ফুসফুসের ক্যান্সারের স্ক্রিনিং-এর বিষয়ে যোগাযোগ ও সচেতনতা বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষকরে, জনসংখ্যার যে অংশ বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে, তাদের জন্য। কারণ, ভারতে ৮.১% মৃত্যু ঘটে ফুসফুসের ক্যান্সার থেকে এবং সব ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে ৫.৯% হল ফুসফুসের ক্যান্সার। তাই, ভারতের প্রথম 'লাং-লাইফ স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম'-এর সূচনা করেছে অ্যাপোলো ক্যান্সার সেন্টার। এই আর্লি স্ক্রিনিং আরও সুফল দেবে এবং বেঁচে যাওয়ার হারও বাড়াবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞ চিকিতসকেরা।
ক্যান্সারের গবেষণার জন্য আন্তর্জাতিক এজেন্সি-র (আইএআরসি) তৈরী করা ‘গ্লোবক্যান ২০২০’–র আনুমানিক হিসাব দেখায় যে, ক্যন্সারজনিত মৃত্যুর কারণগুলির মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে ফুফুসের ক্যান্সার, যেখানে ২০২০ সালে এই রোগের ফলে বিশ্বে প্রায় ১.৮ মিলিয়ন (১৮%) মৃত্যু ঘটেছে।
'লাং-লাইফ স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম' সেইসব ব্যক্তিদের উপর লক্ষ্য স্থাপন করে, যাদের ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। যেমন: (i) ৫০ থেকে ৮০ বছর বয়সের মধ্যে থাকা লোকেরা, (ii) অ্যাসিম্পটোম্যাটিক (ফুসফুসের ক্যান্সারের কোনও চিহ্ন বা উপসর্গ না থাকা), (iii) ধূমপান করার উল্লেখযোগ্য ইতিহাস থাকা লোকেরা এবং (iv) পরিবারের ফুসফুসের ক্যান্সারের ইতিহাস আছে এমন লোকেরা।
টোমোগ্রাফি-র (এলডিসিটি) মাধ্যমে আর্লি স্ক্রিনিং সহায়তা করতে পারে এবং বেঁচে যাওয়ার হার উল্লেখযোগ্য ভাবে উন্নত করতে পারে। তবুও বেশি ঝুঁকিতে থাকা প্রায় ৮০% ব্যক্তিরা কখনও তাদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের সঙ্গে স্ক্রিনিংয়ের কথা আলোচনা করেন না।
অ্যাপোলো ক্যান্সার সেন্টার, কলকাতার সিনিয়ার কনসালটেন্ট পালমোনোলজি, ডা. অশোক সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, ‘বিশ্বব্যাপী মারাত্মক ক্যান্সারগুলির মধ্যে অন্যতম হল ফুসফুসের ক্যান্সার, কিন্তু আর্লি স্ক্রিনিং করলে বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়। 'লাং-লাইফ স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম'-এর মাধ্যমে, আমাদের লক্ষ্য হল-- গোড়াতেই বেশি ঝুঁকিতে থাকা লোকেদের সনাক্ত করা।’
এই লাং-লাইফ স্ক্রিনিং করা হবে কম-ডোজের উন্নত সিটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে। কারণ, এটা নিখুঁতভাবে রোগনির্ণয়ের সম্ভাবনা সর্বাধিক করার পাশাপাশি, রেডিয়েশনের মাত্রা ন্যূনতম করে। এই প্রোগ্রামটি বিশেষ ভাবে সেইসব ব্যক্তিদের জন্য প্রভাব ফেলে, যারা অতীতে ধূমপান করেছেন বা এখনও করছেন, প্যাসিভ স্মোকিংয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বা যাদের পরিবারের ফুসফুসের ক্যান্সারের ইতিহাস রয়েছে।