রমাকান্তের পরামর্শ রবির মনেও খুব ধরেছিল। রবিও রোজ সকালে উঠে বাবাকে রান্নাঘরে কিছু না কিছু সাহায্য করতে আরম্ভ করল এবং একটু করে রান্নাও শিখতে লাগল।
আরতি আর সঙ্গীতা রান্নাঘরে এলেও রমাকান্ত তৎক্ষণাৎ ওদের বাইরে বার করে দিতেন আর ওরা মনের আনন্দে পার্কের দিকে হাঁটা লাগাত।
পার্কে মর্নিং ওয়াক আর ব্যায়াম সেরে দুজনে বাড়ি ফিরত যখন, গরম গরম ব্রেকফাস্ট ওদের জন্য অপেক্ষা করত। টেবিলে একসঙ্গে বসে নানা বিষয়ে ওদের আলোচনা হতো। সকালটা ভালো ভাবে কাটলে পুরোটা দিনটা ভালো করে কাটার সম্ভাবনা দ্বিগুন বেড়ে যেত। শ্বশুর-শাশুড়ি আসাতে সঙ্গীতার আনন্দ দিন দিন বাড়ছিল। সব কাজেই আরতি ওকে সাহায্য করতেন। ফলে সঙ্গীতারও অনেক সুরাহা হতো। অনেক কিছু নতুনও শিখল শাশুড়ির কাছে।
রবির মাঝেমধ্যেই বন্ধুদের সঙ্গে বসে মদ খাওয়ার ইচ্ছা হলেও সাহসে কুলোত না। মদের নেশার কারণে নিজের মা-বাবার ঝগড়া হোক সেটা ও একেবারেই চাইত না। ধীরে ধীরে মদ খাওয়ার অদম্য ইচ্ছা ওর মনে জাগা বন্ধ হয়ে গেল। রবির এই মানসিক পরিবর্তনে সঙ্গীতাও অত্যন্ত আনন্দিত হল।
এক সপ্তাহের উপর সকালে হাঁটা এবং ব্যায়াম করার ফলে সঙ্গীতারও মেদ ঝরতে আরম্ভ করেছিল। প্রায় দুই কেজি ওজন কম হওয়ার আনন্দসংবাদ সঙ্গীতা বাড়িতে খুব আগ্রহের সঙ্গে শেয়ার করল।
—কাল রবিবার। বউমার এই সাফল্যে আমরা কালই পার্টি করব। আমি আর সঙ্গীতা মিলে সব রান্না করব। আরতি এই ঘোষণায় সকলে হাততালি বাজিয়ে সায় দিল।
রবিবার সকালে রমাকান্ত রবির সঙ্গে গিয়ে বাজার থেকে সব প্রয়োজনীয় জিনিস এনে দিলেন। মাছ, মাংস, পোলাও, মিষ্টি - মেনুতে কিছুই বাদ রাখলেন না আরতি।
রান্নার প্রশংসায় সকলেই একমত হয়ে আরতিকে বাহবা দিতেই তিনি পরিষ্কার জানালেন— সঙ্গীতারও এতে সত্তর শতাংশ অবদান আছে।
—রেস্তোরাঁয় পাঁচ হাজার টাকা খরচ করলেও এত সুস্বাদু খাবার পাওয়া যেত না। রবি মা এবং বউকে উদ্দেশ্য করে কথাগুলো বলল।