বহুদিন পর নিজের জন্মস্থানের মাটিতে পা রাখলেন রমেন্দু সমাজপতি। মনে মনে হিসেব করে দেখলেন তা প্রায় কুড়ি বছর তো হল বটেই! বড়ো ছেলে রঞ্জন মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক দুটোতেই অসাধারণ রেজাল্ট করে আইআইটি-তে খুব সহজেই চান্স পেয়ে গিয়েছিল।

ছোটো ছেলে রাহুলও দাদার মতো দুর্দান্ত রেজাল্ট করে যাচ্ছিল। এইসময় রমেন্দুর ট্রান্সফার অর্ডার এল কলকাতায়। ওদের পড়াশোনোর কথা চিন্তা করে রমেন্দু কলকাতায় একটা ফ্ল্যাটও কিনে ফেললেন। এরপর হঠাৎ করেই পর পর দু'বছরের মধ্যে বাবা মা দু'জনেই গত হলেন।

সম্পত্তির ভাগ বাঁটোয়ারা নিয়ে অহেতুক কিছু বিবাদ তৈরি হল পরিবারে। রমেন্দু দেখলেন, কলকাতাতেই যখন তাঁর সবকিছু তখন দেশের বাড়ি ঘরদোর রেখে লাভ কী? ভাগের সম্পত্তি বিক্রি করে দিলেন। শিকড়টা ছিঁড়ে গেল চিরদিনের মতো।

সবকিছু বিক্রি করার যে খুব ইচ্ছে ছিল তা নয়, কিছুটা অভিমানেই অমনটা করেছিলেন রমেন্দু। বাবা মারা যেতেই ভাইয়েরা সম্পত্তির ভাগ নিয়ে এমন শুরু করে দিল যে, রমেন্দুর মন একদম ভেঙে গিয়েছিল। রাতারাতি ডিসিশন নিয়ে ফেললেন, আর এখানে কোনও দিন আসবেন না, ওদের মুখ দর্শনও করবেন না। যে-ব্যবহারটা ভাইয়েরা করেছিল তাতে ভবিষ্যতে ওদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার ইচ্ছেটাই মরে গিয়েছিল। জ্যাঠতুতো ভাই তিনুর কাছে রমেন্দু প্রায় অর্ধেক দামে বিক্রি করে দিয়েছিলেন নিজের অংশ।

বাড়ির সামনের কৃষ্ণচূড়া গাছটি আর নেই। ওরা কেটে ফেলেছে, কিংবা একা একাই মরে গিয়েছে। তিনু তিনতলা বাড়ি হাঁকিয়েছে। নীচে ওপরে ভাড়া, মাঝের তলায় তারা থাকে। তিনু এখন বেশ বড়োলোক। অঢেল টাকার মালিক।

অভিমান ভুলে ছোটো ভাই রাখালের বাড়িতেই উঠেছেন রমেন্দু। সম্পত্তি নিয়ে সবচেয়ে বেশি গোলমাল পাকিয়েছিল রাখালই। এখন বিশেষ ভালো নেই রাখাল। একটা কিডনি ড্যামেজ। ছেলে মেয়ে দুটো একেবারেই মানুষ হয়নি। কোনওরকমে চলছে তার।

ভাইদের জন্য নয়, জন্মভূমি আর বাল্যবন্ধু শিবতোষের টানেই এসেছেন রমেন্দু। শিবতোষের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ আছে। শিবতোষ সুযোগ পেলেই বলে, একবার এসে ঘুরে যা। কাদের ওপর অভিমান করছিস? কত পালটে গেছে আমাদের জন্মভূমি, একবার দেখতে ইচ্ছে করে না তোর?

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...