॥ ১ ॥

ভোরের কুয়াশা সরিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠছে নম্রতার পুরোনো শহর। বাসটা ক্রমশ পাহাড়পুরের দিকে এগিয়ে আসছে। চারপাশটা অনেক বদলে গেছে। এমনি বৃষ্টি ছিল সেদিন ভোরেও, যেদিন বিধ্বস্ত অবস্থায় তিন বছরের রাইকে নিয়ে বেরিয়ে এসেছিল নম্রতা। একরত্তি মেয়েটা কোল আঁকড়ে চুপ করে বসেছিল। এতটুকু কাঁদেনি। বরং যেন আগলে রেখেছিল নম্রতাকে। দেখতে দেখতে সতেরোটা বছর কেটে গেল।

এই তো দেবী চৌধুরানির মন্দির! যেদিন প্রথম টকটকে লাল সিঁদুর আর লাল বেনারসি পরে প্রথম পা রেখেছিল এই শহরটায়, সেদিনই এসেছিল এখানে প্রণাম করে নতুন জীবনের আশীর্বাদ নিতে। ভেজা ভেজা মায়া চোখে লেপটে যাওয়া কাজল আর একরাশ স্বপ্ন ছিল সেদিন। তারপর তো কত হেরে যাওয়া বিকেলে সে এসেছে!

সেই পাকুড় গাছটা! চার বছরে যতবার এদিকে এসেছে, ততবার খুঁজেছে গাছটাকে। রঙিন থেকে ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া জীবনের নীরব সাক্ষী তো এই গাছটাই!

বাসের হর্ন আর স্মৃতির মেদুরতায় কখন যে ব্যাগে মোবাইলটা বাজছে খেয়ালই করেনি নম্রতা। ফোনটা রিসিভ করে বলল, হ্যাঁ রে রাই এক্ষুনি ও বাড়ি পৌঁছোব। সন্ধের আগে ব্যাক করব কোচবিহারে দিদির কাছে। দিদান কে দে তো একটু...

—মা চিন্তা কোরো না যেটা আমার রাইয়ের প্রাপ্য সেটা আমি নেবই। কেউ বাধা দিতে পারবে না।

নেতাজি বাস টার্মিনাস থেকে কয়েক পা এগোলেই চৌমাথার মোড়টা। ডান পাশে সরু কানাগলিতে ঢুকতেই ওই তো দোতলা হলদে বাড়িটা। সামনের বেগনভেলিয়া গাছটা নেই বলে কেমন যেন ন্যাড়ান্যাড়া লাগছে। আশপাশের ছাদ থেকে দু-একটা উৎসুক, পরিচিত মুখ চোখে পড়ল নম্রতার। এই তো আর কপা এগোলেই বিশাল ফটক। কিন্তু পাগুলো কেন অসাড় হয়ে আসছে নম্রতার? অবশেষে সব দ্বিধা কাটিয়ে কলিংবেল বাজাতেই বেরিয়ে এল এ বাড়ির জামাই দেবেশ। কেস চলাকালীন দেখেছিল নম্রতা দুএকবার।

—আরে আসুন! একা কেন, রাই কোথায়?

—ওর ক্যাম্পাসিং আছে।

—তা বাপের ভিটে, ঠাকুমা এদের প্রতি অবশ্য আজকালকার ছেলেমেয়েদের তেমন সেন্টিমেন্ট নেই। কী বলে যে ডাকি! বউদিই বলি, কি বলেন? আপনি তো এখন কলকাতার ফ্ল্যাটে থাকেন। ইস্কুলটা কোথায়? আর পেপারে ফিচার টিচার তো লিখছেন খুব।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...