দীপাবলি মানেই বাড়ির অন্দরে বিশেষ পরিবর্তন আনার পালা। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থেকে শুরু করে ডেকরে অনেকটা বদল আনেন সকলে। রংগোলি এবং প্রদীপ দিয়ে করা হয় মন রাঙানোর প্রস্তুতি ও আলোকসজ্জা। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবের হইচই, তাসখেলা, এমনকী জুয়া খেলাও চলে অবাঙালিদের মধ্যে। এটা উত্তর ভারতীয় ঐতিহ্য। বন্ধু ও পরিবারের মধ্যে উপহার আদানপ্রদান করা, আতশবাজি পোড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মিষ্টিমুখের আয়োজন এই সবকিছুই কেমন যেন নেশা ধরিয়ে দেয়। কিন্তু কেন এত আয়োজন? কেন Diwali -তে এই হই-হুল্লোড়? এর পিছনে রয়েছে অনেক কারণ।
ধনতেরাস : দীপাবলির উৎসব চলে পাঁচদিন ধরে। সূচনা হয় Dhanteras দিয়ে৷ সোনা এবং নতুন বাসন কেনার জন্য দিনটিকে শুভ মানা হয়। এর নেপথ্যে বিশ্বাস এই যে, এগুলি স্বাস্থ্য ও সম্পদের প্রতীক।
ছোটো দীপাবলির উৎসব (Chhoti Diwali) : দ্বিতীয় দিনটিতে শ্রীকৃষ্ণ অসুররাজ নরকাসুরের উপর বিজয় লাভ করেছিলেন। তাঁর বরে নরকাসুরের মৃত্যুর দিনটিকে আতশবাজি জ্বালিয়ে এবং সকলকে মিষ্টিমুখ করাবার প্রথা বহুযুগ ধরে চলে আসছে। দিনটিকে নরকাচতুদর্শী বলেও অভিহিত করা হয়।
বড়ো দীপাবলির উৎসব (Badi Diwali) : তৃতীয় দিনটি প্রধান দীপাবলি উৎসবের। এদিনটা মানা হয় অশুভ-র উপর শুভ-র জয় হিসেবে। মনে করা হয় শ্রীরাম এদিনেই স্ত্রী-সীতা এবং ভাই লক্ষ্মণকে নিয়ে চোদ্দো বছরের বনবাস কাটিয়ে অযোধ্যায় ফিরেছিলেন। অযোধ্যার মানুষ অমাবস্যার অন্ধকার দূর করার জন্য শ্রীরামকে স্বাগত জানিয়েছিল গোটা শহর প্রদীপের আলোয় প্রজ্জ্বলিত করে।
আবার অনেকে মনে করেন অমাবস্যা থাকার ফলে দেবী লক্ষ্মীর অন্ধকারে গৃহে প্রবেশ করতে অসুবিধা হতে পারে, তাই প্রদীপের আলোয় ঘর আলোকিত করে তাঁকে সাদরে অভ্যর্থনা জানানো হয়। দীপাবলি উত্সবের এই প্রথা আজও দেশের প্রায় প্রতিটি কোণায় সমান আড়ম্বরে পালিত হয়।
দীপাবলির দিনটি শুরুই হয় ভোর ভোর স্নান করে নেওয়ার নিয়ম মেনে। বেসন, চন্দন, সুগন্ধি ফুলের গুঁড়ো এবং এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে, তা দিয়ে গাত্র মার্জনা করা হয়। সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে এটি ব্যবহার করা হলেও, এর নেপথ্যে লুকিয়ে আছে মানুষের বিশ্বাস সমস্ত পাপ এবং নেতিবাচক ভাবনা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা।