এবার হারান মণ্ডল প্রায় মেঝেতে শুয়ে প্রণাম জানাল অমিয়বাবুকে। বৈদ্যনাথবাবুও সসম্ভ্রমে আরও একবার হাতজোড় করে নমস্কার জানাল। অমিয় আর একটা সিগারেট জ্বালিয়ে ধোঁয়া ছাড়লেন।

—বাবা চেয়েছিলেন আমিও বাবা-ঠাকুরদার মতো প্রজাপালন আর তথাকথিত জমিদারির কাজকর্ম দেখে জীবনটা কাটিয়ে দিই। কিন্তু আমার লক্ষ্য ছিল অন্য। আমি চেয়েছিলাম বলরামপুরের গণ্ডি পেরিয়ে অনেক অনেক দূরের পৃথিবী দেখতে! নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে। সেই কুড়ি বছর বয়সে আমাকে পেয়ে বসেছিল বিশ্বজয়ের নেশা। এই নেশা আমাকে টেনে নিয়ে গেল অনেক অনেক দূরে। একটা স্কলারশিপ পেয়েছিলাম। এক লাফে আরব সাগর পেরিয়ে পৌঁছে গেলাম ইংল্যান্ড! সেই সময় আমাদের যুগের যুবকদের স্বপ্ন ছিল শিক্ষা-দীক্ষা আর উন্নতির শেষ সীমানা— ইংল্যান্ড-লন্ডন।

অমিয় থামলেন। অদ্ভুত একটা হাসিতে মুখ ছেয়ে গেল! বৈদ্যনাথবাবুর মনে হল— অমিয়বাবু বুঝি নিজেকেই ব্যঙ্গ করছেন। কিন্তু মুখ তুলে অমিয়বাবুর গল্প শোনার জন্য চেয়ে রইল। হারানও গাঙ্গুলিবাড়ির বড়ো কর্তার গল্প শুনছিল অবাক হয়ে। একবার শুধু রান্নাঘরে গিয়ে মাছের ঝোলটা নামিয়ে ভাত বসিয়ে এল।

রাতের হাওয়ার স্বরে আবার শুরু করলেন অমিয়নাথ — কুড়ি বছরের বিশ্বজয়ের নেশা আফিমের নেশার চেয়েও জোরালো। ওদেশে পৌঁছে মনে হয়েছিল আমার যোগ্য স্থানে পৌঁছে গেছি। ওই যে ইংরাজিতে বলে না 'আই হ্যাভ অ্যারাইভড', অনেকটা সেই রকম। আবার একবার সেই অদ্ভুত হাসিতে অনিন্দ্যসুন্দর মুখখানি ছেয়ে গেল।

অমিয়নাথ চেয়ার ছেড়ে জানলার দিকে এগিয়ে গেলেন। ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি হয়ে চলেছিল তখনও। মাঝে মাঝে দূরে নিঃশব্দ বিদ্যুৎ চমকের আলোয় ওর মুখটা কেমন যেন রহস্যময় দেখাচ্ছিল। মনে হল স্টেশনের কোয়ার্টারের জানালায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টিভেজা আকাশ পানে চেয়ে যেন নিজের পুরোনো দিনের স্মৃতির গবাক্ষ উন্মুক্ত করে নিজেকেই দেখছেন অমিয়।

ফিরে এল হারানের ডাকে— ‘মাস্টারবাবু, ভাত হয়ে গেছে, আসুন।' খাবার ডাকে সম্বিত ফিরে পেলেন বৈদ্যনাথবাবুও অনুভব করলেন চিনচিনে খিদে। 'আসুন, গরম গরম ভাত আর তাজা রুই মাছের ঝোল', বলে উঠে পড়লেন।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...