজন হয় এবং স্তন্যদানের পরবর্তী ৬ মাসে অতিরিক্ত ৪০০ কিলোক্যালরির প্রয়োজন হয়। ভাত, রুটি, ঘি প্রভৃতি খাওয়ার মাধ্যমে পূরণ করা যেতে পারে পুষ্টির ঘাটতি এবং এগুলি পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড সরবরাহ করে।
প্রথম মাসের পর পরবর্তী ৬ মাস প্রতিদিন ৫-৮ গ্রাম প্রোটিন বাড়াতে হবে। এসব পুষ্টি জোগান দেওয়া যেতে পারে ডাল, বাদাম, দুধ, মাছ, মাংস, ডিম প্রভৃতি মাধ্যমে। দুধ খাওয়ানোর সময় প্রতিদিন ১২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন। দুধ জৈবিক ভাবে উপলব্ধ ক্যালসিয়ামের একটি ভালো উৎস। এরিথ্রপয়েিসের উচ্চ চাহিদা মেটাতে প্রয়োজন আয়রনের। সবুজ শাকসবজি এবং তাজা ফলের মাধ্যমে পাওয়া যেতে পারে ভিটামিন এ এবং সি। দুধ খাওয়ানো মায়েদের খেতে হবে দই। কারণ, দই থেকে ভিটামিন বি-১২ পাওয়া যায়।