সকলেই হয়তো স্বপ্ন দেখেন ভাড়ার নয়, নিজের একটি বাসস্থান হবে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম তো এখন সুরক্ষা ও সুবিধার কথা ভেবে, ভালো হাউজিং প্রোজেক্ট-এ বাসস্থান খুঁজছেন। এই সব হাউজিং প্রোজেক্ট শহরের বাইরে, চাষের জমির উপর ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠছে। ল্যান্ডস্কেপ গার্ডেন, সুইমিং পুল, জিম, সিকিউরিটি-সহ নানা পরিষেবার লোভনীয় অফার দিয়ে তারা বড়শিতে গাঁথছেন অবস্থাপন্ন গ্রাহককে।
কিন্তু মুশকিলের বিষয় হল এই গ্রাহকেরা মোটেই তাদের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে এই বাসস্থান ক্রয়ে সামিল হচ্ছেন না। বরং সকলেই ব্যাংক লোনের উপর নির্ভরশীল। আরবিআই (রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া)-এর একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, মার্চ ২০২৩ পর্যন্ত এই সব গৃহপ্রকল্পের বিক্রি বেড়েছে ২১.৬ শতাংশ। সেই সঙ্গে গৃহঋণের বকেয়া অর্থ ১৯,৭৬,৪২৮ কোটিতে এসে পৌঁছেছে।
এটা খুবই আনন্দের বিষয় যে মানুষ নিজের স্বপ্ন সাকার করার জন্য একটি ভালো বাসস্থানের চাহিদা তৈরি করছেন। কিন্তু যে-বিপুল পরিমাণ ঋণে তারা জর্জরিত হয়ে যাচ্ছেন, তা শোধ করতে জীবনের একটা বড়ো সময় ব্যয় হয়ে যাচ্ছে। ইএমআই-এর প্রেশার ছাড়াও কোনও মাসে কিস্তির টাকা দেওয়ার ডেট মিস করলেই পিনাল ইন্টারেস্ট- এর বোঝা চাপবে। কেউ কেউ ঋণের বোঝা টানতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন।
গোটা দেশেই এমন অসংখ্য তালাবন্ধ নির্মীয়মান ফ্ল্যাট দেখতে পাবেন, যেগুলি অ্যালট হয়ে গেছে বটে কিন্তু কিস্তির টাকা মেটাতে না পারায় পজেশন দেওয়া স্থগিত হয়ে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী যতই কেন না বলুন যে গত ১০ বছরে ভারতের আর্থিক স্থিতি দশম স্থান থেকে পঞ্চম স্থানে এগিয়ে এসেছে গোটা বিশ্বের আর্থিক অবস্থার নিরিখে। সত্যটা হল ২০১৫ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে মানুষের আয় ১৬০০ ডলার থেকে ২০০০ ডলারে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ ৪০০ ডলার গ্রোথ। কিন্তু ভিয়েতমানের মতো পিছিয়ে পড়া দেশেও প্রতি ব্যক্তির আয়, ২০৫৫ ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ৩০২৫ ডলার। সিঙ্গপুরের মতো সমৃদ্ধশালী দেশে তো সংখ্যাটা ৫৯,১১২ ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ৬৯,৮৯৬ ডলার।