একদিকে বিয়ের খরচ, স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ির সেবা করার হ্যাপা, বাচ্চা বড়ো করার ঝামেলা! আবার অন্যদিকে বিয়ে না করলে একাকিত্বের যন্ত্রণা, সমাজের চোখে খারাপ হওয়ার ভয়! সমাজে আরও একটি শ্রেণী আছে,যারা সমকামিতার সম্পর্কে লিপ্ত। সমকামিতার সম্পর্কগুলো বর্তমান সামাজিক কাঠামোয় আর রেখে ঢেখে রাখার বা অপরাধী হয়ে থাকার মতো বিষয় নয়৷আর আগের মতো অবাক হওয়া উচিত নয় এই সম্পর্কের কথা শুনলে৷এই সম্পর্কে তুলনায় যেমন ঝামেলা কম, ঠিক তেমনই শরীর-মনের চাহিদা পূরণ হয় এবং স্থায়ী জীবনসঙ্গিনীও পাওয়া যায় – এমনটাই মনে করছেন এই কমিউনিটির মানুষরা।
ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান করে আইন স্বীকৃত নারী-পুরুষের বৈবাহিক বন্ধনও তো ভেঙে যায়, তাহলে সমকামিতায় ভয় কীসের? বরং এই সম্পর্কের মাঝখানে কোনও সন্তান থাকে না, তাই সম্পর্ক ভেঙে গেলেও সমস্যা কম এটাই বলছেন সমাজ পর্যবেক্ষকরাও।
এটা সমাজের এক ধরনের রক্ষণশীল মনোভাব কিংবা বলা যায় পিছিয়ে থাকা মানসিকতা যে, নারী-পুরুষকে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতেই হবে এবং তারা বংশবিস্তার করবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানসিকতারও বদল দরকার৷কারণ সেক্সুয়াল প্রেফারেন্স-এর বিষয়টি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত পছন্দের উপর নির্ভরশীল৷
এদিকে সব সমলৈঙ্গিক সম্পর্কে শরীর-মনের চাহিদা একরকম থাকে না। এই সম্পর্ক বিয়ের পরও হতে পারে। অর্থাৎ কারওর স্ত্রী যদি স্বামীর সঙ্গে মানসিক কিংবা শারীরিক সম্পর্কে তৃপ্ত না হন, আর তখন যদি অন্য কোনও নারীর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে সম্পর্ক গড়েন, তাহলে আপত্তি কোথায়? এটা সমাজের সমকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গী যে, সমাজ এই ধরনের সমকামী সম্পর্ককে সহজ ভাবে মেনে না নিয়ে খারাপ সাব্যস্ত করে। কেউ কেউ মনে করেন সমকামিতা একটা বড়ো অপরাধ। আসলে, মানুষ স্বাভাবিক ভাবে যা দেখে অভ্যস্ত, তার ব্যতিক্রম ঘটলেই হইচই জুড়ে দেয়!
তবে এ প্রসঙ্গে একটা কথা জেনে রাখা ভালো যে, অন্যান্য সম্পর্কে যেমন তিক্ততা তৈরি হতে পারে, ঠিক তেমনই সমকামী সম্পর্কেও ঝগড়া-বিবাদ হতে পারে। এমনকী দুই সমকামী পুরুষ বা নারীর সম্পর্ক ভেঙেও যেতে পারে এবং এক্ষেত্রে সম্পর্ক হতে পারে অসফল। অসুস্থতা কিংবা দুর্ঘটনায় সঙ্গীর মৃত্যু হলে বিষয় সম্পত্তি নিয়ে সমস্যাও তৈরি হতে পারে অন্যান্য সম্পর্কের মতোই। সামাজিক কটাক্ষ সহ্য করতে না পেরে সম্পর্ক ভেঙে দেওয়ার ঘটনাও ঘটতে পারে। অর্থাৎ, সম্পর্কেও ভালোমন্দ দুই-ই আছে।