কাজের চাপ, মানসিক চাপ কিংবা নানারকম অস্থিরতার কারণে রাতে ঘুম কমছে অনেকের। আর এই ‘ঘুম-বঞ্চনা’ বিপজ্জনক! যদি দিনেরবেলায় ঘুম-ঘুম ভাব, অবসন্নতা, দেহের ওজন বেড়ে যাওয়া, মস্তিষ্ক ও নার্ভতন্ত্রের স্বাভাবিক কাজে বিঘ্ন ঘটা প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে সাবধান! কারণ, হৃদরোগ, কিডনি বিকল, উচ্চ রক্তচাপ, মধুমেহ প্রভৃতি অসুখের কবলে পড়তে পারেন আপনি। তাই, এর থেকে কীভাবে পরিত্রাণ পাবেন, সেই বিষয়ে আলোকপাত করছেন ডা. সৌজাত্য চক্রবর্তী।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের সময় কতটা?
রাতে খুব ভালো ঘুমের জন্য সারাদিনে আপনাকে পরিশ্রম অবশ্যই করতে হবে। ঘুমের প্রয়োজনীয়তা কিছুটা ব্যক্তি বিশেষের ওপর নির্ভর করে। তাহলেও একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে সারাদিনে তাদের কাজকে ভালো ভাবে করতে হলে, প্রতি রাত্রে অন্তত ৭ থেকে ৯ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। শিশুদের ও টিনএজারদের ক্ষেত্রে এর চেয়েও বেশি পরিমাণে ঘুমের প্রয়োজন। মানুষের শারীরিক, মানসিক ও দৈহিক বিকাশের জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম কেন প্রয়োজন হয়?
শারীরিক স্বাস্থ্য গঠনের জন্য ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, আপনার দেহের হৃৎপিণ্ড ও রক্তবাহের মেরামতি ও নিরাময় করার কাজে ঘুম সাহায্য করে থাকে। নিয়মিত ঘুমের অভাবের কারণে হৃদরোগ, কিডনির রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং স্ট্রোক-এর মতো অসুখের ঝুঁকিকে বাড়িয়ে তোলে।
‘ঘুম বঞ্চনা’ কাকে বলে?
যখন পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের ঘাটতি হয়, তখন ওই অবস্থাকে বলে ‘ঘুম বঞ্চনা’। এটা ক্রনিক অথবা তীব্র মাত্রায় হতে পারে। ক্রনিক ‘ঘুম বঞ্চনা’ অবস্থায় দিনের বেলায় ক্লান্তি বোধ হয়, তখন ঘুম ঘুম ভাব দেখা দেয়, অবসন্নতা এবং দেহের ওজন বৃদ্ধির ঘটনাও ঘটে। এই অবস্থা দেহের মস্তিষ্ক ও নার্ভতন্ত্রের স্বাভাবিক কাজে বিঘ্ন ঘটায়। কম পরিমাণে ঘুমের কারণে দেহে ইনসুলিনের প্রতিরোধ বাড়িয়ে তোলে। এর ফলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস-এর সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কম পরিমাণে ঘুমের কারণে সিআরপি বেড়ে যায় অথবা সি-রিঅ্যাক্টিভ প্রোটিন বাড়ে, যা স্ট্রেস এবং প্রদাহকে বাড়িয়ে তোলে। যদি দেহে সিআরপি উচ্চ মাত্রায় দেখা দেয়, তখন কার্ডিওভাস্কুলার রোগ কিংবা হৃদরোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।