অনেকদিন পরে সেদিন বাজারে হঠাৎই রেণুর সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। দুহাতে দুটো ভারী থলে। খুবই বিধবস্ত মুখচোখ। বাজার করার পরিশ্রম আর অফিসে যাওয়ার তাড়া– এই দুটো মিলেজুলেই নিশ্চয় মুখে অমন ঘর্মাক্ত ও পর্যুদস্ত ছাপটা পড়েছে।

রেণু আমাদেরই প্রতিবেশী। একই পাড়ায় আমাদের দীর্ঘকালের বসবাস। আমাদের উত্তর কলকাতার এই পাড়াগুলোয় পারস্পরিক সম্পর্কগুলো এখনও যান্ত্রিক হয়ে পড়েনি। দেখা হলে কেবল সৌজন্যের হাসি হেসে আমরা সরে পড়ি না, বরং দু-দণ্ড দাঁড়িয়ে কথা বলে মনের ভার হালকা করি।

রেণুর সঙ্গে আমার চেনাজানা, এ পাড়ার বিয়ে হয়ে আসার পর থেকেই। আমরা প্রায় সমবয়সি। তবে আমারও বছর দুই আগে ওর বিয়ে হয়। মফস্সলের মেয়ে। আমার মতোই। তবে খাস কলকাতায় এসেও দিব্যি মানিয়েগুছিয়ে নিয়েছে। মনে আছে, আমার বিয়ের সময় স্বেচ্ছাসেবা দেওয়ার জন্য পাড়ার যে ব্যাটেলিয়ান তৈরি ছিল, তার পুরোভাগে ছিল রেণু। হালকা পাখির মতো পায়ে কতবার তাকে একতলা-দোতলা করতে দেখেছি। খলবল করে গোটা অনুষ্ঠানবাড়িটা যেন মাতিয়ে রেখেছিল।

অতএব, প্রাণোচ্ছ্বল রেণুকে যথেষ্ট বিষণ্ণ দেখে আমি কৌতূহল চাপতে পারলাম না। জিজ্ঞেস করলাম, ‘কী হয়েছে গো?’

আমার প্রশ্নটাও শেষ হতে পায়নি, রেণু যেন উছলে পড়ল, ‘আর বোলো না কল্পনা। আমি খুব ঝামেলার মধ্যে আছি।’

‘কী ঝামেলা?’ আমি এবার সত্যি অবাক হই।

‘কী ঝামেলা, কী বলব! আমার শাশুড়ি একেবারে নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাচ্ছেন ভাই। হাড়মাস কয়লা হয়ে গেল। এখন অফিস করব, নাকি এইসব ঝামেলা সামলাব, তাই বুঝতে পারছি না!’

রেণুর শাশুড়ির ছবিটা তক্ষুণি চোখের সামনে ভেসে উঠল। ভদ্রমহিলা বিধবা। কিন্তু ষাটের কোঠা পেরিয়ে গিয়েও বেশ সুস্থ, সুঠাম। আর ভদ্রমহিলার ব্যাপারে সেটাই প্রথমে নজর কাড়ে।

বছরপাঁচেক আগে রেণুর স্বামী রজতদা হঠাৎ-ই তার মাকে বর্ধমানে দেশের বাড়ি থেকে শহরে নিয়ে আসেন। তখন একসঙ্গে অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছিল আসলে। তার কিছুদিন আগেই রজতদার পিতৃবিয়োগ হয়েছে। ফলে দেশের বাড়িতে তার মা একেবারেই একা হয়ে পড়েছেন। আবার এদিকেও দুই ছেলে সামান্য বড়ো হয়ে যেতে রেণু চাকরি করার তাল ঠুকছে। অর্থাৎ উভয়েরই তখন পরস্পরকে প্রয়োজন।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...