নেপালের এক গৃহবধূ কিডনি প্রতিস্থাপন করিয়েছিলেন। এরপর তার অন্ত্রে তৈরি হয়েছিল বিরল প্রতিবন্ধকতা। রোগ নিরাময়ের সমস্ত সম্ভাব্য ওষুধ দিয়েও প্রতিবন্ধকতার সমাধান হয়নি। শেষ পর্যন্ত, কলকাতার এএমআরআই হাসপাতাল-এর সিনিয়র কনসালট্যান্ট এবং অ্যাডভান্সড ল্যাপারোস্কোপি ও জিআই ক্যান্সার সার্জন ডা. সঞ্জয় মণ্ডল-এর কাছে আসেন ওই রোগী। নানারকম পরীক্ষানিরীক্ষার পর ডা. মণ্ডল বুঝতে পেরেছিলেন যে, অন্ত্রগুলি ট্রান্সপ্লান্ট কিডনিতে হার্নিয়েট হয়েছে এবং একটি স্ট্রাকচার (সংকীর্ণ) সহ আটকে গেছে। এরপর ওই মহিলাকে অন্ত্রের বিরল প্রতিবন্ধকতা থেকে মুক্তি দিতে এবং তার জীবন বাঁচাতে, ডক্টর সঞ্জয় মন্ডলের নেতৃত্বে একটি চিকিৎসক টিম কাজ করে। এই টিম-এ ছিলেন ডা. পি কে মিশ্র (ইউরোলজিস্ট) এবং ডা. রিতেশ কুন্তিয়া (নেফ্রোলজিস্ট)। কিডনি প্রতিস্থাপনের পরে যে-কোনও অস্ত্রোপচার উচ্চ প্রতিরোধ ক্ষমতা-দমনের কারণে খুব ঝুঁকিপূর্ণ এবং সংক্রমণের ঝুঁকিও রয়েছে।
অন্ত্রের প্রতিবন্ধকতা ছোটো অন্ত্রের আংশিক বা সম্পূর্ণ বাধা সৃষ্টি করে। এটি ব্লকেজের উপরের অংশে বর্জ্য পদার্থ এবং গ্যাস তৈরি করে এবং পুষ্টি ও তরল শোষণকে প্রভাবিত করে। এই ক্ষেত্রে কিডনি প্রতিস্থাপনের পরে একটি সংকীর্ণতা তৈরি হয়েছিল। এই ক্ষেত্রে প্রতিস্থাপিত কিডনির কাছে অন্ত্র আটকে যাওয়ার কারণে হতে পারে। এর কারণে কেউ প্রচণ্ড ব্যথার অনুভব করতে পারে। কারণ, এটি ছোটো অন্ত্র বা বড়ো অন্ত্রের (কোলন) মাধ্যমে খাদ্য ও তরল প্রবেশ আটকায়। আর নেপালের ওই রোগীর ক্ষেত্রে কিডনি প্রতিস্থাপনের সময় তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও দুর্বল ছিল। তাই ডা. সঞ্জয় মণ্ডল খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে, ল্যাপারোস্কোপি সার্জারি-র মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ করে বাড়ি পাঠিয়েছিলেন। যাইহোক, প্রসঙ্গত অন্ত্রের প্রতিবন্ধকতা বা ইনটেস্টিনাল অবস্ট্রাকশন-এর বিষয়ে বিশদে আলোকপাত করেছেন ডা. সঞ্জয় মণ্ডল।
অন্ত্রের প্রতিবন্ধকতা বা ইনটেস্টিনাল অবস্ট্রাকশন হল এমন এক জটিল অবস্থা, যা খাদ্য বা তরলকে ছোটো অন্ত্র বা বড়ো অন্ত্রের (কোলন) মধ্য দিয়ে যেতে বাধা দেয়। অন্ত্রের প্রতিবন্ধকতার কারণগুলির মধ্যে, অস্ত্রোপচারের পরে গঠিত পেটে টিস্যুর ফাইব্রাস ব্যান্ড (আঠালো) অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। সেইসঙ্গে, হার্নিয়াস, মলাশয়ের ক্যান্সার, নির্দিষ্ট ওষুধ অথবা স্ফীত অন্ত্র থেকে ক্রোনস ডিজিজ বা ডাইভার্টিকুলাইটিস হতে পারে।