বিয়ের পর দাসত্ব করেই যেন সামাজিক কর্তব্য পালন করছেন মহিলারা৷ দুঃখজনক হলেও এখনও এমনটাই ঘটে আমাদের সমাজে। কিছু মাস আগে বুলন্দ শহরের এক তরুণী, তার স্বামীকে ছেড়ে একজন শ্রমিকের সঙ্গে থাকা শুরু করেন কোনও কারণে। কিন্তু মেয়েটির স্বামী ওই প্রেমিকের বাড়িতে ঢুকে তার প্রাক্তন স্ত্রীকে শাসিয়ে আসার পর, আদালতের দারস্থ হয়েছেন ওই তরুণী।
Post marriage Problems -এর এই ঘটনাকে অনৈতিক আখ্যা দিয়েছেন এলাহাবাদ হাইকোর্ট-এর জাস্টিস ড. কৌশল জয়েদ্রত ঠাকুর এবং জাস্টিস সুভাষ চন্দ্র। তাঁদের বক্তব্য এই ঘটনায় অভিযোগকারিণীর পক্ষে রায় গেলে সমাজে ভুল বার্তা পৌঁছোবে। তাঁরা অবশ্য লিভ ইন রিলেশনকে মান্যতা দিয়েছেন এবং শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে নারীর ইচ্ছেকে গুরুত্ব দিয়েছেন। কিন্তু এই বিষয়ে ওই তরুণীকে আদালত বিশেষ গুরুত্ব দিতে চায়নি, সামাজিক নৈতিকতার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে৷
ভুলে গেলে চলবে না, ভারতে বিয়ে এক আইনি বোঝাপড়া এবং এর মধ্যে ধর্মীয় অনুশাসন রয়েছে। কিন্তু দুজনের সম্মতিতে যতদিন এই সম্পর্ক বজায় রাখা যায়, ততদিনই একসঙ্গে থাকা উচিত, তার বেশি নয়। এ তো এমন নয় যে, দুই ভাইয়ে মনোমালিন্য হওয়া সত্ত্বেও এক ঘরে বাস করতে হবে কিংবা দুই সহকর্মীর মধ্যে ঝগড়া হলেও পাশাপাশি বসতে বাধ্য হবে! আইন ততক্ষণই সহবাসের অনুমতি দেয়, যতক্ষণ উভয়ের সম্মতি থাকবে।
আসলে নিজের অধিকার ফলানো বৃহত্তর পুরুষ সমাজ এবং সমসারের ক্ষুদ্র স্বার্থান্বেষীরা ভয়ে থাকেন এই ভেবে যে, নারী যদি পূর্ণ স্বাধীনতা পেয়ে যায় তাহলে তো আর বশ্যতা স্বীকার করবে না কিংবা দাসত্ব করবে না! এলাহাবাদ হাইকোর্টও উদারতা দেখাতে পারেনি, তাই এই সামাজিক বিষয়টি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যদি কোনও বিবাহিতা তার স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে না চান এবং যদি আদালতে তার ইচ্ছের কথা জানান, তাহলে দেরি না করে, এক ঘন্টার মধ্যে তার বিবাহবিচ্ছেদের ব্যবস্থা করা উচিত আদালতের। এক্ষেত্রে যদি সন্তান কিংবা সম্পত্তি সংক্রান্ত জটিলতাও থাকে, তাহলে তা পরে মেটোনো যেতে পারে কিন্তু বিচ্ছেদ দ্রুত হওয়া উচিত নারীর ইচ্ছেমাফিক।