নিজের একটা ভালো বাড়ি থাকবে, একটা গাড়ি থাকবে, ভবিষ্যৎ সুরক্ষার জন্য ব্যাংক-এ মোটা টাকা জমা থাকবে, ছেলেমেয়েদের ভালো স্কুল-এ পড়ানো যাবে এমন স্বপ্ন বা ইচ্ছে থাকে প্রায় প্রতিটি মানুষেরই। কিন্তু, এই স্বপ্ন পূরণ হয় না সকলের। কারণ, টাকার মূল্য যে-ভাবে কমছে, তাতে সংসারের ব্যয়ভার বহন করার পর, খুব বেশি টাকা সঞ্চয় করা সকলের পক্ষে সম্ভব হয় না।
তাছাড়া, কোনওরকমে মোটা টাকা জমিয়ে কিংবা জমানো টাকা নিঃশেষ করে বড়ো বাড়ি কিংবা দামি গাড়ি কিনলেই তো আর সমস্যা মিটল না। বরং ঝামেলা বাড়ল। কারণ, বড়ো বাড়ি মানেই জমা দিতে হবে বেশি টাকা সম্পত্তি কর, দামি গাড়ি মানেই মেন্টেনেন্স খরচও বেশি পড়বে। আর এই বিলাসবহুল জীবনযাপনের বিপুল খরচ মেটাতে গিয়ে অনেকসময় আর্থিক সমস্যায় পড়েন অনেকে এবং ঠিক তখনই সম্পত্তি বন্ধক কিংবা বিক্রির বিষয়টি সামনে এসে দাঁড়ায় দুর্ভাগ্যক্রমে।
এই প্রসঙ্গে প্রথমেই জানিয়ে রাখি, কোনও বিপদ কিংবা প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হলেও, চট করে জমি-বাড়ি বিক্রি না করে, বন্ধক রাখার সিদ্ধান্ত নেবেন। কারণ, আপনি যে দামে জমি-বাড়ি বিক্রি করবেন, সেই দামে আর জমি-বাড়ি কিনতে পারবেন না। তাছাড়া, জমি কিংবা বাড়ি বিক্রির পর আপনার আর্থিক সমস্যা মিটতে নিশ্চয়ই অনেকদিন গড়িয়ে যাবে এবং ওই সময়ের ব্যবধানে জমি-বাড়ির দাম আরও বেড়ে যাবে। অবশ্য যদি একাধিক জমি-বাড়ি থাকে, সেক্ষেত্রে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। কিন্তু যদি তা না থাকে, তাহলে বাড়ি বিক্রির পর পুনরায় বাড়ি কেনা পর্যন্ত ভাড়াবাড়িতে আশ্রয় নিতে হবে এবং বাড়ি ভাড়া বাবদ যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হবে, তা বাড়ি বন্ধক রেখে টাকা নিয়ে সুদ মেটানোর থেকে অনেক বেশি। কিন্তু মুশকিল হল এই যে, বেশিরভাগ মানুষ দেনার দায়ে জমি-বাড়ি হারানোর ভয়ে বন্ধক রাখতে চান না। আসলে এই ভয়ের কারণ হল অজ্ঞতা। সঠিক নিয়মকানুন জেনে বুঝে, সঠিকভাবে চুক্তিপত্রকে মাধ্যম করে জমি-বাড়ি বন্ধর রেখে ঋণ নেন না অনেকে। অতএব, জমি-বাড়ি বিক্রি না করে, বন্ধক রেখে ঋণ নিতে হলে কী কী বিষয় গুরুত্ব সহকারে দেখে নিতে হবে, তা জেনে নিন বিশদে।