সরকার জোর করে বা আইন প্রণয়ন করে যা করতে পারেনি, মহিলারা নিজেরাই তা করে দেখিয়েছেন। বিশ্বের জনসংখ্যা কমানোর নীরব উদ্যোগ নিয়েছেন মহিলারাই। এখন পরিসংখ্যানবিদদের সব ভবিষ্যৎ বাণী ভুল প্রমাণিত হয়েছে। তারা জানিয়েছিলেন যে, পৃথিবীর উপর জনসংখ্যার বোঝা এতটাই বাড়বে যে, সর্বত্র নাকি লুণ্ঠন চলবে, জলের অভাব দেখা দেবে, মানুষ আশ্রয়হীন হবে, খাদ্যদ্রব্যের অভাব দেখা দেবে ইত্যাদি। কিন্তু এখনও এমন কিছু ঘটার কোনও সম্ভাবনা দেখা দেয়নি। কিছু মানুষের আশংকা ছিল যে, ২১০০ সালের মধ্যে বিশ্বের জনসংখ্যা ১২ গুন বাড়বে। এখন মনে হচ্ছে, তেমন কিছুই ঘটবে না। এখন জাপানে প্রতি ঘন্টায় ১০০ জন কমছে, চীনে আগামী ৩০ বছরে জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এখন বিশ্বে স্থিতিশীল জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার ২.১ থেকে ০.৭৯-এ নেমে এসেছে। ভারতেও জনসংখ্যা এমন কিছু বাড়ছে না বরং কোভিডের সময় থেকে জনসংখ্যা কিছুটা কমতে শুরু করেছে। কারণ গর্ভ নিরোধকের ব্যবহার যেমন বাড়ছে, ঠিক তেমনই মেয়েরা এখন বেশিরভাগই এক সন্তানের বেশি চাইছেন না। তাই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের এই কৃতিত্ব মহিলাদেরকেই দিতে হবে বেশিটা। সেইসঙ্গে, মহিলারা এখন বুঝিয়ে দিয়েছেন, তারা আর বাচ্চা উৎপাদনের যন্ত্র নয়। তারা পুরুষের মতো স্বাধীন জীবনযাপন করতে চান। যদি কেউ বাচ্চাদের যত্ন নিতে প্রস্তুত থাকে, তবেই তারা মা হতে চাইছেন, অন্যথায় তারা সন্তান ছাড়াই সুখী।

একজন শহুরে শিক্ষিত, উপার্জনকারী এবং স্মার্ট মেয়ে এক সন্তানকেই সুন্দর ভাবে মানুষ করতে চান, একাধিক সন্তানে তারা আর আগ্রহী নন। যদি পুরুষরা তাদের বংশধরদের নিয়ে চিন্তিত হন কিংবা কে তাদের শ্মশানে নিয়ে মুখাগ্নি করবে ভাবতে থাকেন, তাহলে তারা সন্তান উৎপাদনের জন্য সারোগেট মায়ের সাহায্য নিতে পারেন বলে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে চলেছেন আজকের মহিলারা। গর্ভ ভাড়া দিয়ে সন্তান প্রসব করতেও কুণ্ঠিত নন কিছু মহিলা। তাই কিছু লোক যারা বেশি চিন্তা করেন, তাদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। এখন মহিলারা উদ্যোগী বলেই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রিত হয়ে চলেছে। কারণ তারা এখন বোঝেন যে, লোক কম মানেই ছোটো ঘর, কম চাহিদা, কম উৎপাদন।

অতএব, বেশি কথা বলবেন না। কারণ, মহিলারা এখন বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, পুরুষদের প্রয়োজন যৌনতার জন্য, শুধু সন্তান উৎপাদনের জন্য নয়। তাই বলা যায়, নারীরা চাইলে পৃথিবী বদলে দিতে পারেন।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...