বেশিরভাগ পরিবারে দেখা যায়, নারী তার সমস্ত গুণ এবং শক্তি দিয়ে পরিবারকে সুখময় করতে চায়। প্রাকৃতিক নিয়মেই নারীরা সংসারের হাল ধরেন শক্ত হাতে। এর জন্য তারা অনেক সময় আত্মসুখ বিসর্জনও দিয়ে থাকেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল এই যে, এত কিছু ত্যাগ স্বীকার করার পরও নারীর উপর অত্যাচার বন্ধ হয়নি। আর এইসব অত্যাচারের প্রতিফলন ঘটছে, কুপ্রভাব পড়ছে নারীর দেহে-মনে। তাদের চিত্ত তাই দোলাচলে। কখনও তারা বিরক্ত, কখনও তৈরি হচ্ছে মানসিক অস্থিরতা এবং অস্তিত্বের সংকট। কিছু ক্ষেত্রে নারী আজ দিশাহারা, তাই খুঁজছে অস্তিত্বের অর্থ। কিন্তু কবে কাটবে এই অস্তিত্বের সংকট?
বিড়ম্বনা
শিক্ষা, বুদ্ধি কিংবা প্রতিভার জোরে বিজ্ঞান, চিকিৎসা, কলা, সাহিত্য প্রভৃতি ক্ষেত্রে কিছু মহিলা নিজের আসন প্রতিষ্ঠা করে নিতে পারলেও, সেই সংখ্যাটা খুব বেশি নয়। অবশ্য বিড়ম্বনার বিষয় এটা নয়, বিড়ম্বনা তখন তৈরি হয়, যখন এইসব প্রতিষ্ঠিত মহিলারাও কেউ কেউ নিজের পরিবারে বাবা, ভাই কিংবা স্বামীর দ্বারা প্রতারিত হন, অত্যাচারিত হন, তখন এরা চুপ করে থাকেন। আর এই অন্যায়ের সঙ্গে আপস করে নেওয়ার বিষয়টি মস্ত বিড়ম্বনা ছাড়া কিছু নয়। অবশ্য বিড়ম্বনার বিপরীত ছবিও দেখা যায়।
অত্যাচার কিংবা প্রতারণা নয়, পরিবারের কোনও পুরুষ সদস্য যখন রান্না কিংবা ঘরের কাজে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন, তখন প্রতিষ্ঠিত কিছু মহিলাও পুরুষের সাহায্যের বিষয়টিকে ‘নারীসুলভ স্বভাব' বলে হেয় করেন। মহিলাদের এই চারিত্রিক বৈপরিত্য তাদের নিজেদেরই অসহায় করে তুলছে। অবশ্য শুধু এই বিষয়গুলিই নয়, বিড়ম্বনার এমন আরও অনেককিছু আছে, যার ফলে মহিলারা অস্তিত্বের সংকট কাটিয়ে উঠতে পারছেন না পুরোপুরি।
জেগে ওঠার সময়
মহিলারা যত বিচক্ষণ এবং বিশ্লেষক স্বভাবের হবেন, ততই তারা অস্তিত্বের সংকট থেকে মুক্তি পাবেন। শুধু অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপালেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে না, নিজেদের দোষত্রুটিগুলি খুঁজে বের করেও শোধরাতে হবে। যেমন, যে-পুরুষমানুষটি ধর্ষণ করে, স্ত্রীর উপর অত্যাচার করে, সেও কিন্তু কোনও মায়েরই সন্তান। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে, প্রত্যেক সন্তানের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বেশিরভাগটাই গড়ে ওঠে ছোটোবেলায়। আর ছোটোবালায় বাবা-র থেকে মায়ের আদর্শকেই বেশি করে আপন করে নেয় সন্তান।