আই-ফ্লু বা আরও সঠিকভাবে বলা যায় কনজাংক্টিভাইটিস। এটি একটি অত্যন্ত ছোঁয়াচে রোগ। এই রোগটির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন এবং পরামর্শ দিয়েছেন কলকাতা-র এএমআরআই হাসপাতালের অ্যাডভান্সড ল্যাপারোস্কোপি এবং জিআই অনকোসার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. সঞ্জয় মণ্ডল।
মনে রাখতে হবে, সবচেয়ে সাধারণ ভাইরাস সংক্রমণের কারণে হয় আই-ফ্লু বা কনজাংক্টিভাইটিস। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অ্যাডেনো ভাইরাস দ্বারা সৃষ্টি হয়, তবে অন্যান্য কারণ যেমন হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস এবং ভেরিসেলা-জোস্টার ভাইরাস দ্বারাও আক্রান্ত হতে পারে । এগুলিও পরিচিত গলা ব্যথা এবং উপরের শ্বাস নালীর সংক্রমণের কারণ হিসেবে।
এটি সাধারণত স্পর্শের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে সমস্ত ভাইরাল রোগের মতো এটি একটি স্ব-সীমাবদ্ধ রোগ।কনজাংক্টিভাইটিস-এর কারণে চোখে ব্যথা, জ্বালা এবং চোখ লাল হয়ে গিয়ে জল বেরোতে থাকে। এর কারণে স্রাব বা হতে পারে চোখের চারপাশে ক্রাস্টিং। সম্পূর্ণ ভাবে সেরে উঠতে কমপক্ষে ৫ থেকে ৭ দিন সময় লাগতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে এমনকি আরও সময় অর্থাৎ ২-৩ সপ্তাহ পর্যন্ত লেগে যেতে পারে সেরে উঠতে।
আর কনজাংক্টিভাইটিস যদি শিশুদের হয়, তাহলে তা খুবই সমস্যার বিষয়। কারণ কনজাংক্টিভাইটিস যেহেতু ছোঁয়াচে একটি রোগ, তাই শিশুরা স্কুলে গেলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে বাকি বাচ্চাদের মধ্যেও। এখন তাই শিশুদের কনজাংক্টিভাইটিস হলে অভিভাবকদের পরামর্শ দেওয়া হয় ওদের স্কুলে না পাঠাতে। অতএব, শিশুদের স্কুলে উপস্থিতি হ্রাসের জন্য কনজাংক্টিভাইটিস-কেই দায়ী করা হয়। তাই বলা যায়, এই কনজাংক্টিভাইটিস শিশুদের শিক্ষার উপর পরোক্ষ ভাবে প্রভাব ফেলে। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেও এটি কর্মদিবসের ক্ষতি করে এবং সামগ্রিক ব্যাঘাত ঘটায়। কারণ, কনজাংক্টিভাইটিস হলে কর্মক্ষেত্রে যেতে বারণ করা হয় রুগিকে।
কনজাংক্টিভাইটিস আক্রান্ত হওয়ার সময় কন্টাক্ট লেন্স পরা বন্ধ করা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই সময় কন্টাক্ট লেন্স পরলে কনজাংক্টিভাইটিস-এর চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে। অ্যালার্জিক কনজাংক্টিভাইটিস-এর চিকিৎসা করা যেতে পারে অ্যান্টিহিস্টামাইনস অর্থাৎ কৃত্রিম অশ্রু নামক চোখের ড্রপ দিয়ে। আইড্রপগুলিতে অ্যান্টিহিস্টামাইন বা অন্যান্য ওষুধ রয়েছে যা অ্যালার্জিযুক্ত সমস্যার জন্য সহায়ক হতে পারে। ব্যাকটেরিয়াল কনজাংক্টিভাইটিস অ্যান্টিবায়োটিক যুক্ত চোখের ড্রপ দিয়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে।