হিন্দু মানসিকতা একদিকে ইসলামি মানসিকতার মতো। কারণ, হিন্দু কট্টরপন্থীরা আন্তর্জাতিক গায়িকা রিহানা এবং ক্লাইমেট অ্যাক্টিভিস্ট গ্রেটা থুনবর্গ-কে চুপ করিয়ে রাখতে চান। আবার ইসলামি দেশ তুর্কির রাষ্ট্রপতি রেচপ তৈয়প এরডোগানও কট্টরপন্থীদের পথ ধরে চলছেন।
অ্যাক্টিভিস্ট আয়সে বুগরা উচ্চশিক্ষিত এবং অধ্যাপক। কিন্তু তিনিও তাঁর স্বামীর দ্বারা, এমনকী শাশুড়ির দ্বারাও অত্যাচারিত হয়ে মুখ খুলতেই বিপত্তি। কট্টরপন্থীরা আয়সের বিরুদ্ধাচরণ করেছেন। এরডোগানও এই অ্যাক্টিভিস্ট-এর পাশে নেই। আয়সের এমনই অবস্থা এখন, তিনি যেন স্বামীর সম্পত্তি ছাড়া আর কিছু নন, কোনও সত্ত্বা নেই তাঁর। যেমন, ভগয়া গ্যাং-এর মতে, সোনিয়া গান্ধি এক বার-ডান্সার।
হিন্দু মেয়েদের ভালোর জন্য আজ অবধি কিছু ভাবা হয়নি। না কোনও কর্মসংস্থান, না কোনও ন্যায্য অধিকার পূরণের ব্যবস্থা। কৃষক আন্দোলনে অংশ নেওয়া মহিলাদের সরে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে বারবার। কারণ, অপসংস্কৃতির ধারক বাহকরা চায় না, পুরুষদের সঙ্গে সমানতালে কাঁধে কাঁধ মেলাক মহিলারা। নাগরিক সংশোধন আইনের বিরোধকারীদের দিল্লির শাহিনবাগে আটকে দেওয়া হয় এই ভয়ে যে, ওরাও যদি রাজনীতিতে অংশ নেয় তাহলে নেতা-মন্ত্রীদের কী হবে?
মহিলাদের সেবাদাসী বানিয়ে রাখার বিষয়টি আসলে সুপরিকল্পিত। যতই নারী স্বাধীনতার বুলি কপচানো হোক না কেন, বেশিরভাগ পুরুষই নারীদের নীচু নজরে দেখেন। বাবা কিংবা স্বামীর দ্বারা নয়, নিজের ক্ষমতাবলে আমেরিকায় উপরাষ্ট্রপতির পদ পেয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভত কমলা হ্যারিস। কিন্তু আমাদের ভারতে এই কমলা হ্যারিসের জন্য গর্ব অনুভব তো দূরে থাক, তাঁর ভাইঝি মীনা হ্যারিস যখন কৃষক আন্দোলনে শামিল হন, তখন তাঁর সম্পর্কে খারাপ কথা বলা হয়। এ আসলে চরিত্র হননেরই সমান।
ইসলামি এবং হিন্দু কট্টরপন্থীরা কখনওই চায় না মহিলারা উচ্চপদে বসুক, উপযুক্ত সম্মান পাক। তাই, যতক্ষণ কট্টর নেতাদের হাতে ক্ষমতা থাকবে, ততক্ষণ মহিলারা সাজানো পুতুলের মতোই থাকবেন। তারা শুধু পুরুষদের জন্য ত্যাগস্বীকার এবং আত্ম বলিদান করে যাবেন, এটাই তাদের ভবিতব্য।