নেফা, অরুণাচল প্রদেশের আগের নাম। জায়গাটা কতটা সুন্দর, কতটা স্বপ্নিল, সেটা না গেলে বুঝতেই পারবেন না।
গুয়াহাটি পৌঁছে সেই রাতেই উঠে পড়ুন বাসে। গন্তব্য তেজপুর। রাতশেষে তেজপুর পৌঁছোবেন। এখানে নেমে একবার বাস পালটাতে হবে। এবার ধরবেন ভালুকপঙের বাস। আগে চা-জলখাবার খেয়ে নিন। তারপরই বাস ছুটবে ভালুকপঙের উদ্দেশে। বালিপাড়া ছাড়ানোর পরই, বাসের তীব্রগতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছুটবে দু’ধারের ঘন জঙ্গল। তেজপুর থেকে ৫৬ কিমি পথ। ঘণ্টা-দেড়েকের মধ্যেই পৌঁছোবেন ভালুকপঙ। এখানে রয়েছে দারুণ সুন্দর টুরিস্ট বাংলো। পাশেই ঢাল নেমেছে কামেংনদীর বুকে। ভালুকপঙ-ই অরুণাচলে ঢোকার প্রবেশপথ। সকালে ভালুকপঙ ঘুরে দেখুন।
দুপুরে খাওয়ার পর বাংলোর পাশের ঢাল বেয়ে নীচে নেমে যেতে পারেন নদীর তীরে। নদীর ওপারে ঘন জঙ্গল। অরুণাচলের জঙ্গল বিরাট ও বিচিত্র। প্রচুর পাখি ও বন্যপ্রাণী ঘুরে বেড়ায় এখানে। এখানে ভালো বেত চাষ হয়। বেতের তৈরি জিনিসপত্রের দোকানও পাবেন বেশ কিছু। দর করলে অন্য জায়গার তুলনায় সস্তাতেই পাবেন।
পশ্চিম কামেং ও তাওয়াং জেলা অরুণাচল প্রদেশের সবচেয়ে প্রচলিত রুট। ভালুকপঙ চেকপোস্ট রয়েছে অরুণাচল প্রদেশে প্রবেশের জন্য। চেকপোস্টের ঝামেলা কাটিয়ে আপনার বাস রওনা দেবে ১০০ কিমি দূরে বমডিলার উদ্দেশে। এখান থেকে টিপির অর্কিড রিসার্চ সেন্টার ৫ কিমি পথ। প্রায় ৩০০ প্রজাতির অর্কিড দেখবেন এখানে। এখান থেকে ২৪ কিমি পর পড়বে শেসা স্যাংচুয়ারি। শেসার প্রাকৃতিক দৃশ্য মনোরম ও উপভোগ্য।
এরপর ফের চলুন সবুজের বুক চিরে। ডানপাশে নিত্যসঙ্গী কামেংনদী। টেঙ্গা, রূপা পেরিয়ে বেশ ঘন রাতে পৌঁছোবেন বমডিলায়। ৮৫০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত বমডিলা, পশ্চিম কামেং জেলার সদর। সকালে সূর্যোদয়ের পর দেখবেন পাহাড়ের ঢালে সাজানো অতি সুন্দর ও মনোরম এই বমডিলা শহরটিকে। এবার ঝটপট দেখে নিন আপার মনাস্ট্রি। তারপর বাসে চেপে বসুন।
যাওয়া যাক ১৮৩ কিমি দূরে তাওয়াং-এর দিকে। পথে পড়বে তুষারশৃঙ্গ কাটোং ও গোরিচেন। যতক্ষণ দেখা যাবে এদুটি, ততক্ষণ আর কোনওদিকে চোখ ফেরাতে পারবেন না আপনি। বমডিলা থেকে অনেকটা নেমে ৪২ কিমি দূরে দিরাং। ৫০০০ ফুট উঁচুতে থাকা পাহাড়ি শহর, পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে দিরাংনদী। এখানে সাড়ম্বরে বুদ্ধ মহোৎসবও পালিত হয়।