বেঙ্গালুরু থেকে খুব দূরে নয়। তাই চড়ে বসেছি গোলগাম্বাজ এক্সপ্রেসে। ১৫ ঘন্টার সফরের পর পৌঁছে গেলাম বিজাপুর। ইতিহাস মাখা শহরের সর্বত্র দেখার মতো একাধিক রাজকীয় সৌধ। এ যেন ইতিহাসের হাত ধরে পথ হাঁটা।
বিজাপুর বা বিজয়পুর একসময় ছিল চালুক্যদের দখলে। পরে তা রাষ্ট্রকূট, হয়সল ও যাদবদের অধীনে যায়। পরবর্তী সময়ে মোঘলরা তাদের আধিপত্য বিস্তার করে। যুগের পরিবর্তনে নানা সৌধ তৈরি হয়েছে বিজাপুরে। সেই দেখতেই আসা।
প্রথমেই বেরিয়ে পড়ি গোলগাম্বাজ দেখতে। আদিল শাহ’র সমাধিক্ষেত্র হিসাবে পরিচিত এই সৌধ। একটি মিউজিয়াম ও সৌধটি দেখার জন্য গেটে টিকিট কেটে ঢুকে পড়া গেল। এই বিশাল টুম্বটির গোলাকার ছাদে পদ্মের বিন্যাস। চারপাশে সাতমহলা মিনার। উপরের গোলাকার ছাদ থেকে গোটা বিজাপুর শহর পাখির চোখে দেখা যায়।
পরের গন্তব্য ইব্রাহিম রৌজা। অনেকটা তাজমহলের আদলে তৈরি জোড়া সৌধ, মধ্যে ফোয়ারা। দেয়ালজোড়া পারসি লিপি। সেই পরিচিত পদ্মের কারুকাজ ও মিনার ঘেরা স্থাপত্যশৈলী।
দেখার জিনিস আরও আছে বিজাপুরে। তার মধ্যে উপলি বুর্জ একটি ৮০ ফিট উচ্চতার টাওয়ার ১৫৮৪-তে নির্মিত, ৭০টি সিঁড়ি ভেঙে উপরে ওঠা যায়। এর অদূরেই ঐতিহাসিক কামান মালিক-এ-ময়দান। ১৪.৬ ফিট লম্বা, ৪.৯ ফিট চওড়া এবং ৫৫ টন ওজন এটির।
বড়া কামান নামের একটি হলও আছে ৭টি আর্চ যুক্ত যেখানে আলিরেজা ও তাঁর পরিবারের ১১ জন স্ত্রীলোক কবরে শায়িত। দেখলাম জুমা মসজিদ। টাঙায় চড়ে চললাম দেখতে। আদিল শাহ বিজয় নগর অধিকার করার পর নির্মিত। কিন্তু আদিল শাহ হাম্পির বহু ক্ষয়ক্ষতি করেছিলেন যেটি সমর্থনযোগ্য নয়। জুমা মসজিদের স্বর্ণালি চূড়া এখনও তাঁর বীরকীর্তির সাক্ষ্য বহন করে। এরপর গেলাম জোড়া গম্বুজ দেখতে। এটি এখন দরগায় রূপান্তরিত। নবাবি বিরিয়ানি দিয়ে দ্বিপ্রাহরিক আহার সেরে ফিরে আসি হোটেলে। পরদিন আমাদের বাদামি যাওয়ার প্রস্তুতি।