‘ডিভোর্স! কিছুতেই নয়।’

কাঁপা গলায় সিদ্ধান্ত জানাল রূপম। সবে অষ্টমঙ্গলা পেরিয়েছে। উপহারের প্যাকেটগুলোও সব খোলা হয়নি। ফুরোয়নি আয়োজনের প্রশংসাও। তারই মধ্য ডিভোর্স? আজকাল অবশ্য ডিভোর্স নিয়ে মানুষের সংকোচ অনেকটাই কম। পাত্র-পাত্রীর বিজ্ঞাপনে তাই প্রচুর ডিভোর্সি। আধুনিকমনস্ক মানুষ হতাশা প্রশ্রয় দেয় না, ‘লেটস্ ট্রাই অ্যাগেন’-এ বিশ্বাসী। একবার ফেলিয়োর হয়েছে তো কী? পরের বার নিশ্চয়ই ক্লিক করবে। কিন্তু বাবার সামনে এসব যুক্তি অচল। নিজের পছন্দ করা পাত্রীর সঙ্গে ছেলের বিয়ে টিকল না, কিছুতেই মানতে পারবেন না। আসলে মানতে পারবেন না যে, নিজের সিদ্ধান্তে কোনও গলদ থাকতে পারে। লোকের চোখে জেদি একগুঁয়ে ঠেকলেও, রূপম জানে মানুষটার আত্মবিশ্বাস প্রবল। শুনলেই গুম মেরে যাবেন, আত্মগ্লানিতে জর্জরিত হবেন, তারপর অসুস্থ। দু’বার হার্ট অ্যাটাক হয়ে গিয়েছে। আর ঝুঁকি নেওয়া যায়?

বিয়েটা হয়েছিল সম্বন্ধ করে, ঘটকমশাইয়ের সৗজন্য। পাত্রী বারাসতের। পালটি ঘর। ঠিকুজি ও রাজজোটক। চার হাত এক হতে দেরি হয়নি। বারাসত থেকে সাড়ম্বরে হাবড়ায় এসে উঠেছিল সালঙ্কারা মৃত্তিকা। তারপর রাজারহাটের ফ্ল্যাটে। ফ্ল্যাট বুকিংটা করেছিল বাবা-ই। স্কুল শিক্ষকের সামান্য মাইনেও বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।   দূরদৃষ্টিতে বুঝেছিলেন, একসময় ছেলের কলকাতায় থাকার প্রয়োজন পড়বেই। তাই কষ্ট হলেও নিয়মিত মিটিয়েছেন কিস্তির টাকা। পড়াশুনায় রূপম বরাবরই ভালো। ক্লাসে ফার্স্ট ছাড়া সেকেন্ড হয়নি কখনও। জয়েন্টও এক চান্সেই। তারপর সেক্টর ফাইভে সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়র। বিয়ের আগেই ছেলের নামে ফ্ল্যাট লিখে দিয়েছিলেন বাবা। বেশিরভাগের মতো শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আঁকড়ে থাকেননি। নিজের জন্য হাবড়ার বাড়িই যথেষ্ট। এইরকম একজন আত্মত্যাগী মানুষ, যিনি সারাটা জীবন ব্যয় করলেন সন্তানের মঙ্গল কামনায়, তাঁকে কেমন করে বলবে ডিভোর্সের কথা? তাও বিয়ে মিটতে না মিটতেই!

প্রথমে রূপম, মৃত্তিকা, কেউই সমস্যাটা বুঝতে পারেনি। ফুলশয্যার রাত যেন ঘোর লাগা। দুজনেরই বিপরীত লিঙ্গের প্রথম সান্নিধ্য। স্বপ্ন, বাস্তব মিলেমিশে একাকার। আদরে, কথায়, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় রাত কাবার। পরদিনও বুঝতে পারেনি। তারপরদিনও না। মনে হয়েছিল নতুন-নতুন বোধহয় এরকমই হয়। আনকোরা অভিজ্ঞতায় অনভ্যস্ত শরীর-মনকে বোঝাপড়ার সময় দিতে হয়! প্রথম বুঝল মৃত্তিকা, অষ্টমঙ্গলায় বাপের বাড়ি গিয়ে। বান্ধবীদের কাছে তাদের বিবাহোত্তর অভিজ্ঞতা শুনে আশঙ্কা জাগল। ফিরে এসেই লজ্জা, সংকোচ ত্যাগ করে রূপমকে বাধ্য করল আপ্রাণ প্রচেষ্টায়। একবার নয় বারবার। অবশেষে ক্লান্ত অনুনয়, ‘আমি ডিভোর্স চাই’।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...